BRAKING NEWS

ভিলেন বিদ্যুৎ, জি বি হাসপাতালে রণক্ষেত্র, রোগীর স্বজন-চিকিৎসক হাতাহাতি, মামলা পাল্টা মামলা ঘিরে উত্তেজনা

AGMCনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৯ মে৷৷ রাজ্যের প্রধান ও গর্বের জিবি হাসপাতালে বিদ্যুৎ বিভ্রাটকে কেন্দ্র করে সোমবার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে৷ অগ্ণিদগ্দ এক কিশোরীকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে চিকিৎসা শুরু করা যায়নি৷ তাতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে৷ কর্তব্যরত চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলতে গেলে রোগীর পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে অভব্য আচরণ এমনকি শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ৷ এনিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে রোগীর পরিবারের লোকজনদের বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে৷ এব্যাপারে দুটি পৃথক মামলাও দায়ের করা হয়েছে৷ উভয় ক্ষেত্রে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷ তবে কোন পক্ষেই কাউকে গ্রেপ্তারের সংবাদ নেই৷ পরবর্তী সময়ে আলোচনাক্রমে বিষয়টির মীমাংসা হয়ে গেছে বলেও জানা গেছে৷ এদিক, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঐ কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে৷ জানা গেছে, অগ্ণিদগ্দ হয়ে কিশোরীর শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল৷
[vsw id=”gJudKyJ–nE” source=”youtube” width=”425″ height=”344″ autoplay=”yes”]রাজ্যের প্রধান হাসপাতাল জিবিতে সোমবার সকাল থেকেই বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দেয়৷ একটানা তিনঘন্টা জিবি হাসপাতাল অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে৷ এর ফলে হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে৷ বিদ্যুৎ না থাকায় হাসপাতালে জলসংকটও তীব্র আকার ধারণ করে৷ জরুরি পরিষেবা, অপারেশন ইত্যাদি স্তব্ধ হয়ে পড়ে৷ এনিয়ে রোগী ও আত্মীয়পরিজনদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়৷ একটানা তিন ঘন্টা জিবি হাসপাতাল অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে থাকলেও কর্তৃপক্ষের তেমন কোন হেলদোল ছিল না৷ রোগী ও তাদের পরিবারের লোকজনরা চরম দুর্ভোগের সামিল হন৷ তাতে ভ্রূক্ষেপ ছিল না স্বাস্থ্যদপ্তরের কোন কর্মকর্তাদের৷ স্বাভাবিক কারণেই রোগী ও আত্মীয় পরিজনদের মধ্যে ক্ষোভ চরম আকার ধারণ করতে থাকে৷ বিভিন্ন ওয়ার্ডে শুরু হয় ক্ষোভ বিক্ষোভ৷ এরই মধ্যে অগ্ণিদগ্দ এক কিশোরীকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে চিকিৎসা নূ্যনতম ব্যবস্থা করতে না পারায় পরিস্থিতি আরো অগ্ণিগর্ভ হয়ে ওঠে৷ আগুনে ঘৃতাহুতির অবস্থা দেখা দেয়৷ অগ্ণিদগ্দ কিশোরীটির চিকিৎসার জন্য কর্তৃপক্ষ কোন উদ্যোগ নেননি বলে অভিযোগ৷ তাতেই প্রতিবাদ মুখর হয়ে ওঠেন সংশ্লিষ্ট পরিবারের লোকজনরা৷ ওয়ার্ডের চিকিৎসক নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীদের সঙ্গে রোগীরপরিবারের লোকজনদের মধ্যে বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা শুরু হয়৷ পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পুলিশ তলব করা হয়৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও টিএসআর বাহিনী ছুটে আসে৷ তাতে আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলেও ক্ষোভ পুরোপুরি সামাল দেওয়া সম্ভব হয়নি৷
উল্লেখ্য, রাজ্যের গর্বের হাসপাতাল হিসেবে চিহ্ণিত জিবি হাসপাতাল৷ এই হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসে রোগী ও তাদের পরিবারের লোকজনরা প্রায়ই লাঞ্চনার শিকার হন৷ হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে একের পর এক অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে৷ ভুল চিকিৎসা ও বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগও রয়েছে৷ হাসপাতালের পরিষেবার মান উন্নয়নের বদলে মান ক্রমশ নিম্নমুখী হচ্ছে৷ রাজ্য সরকার রাজ্যের প্রধান হাসপাতাল জিবিতে চিকিৎসা পরিকাঠামো উন্নয়নের চেষ্টা করলেও একাংশের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের খামখেয়ালিপনায় রোগীরা অনেক ক্ষেত্রেই সঠিক চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন না৷ হাসপাতালের বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে রোগী ও তাদের আত্মীয় পরিজনরা সোচ্চার হলে তাদের রক্তচক্ষুর সম্মুখীন হতে হয়৷ এমনকি অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে হয়রানি করা হয় বলে অভিযোগ৷ রাজ্যের প্রধান হাসপাতালের এহেন পরিষেবা ঘিরে ক্ষোভে ফঁুসছেন রাজ্যবাসী৷ সম্প্রতি জিবি হাসপাতালে রোগ নির্ণয়ের জন্য সিটি স্ক্যান বসানো হয়েছে৷ আরো বেশকিছু উন্নত যন্ত্রপাতি স্থাপনের জন্য রাজ্য সরকার আন্তরিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে৷ কিন্তু এসব উন্নত যন্ত্রপাতি ব্যবহার ও সঠিক পরিষেবা দেওয়ার সঠিক মানসিকতা চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ানদের মধ্যে রয়েছে কিনা সে প্রশ্ণও মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করেছে৷ জিবি হাসপাতালের হাল ফেরাতে স্বাস্থ্য দপ্তর এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে আরো কঠোর মনোভাব গ্রহণ না করলে রাজ্যের প্রধান হাসপাতাল জিবির স্বাস্থ্য পরিষেবা যে আরো ভেঙ্গে পড়বে তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ রাজ্য ও রাজ্যবাসীর স্বার্থেই এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোরালো দাবি উঠেছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *