BRAKING NEWS

রেল ও সড়ক যোগাযোগ সম্প্রসারণে রেলমন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রীকে চিঠি রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রীর

MANIK DEY TRIPURAনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৭ মে৷৷ রাজ্য রেলমানচিত্রে স্থান পাওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা৷ শনিবার থেকে প্রতিদিন চলতে শুরু করেছে আগরতলা-শিলচর রুটে যাত্রী রেল৷ এদিন, আগরতলা এবং শিলচর থেকে প্রচুর যাত্রী রেলে করে যাতায়াত করেছেন৷ রেল চলাচল আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ার পর এই রেলকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সাথে যোগাযোগ সম্প্রসারণে রেলমন্ত্রী এবং বিদেশমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী মানিক দে৷ পাশাপাশি ভুটান, বাংলাদেশ, নেপাল ও ভারতের মধ্যে প্রস্তাবিত রেল ও সড়ক যোগাযোগ সম্প্রসারণের বিষয়টিও চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন৷
পরিবহনমন্ত্রী রেলমন্ত্রী এবং বিদেশ মন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে বলেছেন, ২০১২-১৩ সালে আগরতলা-আখাউড়া ১৫ কিমি রেল সংযোগ প্রকল্পটি অনুমোদন লাভ করে৷ ২০১৩ সালের ১৬ই ফ্রেব্রুয়ারী ভারত সরকার এবং বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে একটি মউ স্বাক্ষরিত হয়, যার মাধ্যমে ভারতীয় রেলের সাথে বাংলাদেশ রেল মানচিত্রের সংযোগ স্থাপন বিশেষ করে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশ সমূহের মধ্যে ত্রিপুরা-সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির রেল সংযোগ স্থাপন সম্ভব হবে৷ এরমধ্য দিয়ে আশুগঞ্জ ও চট্টগ্রাম বন্দরকে ব্যবহার করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে ব্যবসা-বানিজ্য সম্প্রসারণে পণ্য সামগ্রী নেওয়া-আনা সহজ হবে৷ এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে আগরতলা রেল স্টেশন থেকে বাংলাদেশের গঙ্গাসাগর ও আখাউড়া স্টেশন পর্যন্ত রেল সংযোগ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে একটি বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে৷ এক্ষেত্রে আখাউড়া ও আগরতলার মধ্যে ১৫ কিমি রেলপথ নির্মাণ করতে হবে যারমধ্যে ভারতের দিকে ৫ কিমি এবং বাংলাদেশের ভেতর ১০কিমি রয়েছে৷ এই প্রকল্পের অনুমোদিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৬৭কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা৷ এরমধ্যে ভারতীয় অংশের অনুমোদিত ব্যয় ৫৮০কোটি টাকা৷ ভারতীয় অংশের ৬৬৯২৭ একর জমি অধিগ্রহন করতে প্রকল্পের মোট ব্যয় ৫৮০ কোটি টাকার মধ্যে ৯৭ কোটি ৬৩ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার প্রয়োজন৷ প্রয়োজনীয় এই অর্থের ৫০ শতাংশ অর্থাৎ ৪৮ কোটি ৮১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা রাজ্য সরকারকে বহন করার জন্য ডোনার মন্ত্রকের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়৷ আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে এই ব্যয় রাজ্য সরকারের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয় বলে গত ২৩ শে ফ্রেব্রুয়ারী, ২০১৬ ডোনার মন্ত্রকের সচিবকে জানিয়ে দেওয়া হয় এবং আন্তর্জাতিক কৌশলগত এই প্রকল্পের গুরুত্ব অনুধাবন করে ভারতীয় অংশের জমি অধিগ্রহন-সহ প্রকল্পের ১০০ শতাংশ অর্থ প্রদানের জন্য ডোনার মন্ত্রককে পুনরায় অনুরোধ জানানো হয়৷
তিনি বলেন, বাংলাদেশের আখাউড়া ও চিটাগাং-এর মধ্যে মিটারগেজ রেল লাইন রয়েছে৷ এই মিটার গেজ লাইনে ফেনী নামে একডিট স্টেশন রয়েছে৷ আগরতলা-সাব্রুম নির্মীয়মাণ ব্রডগেজ রেল লাইনের বিলোনীয়া স্টেশনকে বাংলাদেশের ফেনী স্টেশনের সাথে সংযোগ স্থাপনে সমীক্ষা মূলে অনুমোদন পাওয়া গেছে বলে জানা যায়৷ ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত মউ অনুযায়ী এ কাজের যথাযথ বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত হবে বলে আশা করা যায়৷
তিনি আরো বলেন, ট্রান্স এশিয়ান দেশসমূহের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনে ত্রিপুরার জওহরনগর থেকে মিজোরামের ডারলন (১০৯ কিমি) হয়ে মায়ানমার (১৪৮ কিমি) এর কলয় অর্থাৎ জওহরনগর থেকে মায়ানমার এর কলয় পর্যন্ত সর্বমোট ২৫৭ কিমি রেল সংযোগ স্থাপনের জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে৷ উল্লেখ্য, মায়ানমার-এর কলয় থেকে থাইল্যান্ড এবং মালেশিয়া হয়ে সিঙ্গাপুর পর্যন্ত রেল যোগাযোগ রয়েছে, তবে থাইল্যান্ড-এর দাওয়েই এবং নামটক-এর মধ্যে ৯৫ কিমি রেল সংযোগের অস্তিত্ব বর্তমানে নেই৷ এই বিষয়টির দিকে লক্ষ্য রেখে মায়ানমার, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, মালেশিয়া এবং সিঙ্গপুরের সাথে ত্রিপুরা-সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির রেল সংযোগ স্থাপনে ভারত সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবে বলে আশা করা যায়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *