নিজস্ব প্রতিনিধি, খোয়াই, ১ মার্চ৷৷ ইদানিংকালে খোয়াইয়ে পথের বলি হয়েছে বেশ কিছু নিষ্পাপ প্রাণ৷ খোয়াই শহরে ট্রাফিক ব্যবস্থা দেখে মনে হয় যেন ছেলেখেলা চলছে৷ খোয়াই শহর আর আগের মত নেই৷ শহরের বুক চিরে বর্তমানে কমলপুর, আমবাসা, ধর্মনগর, কৈলাসহর সহ নানানস্থানে যাতায়াত করছেন জনসাধারণ৷ কিন্তু কিছু সংখ্যক জনগণ ট্রাফিক ব্যবস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখাতে ব্যস্ত৷ ট্রাফিক নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করাই যেন বীর পুরুষের কাজ বলে মনে করছেন উনারা৷ ক্ষমতা প্রদর্শনের মঞ্চ হিসাবে ব্যস্ততম সড়ককেই বেছে নিচ্ছে তারা৷
যেমন দেখা যাচ্ছে অনেক বাইক এর নাম্বার প্লেইট নেই৷ বৈধ কাগজদপত্র নেই৷ অটো বা ছোট বড় অনেক গাড়ির ফিটনেস বা প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্রও নেই৷ সবচাইতে বড় সমস্যা হচ্ছে নিজেদের মর্জিমাফিক ছোট বড় কিংবা টুহুইলার বা ফোর হুইলার বাইক বা গাড়ি ইত্যাদি যানবাহন পার্কিং করার প্রবণতা৷ রাস্তার যে কোনো স্তানে ঠাঁই দাঁড়িয়ে পড়া৷ কেউ কিছু বললে ঐ যে ক্ষমতার প্রদর্শন করা, বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হওয়া ইত্যাদি তো চলছেই৷ বিশেষ করে জনবহুল স্থানগুলোতে বাইক বা গাড়িগুলি এমনভাবে পার্কিং করা হচ্ছে যার ফলে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে৷ অথচ যাদের হাতে ক্ষমতা মানে ট্রাফিক পুলিশকে ঐসব ক্ষমতাবান, গুণধর সচেতন মানুষগুলোর রক্তচক্ষুর কাছে মাথা নত করতে হচ্ছে৷
অথচ এই ট্রাফিক ব্যবস্থা জনসাধারণের জন্যই৷ প্রতিদিন কত মায়ের বুক খালি হচ্ছে৷ কত পরিবার তাদের একমাত্র অবলম্বন হারিয়ে বসছে৷ পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি চাকার নীচে পিষে যাচ্ছে৷ কেউ কেউ আবার সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে পড়ছেন৷ এর জন্য দায়ী কারা? যখনই প্রশ্ণ উঠে তখনই বিতর্কের ঢেউ আছড়ে পড়ে৷ কারণ সবাই নিজেদের দায় দায়িত্বটা আড়াল করে অন্যের উপর দায় চাপাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন৷ অন্তত খোয়াই শহরের কথা যদি ধরা যায়, দিনের পর দিন যান দুর্ঘটনা বৃদ্ধি এবং যানজটের সৃষ্টির পেছনে ঐসব ব্যতিক্রমী কিছু অসচেতন মানুষ যতটা দায়ী, খোয়াই পূর্ত দপ্তর কিন্তু ততটাই দায়ী৷ খোয়াই শহরের রাস্তায় নেই ফুটপাত৷ যাও কিছু আছে তা জবরদখলে চলে গেছে৷ পূর্ত দপ্তর এবং পুর পরিষদ যদি স্বউদ্যোগে এগিয়ে আসে এবং ফুটপাত দখলমুক্ত করে তবে কিছুটা সুরাহা সম্ভব বলেই মনে করছেন খোয়াইবাসী৷
তবে বর্তমান সময়ে ট্রাফিক দপ্তর কিছুটা উদ্যোগী হয়েছে৷ কিন্তু ট্রাফিক দপ্তরের এই উদ্যোগকে অবৈজ্ঞানিক বলছেন জনসাধারণ৷ কিছু নো পার্কিং জোন লেখা সাইন বোর্ড রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে৷ ট্রাফিক আইন না মানা বেশ কিছু উদ্ভুট লোক তাও মানতে নারাজ৷ বরং এই বোর্ডগুলিকে গাড়ি বা বাইক দিয়ে ঢেকে রেখে দিচেছ৷ যা দেখে পথ চলতি মানুষ হাসাহাসি করেন৷ এভাবে দিনের পর দিন কিছু অসচেতন মানুষ ট্রাফিক আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখাবে অথচ পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কিছুই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না, এমনটা আর কতদিন চলবে? ট্রাফিক ব্যবস্থা জনগণের জন্য৷ সুতরাং হাতেগুণা কয়েকজনের জন্য খোয়াইবাসীর প্রাণ সংকটে রাখাটা যুক্তিযুক্ত কিনা, প্রশ্ণ জনগণের৷
2016-03-02