শয্যাশায়ী বৃদ্ধকে হত্যার পর লাশ মাটিচাপা, চাঞ্চল্য

muder photoনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৫ ফেব্রুয়ারি৷৷ সামাজিক অবক্ষয়ের আরো এক বড়ো নজির গড়ল রাজধানী আগরতলা শহর সংলগ্ণ শালবাগানের হাতিপাড়া এলাকা৷ ৭৫ বছর বয়সী শয্যাশায়ী বৃদ্ধকে হত্যা করে মৃতদেহটি বাড়ির পাশেই মাটিতে পঁুতে ফেলার চেষ্টা করা হয়৷ প্রাথমিকভাবে এই ঘটনার জন্য বৃদ্ধের সহধর্মিনী দায়ী বলে আশঙ্কা করা হলেও এর নেপথ্যে ছেলেমেয়ে ও সমাজব্যবস্থাও অনেকাংশেই দায়ী৷ অসহায় হয়েই স্বামীর অন্তিম কষ্ট হয়ত সহ্য করতে না পেরেই এই ঘটনাসংগঠিত করেছেন মহিলা৷ এয়ারপোর্ট থানা এলাকার শালবাগানের হাতিপাড়া এলাকায় সোমবার এক বৃদ্ধকে লোক চোখের আড়ালে মাটি চাপা দেবার চেষ্টা করেন এক মহিলা৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে৷ পুলিশ বৃদ্ধের মৃতদেহটি গর্ত থেকে উদ্ধার করেছে৷ মৃতের স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ৷ দুই ছেলে দুই মেয়ে থাকা সত্ত্বেও কেউই ভরণপোষণের দায়িত্ব নেয়নি বৃদ্ধ পিতা-মাতার৷ অভাব অনটনের সংসারে এই হত্যাকান্ডের পেছনে ছেলেমেয়েরাও দায়ী থাকতে পারে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা৷ রাজধানী আগরতলা শহর সংলগ্ণ এয়ারপোর্ট থানা এলাকার শালবাগানের হাতিপাড়ায় ৭৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধকে তার স্ত্রী হত্যা করে মৃতদেহটি কাউকে না জানিয়ে বাড়ির পাশে একটি পুরোনো গর্তে মাটি চাপা দেবার চেষ্টা করেন৷ নিহত বৃদ্ধের নাম বনবিহারী দেবনাথ৷ অভিযুক্ত স্ত্রীর নাম কৃষ্ণমালা দেবনাথ৷ জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন ওই বৃদ্ধ৷ তাদের দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে৷ তাদের বিয়ে হ য়ে গেছে৷ ছেলে মেয়ে কেউই বৃদ্ধ পিতা মাতার আর্থিক সামর্থও নেই৷ রোগ ব্যাধিতে ভুগছেন দীর্ঘদিন ধরেই৷ তাতে স্ত্রী কৃষ্ণমালা দেবনাথও তিতিবিরক্ত৷ স্বামীর কষ্ট তিনিও সহ্য করতে পারছিলেন না৷ অন্যান্য দিনের মতো আজও তিনি রান্নাবান্না করছিলেন৷ বেলা ১১টা নাগাদ হঠাৎই শিশুরা যখন খেলছিল তখন তাদের নজরে আসে বৃদ্ধ বনবিহারী দেবনাথকে তার স্ত্রী বাড়ির পাশের একটি পুরানো গর্তে মাটি চাপা দিচ্ছেন৷ শিশুরা এগিয়ে আসলে বৃদ্ধা কৃষ্ণমালা দেবনাথ ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদেরকে তাড়া করেন৷ শিশুরা ছুটে গিয়ে বিষয়টি তাদের মা বাবাকে জানান৷ তখনই তারা ছুটে আসেন৷ তারা বৃদ্ধাকে আটক করে এয়ারপোর্ট থানার পুলিশকে খবর দেন৷ প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী এক শিশু জানায় তারা যখন খেলতে গিয়েছিল তখনই দা নিয়ে তাদেরকে তাড়িয়ে দিয়েছে৷ বুড়োকে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছিল৷ সেখান থেকে টেনে হেছড়ে নিয়ে যাচ্ছিল৷
এসডিপিও রাজেন্দ্র দত্ত সহ পদস্থ আধিকারিকরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন৷ এসডিপিও জানান, তিনি প্রথম খবর পেয়েছিলেন বৃদ্ধাকে তার স্ত্রী জীবিত কবর দিয়েছেন৷ ঘটনাস্থলে এসে লক্ষ্য করেন মৃতদেহ কুয়োতে পড়ে আছে৷ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে গেছে পুলিশ৷ এটি হত্যাকান্ড নাকি বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে তা ময়না তদন্তের পরই জানা যাবে বলে জানান এসডিপিও৷পুলিশ মৃতের স্ত্রী কৃষ্ণমালা দেবনাথকে আটক করেছে৷ ঘটনারতদন্ত অব্যাহত রয়েছে৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে৷ প্রশ্ণউঠেছে কেন বৃদ্ধা তার স্বামীকে হত্যা করবেন৷ এর জন্য সমাজব্যবস্থা কি দায়ী নয়৷ যে ছেলেমেয়েকে জীবন যৌবন উজার করে বড় করে তুলেছেন তারা ভরণপোষণের নূ্যনতম দায়িত্বটুকুও নেয়নি৷ এই ঘটনার জন্য ছেলে মেয়েরা কি কোনভাবেই দায়ী নয়৷ ন্যায় বিচার হলে নিশ্চয়ই এর আসল রহস্য উদঘাটিত হবে এবং সমাজব্যবস্থাও সচেতন হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *