BRAKING NEWS

এইবার কেন্দ্রের অভিযোগ

Government of Indiaঅভিযোগ গুরুতর৷ কেন্দ্রীয় মাইক্রো ও স্মল মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজের রাষ্ট্রমন্ত্রী গিরিরাজ সিং-এর রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ সম্পর্কে রাজ্য সরকারের বক্তব্য জানা যায় নাই৷ কেন্দ্রের রাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোগ করিয়াছেন যে, কেন্দ্রের তরফে রাজ্যের চার জেলায় কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র খোলার প্রস্তাব দেওয়া হইয়াছিল৷ দীর্ঘদিন পরও রাজ্য সরকারের জবাব মিলেনি৷ রাজ্যে একটি কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র হইলে কৃষিক্ষেত্র ও কৃষি নির্ভর শিল্পের লাভ হইত বলিয়া কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী মন্তব্য করিয়াছেন৷ তাঁহার বক্তব্য মোতাবেক যদি অভিযোগ সত্যি হয়, তাহা হইলে ইহা যে গুরুতর অভিযোগ সে বিষয়ে সন্দেহ নাই৷ কেন্দ্রের মন্ত্রীরা যে রাজ্যে আসিয়া বাম সরকারের পিঠই শুধু চাপড়াইয়া যান না তাহা বুঝাইয়া দিয়াছেন মন্ত্রী গিরিরাজ৷ গত প্রায় এক মাসে পাঁচজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজ্য সফর করিয়া গেলেন৷ এই সফরের তাৎপর্য্য যে অনেক বেশি তাহাও রাজ্যবাসী কিছুটা হইলেও ঠাহর করিতেছেন৷ রাজ্যে কৃষি ও শিল্পে নিদারুণ ব্যর্থতার চিত্র তো রাজ্যবাসীই অবলোকন করিতেছেন৷ রাজ্যে আসিয়া গিরিরাজকেই মধু সংরক্ষণ কেন্দ্র ও আধুনিক ছাপাখানা পরিদর্শন করিতে হয়৷ রাজ্যের শিল্পের দৈন্যদশা ছাড়া কি বলা যাইবে? অথচ ঘটা করিয়া প্রতি বছর রাজ্য সরকার শিল্প ও বাণিজ্য মেলার আয়োজন করে৷
প্রশ্ণ উঠিয়াছে, কেন্দ্রের রাষ্ট্রমন্ত্রী গিরিরাজ যে অভিযোগ তুলিয়াছেন তাহা তো গুরুতর৷ কেন্দ্র সরকার রাজ্যকে সাহায্য করিতে চায় অথচ রাজ্য সরকার তাহাতে কোনও সাড়া দিতে চান না ইহা কেমন কথা৷ রাজ্য সরকার তো প্রতিনিয়ত অভিযোগ তুলিতেছেন কেন্দ্র রাজ্যকে বঞ্চিত করিয়া চলিয়াছে৷ এইসব অভিযোগের মোক্ষম জবাব দিয়াছেন গিরিরাজ৷ একথা ঠিক, এক দেড় দশক আগেও কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে বাম সরকার যেভাবে বঞ্চনার অভিযোগ তুলিত সাম্প্রতিককালে সেই অবস্থা নাই৷ সেই কংগ্রেস আমলে কেন্দ্রের মুণ্ডুপাত না করিয়া জলস্পর্শ করিতেন না বাম নেতারা৷ কেন্দ্রে কট্টর বাম বিরোধী সরকার প্রতিষ্ঠিত হইলেও কেন্দ্র বিরোধী জিগির সেই আগের মতো নাই৷ এই ঘটনায় সম্ভবত ইহাই প্রতীয়মান হইতে পারে কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে তেমন বঞ্চিত করিতেছে না৷ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে দেদার টাকা আসিতেছে৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের ঘন ঘন রাজ্য সফর রাজ্য সরকারের শির পীড়ার কারণ হইতে পারে৷ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে ত্রিপুরায় উন্নয়নের ধারাকে খাটো করিয়া দেখিবার সুযোগ নাই৷ সব চাইতে বড় কথা দুর্নীতির গ্রাসে কতখানি আক্রান্ত হইয়াছে৷ ত্রিপুরায়ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ আছে৷ তবে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় পরিস্থিতি যে অনেক বেশি ভাল তাহা সরকারি পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট হইবে৷
কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী গিরিরাজ সিং তাঁহার দল বিজেপি’র সদর কার্য্যালয়ে বসিয়া সরকার পরিবর্তনের পক্ষে সওয়াল করিয়াছেন৷ ত্রিপুরায় তাঁহার দল তো এখন সেই হাটি হাটি পা পা অবস্থা৷ সংগঠন বিস্তারে রাজ্যে যে শক্তিশালী নেতৃত্বের প্রয়োজন তাহারাই চূড়ান্ত অভাব রহিয়াছে৷ সিপিএম বা বামেদের সঙ্গে নির্বাচনের ময়দানে জায়গা অর্জন করা যে কত কঠিন তাহা বুঝিবার শক্তি কয় জনের আছে? এ রাজ্যে কংগ্রেস তো জীবন্মৃত৷ জনমনে বিজেপি সম্পর্কে যে মোহ ছিল তাহা তো ইতিমধ্যে ভাঙ্গিয়া খান খান হইয়াছে৷ কংগ্রেসের বর্জিত পচা মালই তো টানিয়া নিয়াছে বিজেপি৷ যাহাদের জনগ্রাহ্যতা নাই৷ নির্বাচনে তাহারা হারু প্রার্থী হইয়া এখন বিজেপি’র পতাকা তলে পাইবার নেশায় আশ্রিত হইয়াছেন৷ একজন জনপ্রিয় নেতার সন্ধান কি মিলিবে রাজ্য বিজেপিতে? চাপাইয়া দেওয়ার রাজনীতি কংগ্রেসকে যেমন ডুবাইয়াছে তেমনি বিজেপিও যে সেই পথের অনুসারী তাহা তো আর বলিবার অপেক্ষা রাখে না৷ ইহাই কঠিন সত্যি যে, ত্রিপুরার বামফ্রন্টকে হঠাইতে হইলে সমস্ত বিরোধী ভোট একজোট করিতে হইবে এবং স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রার্থী দাঁড় করাইতে হইবে৷ কিন্তু তাহা কি সম্ভব? সাত মণ ঘিও মিলিবে না আর রাধার নাচন হইবে না৷ সুতরাং ত্রিপুরায় বামেদের হঠাইবার ডাক বা স্বপ্ণ স্বপ্ণই থাকিয়া যাইবে৷ তবুও কেন্দ্রের মন্ত্রীদের ঘন ঘন রাজ্য সফর ও হুঙ্কার রাজ্যের পক্ষে মঙ্গলদায়কই৷ রাজ্য সরকারের ভুল ত্রুটি ধরাইয়া দেওয়াও বিরাট দায়িত্ব৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ এজন্য রাজ্যবাসীর ধন্যবাদ কুড়াইবেন৷ সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নাই৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *