নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১২ জানুয়ারি৷৷ পারিবারিক ও সামাজিক অনুশাসন ওরা মেনে নিতে পারেনি৷ ভালোবাসার পবিত্র বন্ধনকে অমর রাখতে অপমানে অভিমানে শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার পথই বেছে নিল প্রেমিক যুগল৷ ঘটনা গোমতী জেলার কাকড়াবন থানা এলাকার ধূপতলি রিয়াং পাড়ায়৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে৷ ভালোবাসার সম্পর্ক পরিবার ও সমাজ মেনে না নেওয়াতে ফাঁসিতে আত্মহত্যা করল যুবক ও যুবতি৷ দুজনই একই সাথে আত্মহত্যা করে৷ ঘটনাটি ঘটে কাকড়াবন থানাধীন ধূপতলির নতুন রিয়াং পাড়ায়৷ মৃত যুগলের নাম পূর্ণজয় রিয়াং (১৮) ও শাশন্তী রিয়াং(১৮)৷ উভয়ের বাড়ি নতুন রিয়াং পাড়ায়৷ মঙ্গলবার তাদের বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরত্বের একটি শালবাগানের ভিতর ছোট একটি কাকড়াগাছে দুজনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়৷ গোটা ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে ধূপতলি এলাকায়৷
কাকড়াবন থানা সূত্রে খবর, শাশন্তী সম্পর্কে পূর্ণজয়ের পিসি৷ তাদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল৷ পূর্ণজয় ব্যাঙ্গালোরে যায় কাজের সন্ধানে৷ তিনমাস আগে সে পুনরায় ফিরে আসে৷ ইতিমধ্যে তাদের সম্পর্কের কথা জানে তাদের পরিবার৷ এনিয়ে উভয়কেই পরিবারের তরফে শাসন করা হয়৷ গত শনিবার থেকে পূর্ণজয় ও শাশন্তি নিখোঁজ ছিল৷ মঙ্গলবার সকালে শালবাগান পার্শ্ববর্তী এক রাবার বাগানে কিছু লোক রাবারের কষ সংগ্রহ করতে যায়৷ তাদের মধ্যে স্বপন দাস নামে এক ব্যক্তি ঝুলন্ত অবস্থায় তাদের দেখতে পায়৷ খবর যায় তুলামুড়া পুলিশ ফাঁড়ি ও কাকড়াবন থানায়৷ ঘটনাস্থলে যান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তপন দেববর্মা, মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রতন দাস, কাকড়াবন থানার ওসি যতীন্দ্র দাস সহ পুলিশের কর্মকর্তা ও চিকিৎসক৷ মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে আসা হয় কাকড়াবন প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে৷ ময়না তদন্ত শেষে মৃতদেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে৷ কাকড়াবন থানার পুলিশ ১৭৪ ধারায় একটি মামলা গ্রহণ করেছে৷
শালবাগানস্থিত বিএসএফের ১৯৫ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের প্রধান কার্যালয় থেকে এক মহিলা কনস্টেবলের ঝুলন্ত মৃতদেহ মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ উদ্ধার করা হয়েছে৷ ঐ মহিলা কনস্টেবলের নাম বাতাসি মাইতি৷ প্রধান কার্যালয় আবাসনে তার ঝুলন্ত মৃতদেহ মিলেছে৷ মৃতদেহ উদ্ধারের সংবাদে রীতিমত তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে৷ এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ শালবাগানস্থিত বিএসএফের ১৯৫ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের প্রধান কার্যালয় চত্বরের আবাস থেকে মহিলা কনস্টেবলের ঝুলন্ত মৃতদেহটি উদ্ধার করেছে৷ প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা সংক্রান্ত একটি মামলা গ্রহণ করেছে এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ৷ তবে এর পিছনে অন্য কোন রহস্য আত্মগোপন করে রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷
এদিকে, চন্দ্রপুরের মণিপুরী বস্তি সংলগ্ণ এলাকায় মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ পরিবাহী লাইনের তারে স্পৃষ্ঠ হয়ে একাদশ শ্রেণীর ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে৷ মৃতের নাম সুরজিৎ দেবনাথ৷ বাবার নাম সুরেশ দেবনাথ৷ বাড়ি চন্দ্রপুরের জামতলী এলাকায়৷ জানা যায়, সুরজিৎ তার বন্ধুর বাড়িতে সুকলের নোট আনতে গিয়েছিল৷ তাদের বাড়ির দ্বিতলের ছাদে উঠে সুরজিৎ সেলফি তুলছিল৷ তখনই উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ পরিবাহী লাইনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠ হয় সুরজিৎ৷ ঐ ছাদের উপর দিয়ে ছয় হাজার ছয়শ কেভি বিদ্যুৎপরিবাহী লাইনটি বয়ে গেছে৷ সেলফি তোলার সময় সুরজিৎকে আকর্ষণ করে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ পরিবাহী লাইন৷ তাতে তার শরীর ঝলসে গেছে৷ সঙ্গে সঙ্গেই খবর পাঠানো হয় ফায়ার সার্ভিসকে৷ স্থানীয় লোকজনও এগিয়ে আসেন৷ তাকে উদ্ধার করে জিবি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ জিবি হাসপাতালে চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে তার মৃত্যু হয়৷ তার মৃত্যুর সংবাদে এলাকায় গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে৷ এদিকে, যে বাড়ির ছাদে ঘটনাটি ঘটেছে ঐ বাড়ির মালিকের নাম রতন মজুমদার৷ তার বাড়ির ছাদের উপর দিয়ে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ পরিবাহী লাইন বয়ে গেছে৷ ছাদ থেকে খুব বেশি উপরে নয় বিদ্যুৎ পরিবাহী লাইনের তার৷ কিভাবে এ বিদ্যুৎপরিবাহী লাইনের নিচে দ্বিতল তৈরির ভবন অনুমতি মিলেছে তা নিয়েও প্রশ্ণ উঠেছে৷