নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৬ অক্টোবর৷৷ প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিমল সিনহার মতোই পরিণতি হতে পারে বাদল চৌধুরীর৷ এমনটাই গন্ধ পাচ্ছে বিজেপি৷ তাই, সিপিএম বাদল চৌধুরীর সাথে অঘটন ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে৷ এমনই বিস্ফোরক দাবি করলেন বিজেপি কার্যকর্তা রতন লাল নাথ৷ শুধু তাই নয়, পূর্ত ঘোটালা কান্ডে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিরোধী দলনেতা মানিক সরকারের নীরবতা নিয়েও প্রশ্ণ তুলেছেন তিনি৷
সম্প্রতি সাংবাদিক সম্মেলনে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক গৌতম দাশ প্রাক্তন পূর্তমন্ত্রী তথা বিধায়ক বাদল চৌধুরীর সাথে অঘটন ঘটলে তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের নেতৃত্বে বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার দায়ী থাকবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছিলেন৷ আজ নিজ বাসভবনে বিজেপি কার্যকর্তা রতন লাল নাথ এ-বিষয়ে সিপিএমকে পাল্টা নিশানা করেছেন৷ তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বাদল চৌধুরীর সাথে অঘটন ঘটতে পারে বলে সিপিএম যেভাবে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে তা যথেষ্ট উদ্বেগের৷ তাঁর বিস্ফোরক দাবি, অতীতে বিমল সিনহা হত্যার মতোই রাজনৈতিক কারণে অনেক গুপ্তহত্যা সংগঠিত করেছে সিপিএম৷ তাই, বাদল চৌধুরীর পরিণতিও এমনই হতে পারে বলে বিজেপি গন্ধ পাচ্ছে৷ কারণ, মুখ বাঁচাতে যে কোন পদক্ষেপ নেওয়া তাদের জন্য অসম্ভব নয়৷
এ-বিষয়ে রতন নাথের যুক্তি, বিধানসভায় বাদলবাবু পূর্ত ঘোটালায় তদন্তে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিলেন৷ অথচ, তদন্ত শুরু হওয়ার পর তিনি পূর্ণ সহযোগিতা করেননি৷ শুধু তাই নয়, তাঁর গ্রেপ্তারি নিয়ে আদালতের রায় ঘোষণা হতে পারে সেই অনুমান থেকেই তিনি নিজেকে আত্মগোপন করেছিলেন এবং শেষ মুহুর্তে সিপিএমের পরামর্শেই তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন৷
রতন নাথ বলেন, বাদল চৌধুরীকে আইএলএস-এ ভর্তি করানো সিপিএমের সিদ্ধান্ত ছিল৷ ওই হাসপাতালে সকলেই তাঁদের পরিচিত৷ তাই, বাদল চৌধুরীর সাথে যে কোন অঘটন ঘটতে পারে, আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি৷ শ্রীনাথ জানান, এই আশঙ্কাতেই রাজ্য সরকার আইএলএস-কে চিঠি দিয়ে বাদল চৌধুরীর প্রতিদিনের মেডিক্যাল রিপোর্ট জানানোর নির্দেশ দিয়েছে৷ শুধু তাই নয়, প্রত্যেক দিন সংবাদ মাধ্যমেও বাদল চৌধুরীর স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷
এদিন তিনি বলেন, বাদল চৌধুরীকে নিয়ে কোন ষড়যন্ত্র হচ্ছে কিনা তা বুঝতে পারছি না৷ তাই, রাজ্য সরকারের কাছে বাদলবাবুর নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি৷
এদিকে, বাদল চৌধুরীকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে অনুমান করে আজ রতন নাথ পূর্ত ঘোটালা কান্ডে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিরোধী দলনেতা মানিক সরকারের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ণ তুলেছেন৷ তাঁর কটাক্ষ, পূর্ত ঘোটালা নিয়ে এখনো প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার মুখ খুলেননি৷ তাঁর মুখ্যমন্ত্রীত্বে মন্ত্রিসভা কি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সে-বিষয়ে এখনো তিনি স্পষ্ট করে কিছুই জানাননি৷ রতন নাথের কথায়, পূর্ত ঘোটালায় মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত নিয়েই যখন প্রশ্ণ উঠেছে, তখন এবিষয়ে রাজ্যবাসীর কাছে সত্য তুলে ধরা উচিৎ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর৷ তার বদলে বরাবরই তিনি এই ইস্যুতে সংবাদ মাধ্যমকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন৷ তাই, এর পেছনে ষড়যন্ত্রের নীল নক্সা তৈরি হয়েছে কিনা, আশঙ্কা প্রকাশ করেন রতন নাথ৷
আজ রতনবাবু দাবি করেন, বাদল চৌধুরীকে সুস্থ করে তোলার জন্য আইএলএস কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে প্রয়োজনে বর্হিরাজ্য থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়ে আসুক৷ সাথে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একজন সাধারণ নাগরিক এবং বিজেপি কার্যকর্তা হিসেবে দাবি জানিয়েছেন,বাদল চৌধুরীর নিরাপত্তা বাড়ানো হোক৷ কারণ তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস, সিপিএম বিরাট ষড়যন্ত্র করছে এবং বাদল চৌধুরী এর শিকার হতে পারেন৷