নিজস্ব প্রতিনিধি, চুড়াইবাড়ি, ২ অক্টোবর৷৷ মরণ ফাঁদে পরিণত ৮ নং আসাম আগরতলা জাতীয় সড়ক৷যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যেতে পারে রাজ্যের লাইফ লাইন অর্থাৎ আসাম আগরতলা জাতীয় সড়ক৷সংঘটিত হতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা৷ঘটনার বিবরণে প্রকাশ,রাজ্যের লাইফ লাইন অর্থাৎ ৮ নং আসাম আগরতলা জাতীয় সড়কের উপর দীর্ঘ দুই বছর যাবত একটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে৷আর সেই সেতু নির্মাণ করার ফলে বিকল্প একটি ছোট স্টিলের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে যাতে করে সাময়িকভাবে পন্যবাহী লড়ি ও যাত্রীবাহী বাস চলাচল করতে পারে৷ আর এই সেতুটি রাজ্যের প্রবেশদ্বার চুরাইবারি থেকে মাত্র ৫ কিমি দূরে অবস্থিত শনিছড়া এলাকায়৷
যদিও বিকল্প এই স্টিলের সেতুটির ক্যাপাসিটি রয়েছে মাত্র ১৫ টন৷ কিন্তু এই সেতু দিয়ে ৪০ থেকে ৫০ টন ওজনের পণ্যবাহী লড়ি যাতায়াত করছে৷তাতে দুর্ঘটনার প্রবল সম্ভাবনাতো রয়েছেই,রয়েছে লাইফ লাইন বন্ধের আশঙ্কা৷কিন্তু দীর্ঘ দুই বছর যাবত এই সেতুটি নির্মাণের কাজে নির্মাণ সংস্থার চরম ডিলেমি রয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ৷স্থানীয়দের আরো অভিযোগ,কবে নাগাদ এই সেতুটি নির্মাণ হবে তা নিয়েও আশঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয় জনগণ৷শনিছড়া সংলগ্ণ জাতীয় সড়কের উপর পাকা সেতু নির্মাণের বরাদ পায় রাজধানীর এম এস শেখর পোদ্দার কনস্ট্রাকশন৷২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের শুরু হয় এই সেতুটি নির্মাণ কাজ৷কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো আজ অবধি সেতুটির ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি নির্মাণ সংস্থা৷
দুইটা বছর প্রায় অতিক্রান্ত সেতু নির্মাণের কাজ অর্ধেকটা সম্পন্ন হয়নি কিন্তু সেতু নির্মাণের ট্রামএন্ড কন্ডিশনে রয়েছে দু’’বছরের সময়সীমা৷ বিশেষ করে গত ৩/৪ দিন পূর্বে জাতীয় সড়কের উপর বিকল্প স্টিলের সেতুটির উত্তর দিকের অংশের মাটি অনেকটা সরে গিয়ে ফাটল দেখা দিয়েছে৷তারপর থেকে নির্মাণ সংস্থা অর্থাৎ এমএস শেখর পোদ্দার কনস্ট্রাকশনের কর্মীরা সকল পন্যবাহী লড়ি ও যাত্রীবাহী নাইট সুপার গুলিকে চুরাইবারি থেকে কদমতলা বাইপাস দিয়ে ধর্মনগর হয়ে বাগবাসা জাতীয় সড়কে পাঠিয়ে দিচ্ছে৷যেখানে মাত্র ১০ থেকে ১৫ কিমি পথ ছিল সেই জায়গায় নির্মাণ সংস্থার ঢিলেমি কাজের জন্য প্রায় ২৫ থেকে ৩০ কিমি বাইপাস পথ অতিক্রম করে পুনরায় জাতীয় সড়কে উঠতে হচ্ছে৷ তাতে যেমন মালিকপক্ষের লোকসান হচ্ছে পাশাপাশি চুরাইবারি বাইপাস কদমতলা ধর্মনগর সড়কটির অবস্থা চরম শোচনীয় হয়ে উঠেছে৷তাছাড়া স্থানীয় ও চালকদের অভিযোগ,দিনের বেলা কনস্ট্রাকশন কোম্পানির লোক থাকে বাইপাসে গাড়ি পাঠানোর জন্য কিন্তু রাত্রেবেলা কোন লোক না থাকাতে বহি রাজ্য থেকে আসা চালকরা না জেনেই স্টিলের ব্রীজ দিয়ে দিয়ে গাড়ি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন৷ তাতে করে যেকোনো মুহূর্তে পণ্যবাহী গাড়ি ও যাত্রীবাহী নাইট সুপার ব্রিজ ভেঙে নদীতে পড়ে দুর্ঘটনা সংগঠিত হতে পারে৷আর তাতে অনেকের প্রাণ ও যেতে পারে বলেও স্থানীয় জনগণ ও চালকদের দাবি৷
এদিকে রাজ্য ও বহি রাজ্য থেকে আসা চালকরা জানান,উনারা দীর্ঘ পথ পেরিয়ে ত্রিপুরা রাজ্যে প্রবেশ করার পর জাতীয় সড়কের উপর স্টিল সেতু পারাপার নিয়ে অনেকটা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন৷কেউ কেউ না জানে রাত্রিবেলা এই স্টিলের ব্রিজ দিয়ে পারাপার হচ্ছেন৷আবার অনেকে দীর্ঘ ২৫ থেকে ৩০ কিমি পথ পেরিয়ে পুনরায় জাতীয় সড়কের উপর পণ্যবাহী লারি ও যাত্রীবাহী নাইট সুপার নিয়ে উঠছেন৷তাতে করে চালক ও যাত্রীদের চরম সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে৷অনেক চালক আবার বলছেন,দীর্ঘ দুই বছর যাবত নির্মাণ সংস্থা এই সেতুটি কচ্ছপ গতিতে নির্মাণ করে যাচ্ছে৷কবে এই সেতুটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে তা বলা মুশকিল৷
অপর দিকে স্থানীয় জনগণের বক্তব্য, ৮ নং আসাম আগরতলা জাতীয় সড়কের উপর বিকল্প স্টিলের সেতুটির এক পাশের একটা অংশ মাটিতে ফাটল ধরে গিয়েছে৷প্রবল বৃষ্টিপাত ও নির্মাণ সংস্থা ব্রীজের নিচের মাটি কিছুটা কাটার ফলেই এই ফাটল দেখা দিয়েছে৷ আর তাতে পন্যবাহী লড়ি ও যাত্রীবাহী লরি গুলিকে এই ব্রিজ দিয়ে পারাপার করতে না দিয়ে চুরাইবারি বাইপাস কদমতলা ধর্মনগর সড়ক দিয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছে নির্মাণ সংস্থা৷আর তাতে করে চালক থেকে শুরু করে যাত্রীদের ও মালিকপক্ষের চরম সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে৷
স্থানীয় জনগণ আরো অভিযোগ করে বলেন,জাতীয় সড়কের উপর পাকা সেতু নির্মাণে আগরতলার কন্টাকটার শেখর পোদ্দার বরাত পেয়েছেন৷ আর উনার দ্বারা সেতু নির্মাণের কাজ সম্ভব নয়৷ যদি ন্যাশনাল হাইওয়ে বড় কনস্ট্রাকশন কোম্পানির হাতে এই সেতু নির্মাণের কাজ দিত তাহলে এতদিনে জাতীয় সড়কের উপর পাখা সেতু নির্মাণ হয়ে যেত৷ এরকম দুভর্োগ পোহাতে হতো না আজ চালক ও যাত্রীদের৷ স্থানীয়দের আরও বক্তব্য শুধু দুভর্োগ বললে ভুল হয়,যেকোনো মুহূর্তে রাত্রিবেলা বহি রাজ্য থেকে আসা লরি চালক ও যাত্রীবাহী বাস এই সেতু ভেঙে নদীতে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে৷ প্রানো যেতে পারে অনেকের৷ তার দায়ভার কে নেবে৷ এমএস শেকর পোদ্দার নির্মাণ সংস্থা না ন্যাশনাল হাইওয়ে? প্রশ্ণ স্থানীয় জনগণের৷
পাশাপাশি ন্যাশনাল হাইওয়ের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার অভিজিৎ সূত্রধরকে এসকল সমস্যা নিয়ে জিজ্ঞেস করলে উনি বিষয়টুকু হালকাভাবে উড়িয়ে দেন৷উনার বক্তব্য দু’’একদিনের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে৷ সেতু নির্মাণের কাজ নাকি ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে৷ কিন্তু বাস্তব আর কথার মধ্যে যে দিন রাত ফারাক রয়েছে তা হয়তো ইঞ্জিনিয়ার বাবু ভুলে গিয়েছিলেন৷
তবে স্থানীয় জনগণ থেকে শুরু করে লরি চালক ও যাত্রীরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও পূর্ত দপ্তরের হস্তক্ষেপ দাবি করছেন৷রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ও পূর্ত দপ্তর যেন শনিছড়া সংলগ্ণ ৮ নং আসাম আগরতলা জাতীয় সড়কের বিকল্প স্টিল সেতুর দিকে একটু নজর দেন না হলে যেকোনো মুহূর্তে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা সহ রাজ্যে লাইফ লাইন বন্ধ হয়ে যেতে পারে৷প্রানও হারাতে পারেন রাজ্যের বহির রাজ্যের চালক থেকে শুরু করে যাত্রীরা৷এখন দেখার বিষয় রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ও পূর্ত দপ্তর শনিছড়া সংলগ্ণ ৮ নং জাতীয় সড়কের উপর স্টিলের সেতুর দিকে কতটুকু নজর দেন৷