ত্রয়ী খুনে ধৃত যুবক হাসপাতালে, কোন উত্তর দেবার স্থিতিতে নেই

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৬ জুলাই৷৷ রাজধানী আগরতলার বেলতলীতে ত্রয়ী খুনের ঘটনায় ধৃত সজীব হালদার (৩২) কে পুলিশ সরকারী মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করেছে৷ অন্যদিকে মৃতদের ময়না তদন্তের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে৷ মৃত দম্পতির এক মাত্র জীবিত পুত্র রাজ্যে ফিরলেই তার কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হবে৷ পুলিশ জানিয়েছে, ত্রয়ী খুনের ঘটনায় ধৃত দম্পতির বড় পুত্র সজীব হালদার (৩২) কে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনের সহস্য জানার চেষ্টা করা হয়েছে৷ কিন্তু সে সাড়া দিচ্ছে না৷ শুধু তাই নয় সে নিজের দেহে আঘাত করার চেষ্টা করছে৷ অন্যথায় মাথার সঙ্গে হাঁটু লাগিয়ে অদ্ভুত ভাবে বসে থাকার চেষ্টা করছে৷ কোন ধরনের উত্তর দেবার স্থিতিতে সে নেই৷ এমনকি সে কিছুই খেতেও চাইছে না৷ মাঝে মধ্যে সে গোংরানির মত আওয়াজও করছে৷ তবে পুলিশ এতটুকু জানতে পেরেছে, সে অন্তত একাধিক দিন যাবত কিছু খাচ্ছে না৷ আর তাকে খেতে আসার জন্য তার পিতা তার কাছে গিয়েছিলেন৷ পিড়াপিড়ি করেছেন খাবার জন্য আর থেকেই বিপত্তি ঘটে৷ পুলিশ আরও জানিয়েছে, এই ঘটনার একমাত্র জীবিত প্রত্যক্ষদর্শী আততায়ী নিজে৷ সে খুনের দায় স্বীকার করা ভিন্ন অন্য কোন সদুত্তর দেয় নি৷ একই সঙ্গে ঘটনা স্থলের তথ্য প্রমাণ তার স্বীকারোক্তির সত্যতা প্রমাম করে৷ কিন্তু এছাড়া আর বিশেষ কিছু জানা সম্ভব হচ্ছে না৷ সজীব হালদার তার ছোট ভাই, যে আর্মি পাবলিক সুকলের শিক্ষক এবং বর্তমানে প্রশিক্ষণের জন্য বহিঃরাজ্যে রয়েছে, তার শরীর চর্চার একটি ডাম্বেল দিয়ে পরপর তিন খুন করেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে৷ তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে রক্তমাখা সেই ডাম্বেলটি৷ মা, বাবা ও মামাতো বোনের তিনজনকেই একই ঘরে মাথা থেঁতলে নৃশংসভাবে সজীব খুন করেছে বলে পুলিশের ধারনা৷ পুলিশ আরও জানিয়েছে, বেকারত্বের জ্বালায় মানসিক অবসাদগ্রস্ত সজীবকে আপাতত আর জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না৷ কারণ এতে কোন লাভ হবে না৷ চিকিৎসকরা তাকে পরীক্ষা করেছেন এবং তার অবস্থা ভাল নয় বলে রিপোর্ট পাওয়া গেছে৷ তাই  তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ সেখানে তার চিকিৎসা হবে৷ তারপর তার শারীরিক ও মানসিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি ঘটলে  তাকে এই বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে৷ উল্লেক করা যেতে পারে, গতকাল রাতে ৩২ বছরের উচ্চ শিক্ষিত যুবক সজীব হালদার তার বাবা তথা সেই অভিশপ্ত বাড়িটির মালিক বাবুল হালদার (৫৯), পরে তার মা সাবিত্রী হালদার (৪৮) এবং সবশেষে মামাতো বোন শিবু চক্রবর্তীকে (৩৮) হত্যা করে৷ শিবু চক্রবর্তীর মৃত্যুর আগে আর্ত চিৎকারে এলাকাবাসীরা ওই বাড়িতে ডুকেই বড় ধরনের কিছু ঘটে যাবার আশঙ্কা করেন৷ কিন্তু ভয়ে কেউই ভেতরে যাননি৷ এলাকাবাসীদের তরফে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় অরুন্ধতী নগর থানার পুলিশ৷ পুলিশ খুনে অভিযুক্ত মৃত দম্পতির বড় ছেলে সজীব হালদারকে মৃতদেহের সঙ্গে বসে থাকতে দেখে৷ তার হাতে ও গায়েও রক্ত ছিল৷ সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ তাকে আটক করে৷ পুলিশের প্রাথমিক দাবী সজীব হালদার প্রচন্ড ভাবে মানসিক ভারসাম্যহীন এবং নেশা আসক্ত৷ তবে নেশার জন্য সে কি ব্যবহার করে তা বোঝা যাচ্ছে না৷ সে ঘটনা স্থলেই তখনই স্বীকার করেছে সে তার বাবা, মা এবং বোনকে খুন করেছে৷ যদিও এই ঘটনার পেছনে প্রকৃত রহস্য সম্পর্কে পুলিশ কিছুই বলতে পারছে না৷