নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৩ মার্চ৷৷ রঙ খেলার দিনে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি’র মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উত্তপ্ত
রাজধানী আগরতলা৷ দুই দলের মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিক সহ আহত হয়েছেন ৮ জন৷ বিজেপি রাজ্য সহ-সভাপতি সুবল ভৌমিক মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন৷ পুলিশের গাড়ি সহ তিনটি গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে৷ পরিস্থিতি স্বাভাবিকে আনতে ১৪৪ ধারা জারি করা হলেও পুলিশের লাঠিচার্জ করতে হয়েছে৷ সংঘর্ষের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে পুলিশের মারে আক্রান্ত হয়েছেন দুই সাংবাদিক৷ সব মিলিয়ে হোলির দিনে সন্ধ্যায় রাজধানী আগরতলার পোস্ট অফিস চৌমুহনী চত্বর উত্তপ্ত ছিল৷ সংঘর্ষের ঘটনায় রাজধানী জুড়ে আতঙ্ক দেখা দেয়৷
সোমবার রঙ খেলার সময় রাকেশ দেববর্মা এবং বিজেপি মন্ডল সম্পাদক জয়ন্ত ঘোষের উপর মারধরের অভিযোগ উঠে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমীর রঞ্জন বর্মনের ছেলে সন্দীপ রায় বর্মণের উপর৷ এই ঘটনায় একদল বিজেপি কর্মী সমীর বর্মণের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে৷ বিজেপি রাজ্য সহ-সভাপতি সুবল ভৌমিকের নেতৃত্বে আরেকদল পশ্চিম আগরতলায় থানায় ডেপুটেশন দেয় এবং মামলা করে৷ বিজেপি’র দাবি, সন্দীপ রায় বর্মনকে গ্রেপ্তার করতে হবে৷ এরই কিছুক্ষনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস মিছিল করে পশ্চিম থানার দিকে আসতে দেখে পুলিশ থানার সামনে উপস্থিত বিজেপি কর্মীদের ব্যারিকেড দিয়ে রাখে৷
[vsw id=”Y6WboVujt00″ source=”youtube” width=”425″ height=”344″ autoplay=”yes”]এরপরই শুরু হয়ে যায় দুই দলের মধ্যে সংঘর্ষ৷ দুই দলই একে অপরকে লক্ষ্য করে ইট, পাটকেল ছুড়তে শুরু করে৷ এই ঘটনায় বিজেপি সহ-সভাপতি সুবল ভৌমিক মাথায় আগাত পান৷ এক সময় পরিস্থিতি ভিষণ উত্তপ্ত হয়ে উঠলে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়৷ এরই মধ্যে ঘটনাস্থলে এসে হাজির হন তৃণমূল বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন, বিধায়ক আশীষ কুমার সাহা সহ দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ৷ তাঁরা পরিস্থিতি স্বাভাবিকে আনার জন্য দলীয় কর্মীদের নানাভাবে আবেদন জানান৷ কিন্তু কোনভাবেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠছিল না৷ দুই দলের কর্মীরাই বাঁশ দিয়ে একে অপরের উপর আক্রমন চালায়৷ ঘটনা বেগতিক দেখে পুলিশ তৃণমূলের কর্মীদের হরিগঙ্গা বসাক রোড দিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে৷ কিন্তু, তখন আবার দুই দলের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়৷ তখন পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে৷ তৃণমূল ও বিজেপি’র কর্মীদের লাঠি দিয়ে পেটানোর সময় ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত দুই সাংবাদিক নিতাই দেবনাথ এবং স্বপন কান্তি দেবনাথকেও আক্রান্ত করে৷ ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্যান্য সাংবাদিক এগিয়ে আসতেই আক্রমনকারী পুলিশ সেখান কর্মীরা থেকে পালিয়ে যান৷ আহত দুই সাংবাদিককে সহকর্মীরা উদ্ধার করে জি বি হাসপাতালে নিয়ে যান৷ তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে৷
এদিন, লাঠিচার্জ করার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়৷ জানা গেছে, এদিনের ঘটনায় সাংবাদিক ও পুলিশ কর্মী সহ ৭ জন আহত হয়েছেন৷ এদিকে, সাংবাদিকের উপর আক্রমণের ঘটনায় অন্যান্য সাংবাদিকরা পশ্চিম আগরতলায় থানার সামনে ধর্না প্রদর্শন করেছেন৷ পশ্চিম জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ সপ্তর্ষি ঘটনার তদন্তক্রমে দোষীকে শাস্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন৷