আগরতলা, ৬ ডিসেম্বর: আর্ত মানুষদের সেবায় অসামরিক প্রতিরক্ষা এবং গৃহরক্ষী স্বেচ্ছাসেবকদের অবদান অপরিসীম। এদের তৎপরতায় যেমন অনেক মানুষের জীবন রক্ষা পায় ঠিক তেমনি সম্পত্তিও রক্ষা পায়। অসামরিক প্রতিরক্ষা এবং গৃহরক্ষী বাহিনীর স্বেচ্ছাসেবকগণ হলেন সমাজ ও জীবনের রক্ষক। অসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনী ও গৃহরক্ষীদের নিঃস্বার্থভাবে কাজ ও আত্মত্যাগকে সম্মান জানাতে এই দিনটি উদযাপন করা হয়। আজ মনোরঞ্জন দেববর্মা পুলিশ প্যারেড গ্রাউন্ডে ৬৩তম অল ইন্ডিয়া সিভিল ডিফেন্স এবং হোম গার্ডস ডে ২০২৫ উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি মুখ্যমন্ত্রী (ডা) মানিক সাহা একথা বলেন।
মুখ্যমন্ত্রী ভাষণে সিভিল ডিফেন্স, গৃহরক্ষী বাহিনী ও আপদা মিত্র স্বেচ্ছাসেবকদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বিপর্যয় এবং দুর্যোগ মোকাবেলায় সিভিল ডিফেন্স, গৃহরক্ষী বাহিনী ও আপদা মিত্র সদস্যগণ আর্ত মানুষদের পাশে থাকার ফলে মানুষরা যে ভরসা পায় তা সেবার এক মহান দৃষ্টান্ত। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতে ১৯৬৮ সালে অসামরিক প্রতিরক্ষা আইনী মর্যাদা পেলেও ত্রিপুরায় ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় অসামরিক প্রতিরক্ষা বিষয়টি স্বীকৃতি পায়। ২০২১ সাল পর্যন্ত অসামরিক প্রতিরক্ষা শুধুমাত্র আগরতলা শহরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো। ২০০৯ সালে সিভিল ডিফেন্স আইন সংশোধিত করে এতে বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আগে অসামরিক প্রতিরক্ষা বিষয়টি পশ্চিম ত্রিপুরা জেলাশাসকের নিয়ন্ত্রণে ছিলো। ২০১৯ সালে তা রাজ্য স্বরাষ্ট্র দপ্তরের নিয়ন্ত্রণে এবং ২০২০ সালে রাজস্ব দপ্তরে নিয়ন্ত্রনাধীন হয় এবং ২০২১ সালে সিভিল ডিফেন্স কার্যক্রম রাজ্যের সমস্ত জেলাতে সম্প্রসারিত হয়। ত্রিপুরাতে বর্তমানে ৮টি জেলাতেই সিভিল ডিফেন্স কার্যক্রম সক্রিয় রয়েছে। বর্তমানে ত্রিপুরায় ৫ হাজার জন প্রশিক্ষিত সিভিল ডিফেন্স স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে। রাজ্য সরকার রাজ্যের জনসংখ্যার ১ শতাংশ সিভিল ডিফেন্স স্বেচ্ছাসেবক গঠনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। ২০২৬ সালের মধ্যে আরও ৩ হাজার সিভিল ডিফেন্স স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ প্রাপ্তরা বিপর্যয় ব্যবস্থাপনায় মানুষের সহায়তায় নিয়োজিত থাকবে।
সিভিল ডিফেন্সের মতই আপদা মিত্র স্বেচ্ছা সেবকরা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় মানুষের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষায় নিয়োজিত থাকে। আগামীতে আরও ১৬০০ জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। রাজ্যে গত বছরের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় সিভিল ডিফেন্স ও আপদামিত্র স্বেচ্ছাসেবকগণ মানুষের সেবায় দারুণভাবে কাজ করেছেন। রাজ্য সরকার ত্রিপুরাকে একটি বিপর্যয় সহনশীল রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলার জন্য অঙ্গিকারবদ্ধ।

