ডিব্রুগড়, ২৩ জুলাই —নতুন জলপাইগুড়ি স্টেশনে মঙ্গলবার দুপুরে উত্তাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, যখন ০৫৯২৫ দেওঘর জংশন–ডিব্রুগড় টাউন ‘বল বম’ স্পেশাল ট্রেনের যাত্রীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। যাত্রীদের অভিযোগ, ট্রেনের ভিতরের পরিস্থিতি এতটাই শোচনীয় ছিল যে ধর্মীয় তীর্থযাত্রা কার্যত এক বিভীষিকায় পরিণত হয়েছে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃক পরিচালিত এই ট্রেন সোমবার রাত ১০টা ১৭ মিনিটে দেওঘর থেকে রওনা দেয়। ট্রেনে থাকা বহু তীর্থযাত্রী, যাঁদের অনেকে বয়স্ক এবং শিশুসহ পরিবার নিয়ে যাত্রা করছিলেন, তাঁরা জানান—এসি কাজ করেনি, সিলিং ফ্যান ভাঙা, আলো পর্যাপ্ত ছিল না, এমনকি শৌচালয়ে জল ছিল না। পুরো যাত্রাপথজুড়ে নোংরা পরিবেশ ও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হয়েছে বলে অভিযোগ।
টানা ১৫ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে এই যাত্রী দুর্ভোগ চলার পর, অবশেষে এনজেপি স্টেশনে যাত্রীরা নেমে প্ল্যাটফর্মে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তারা দাবি করেন, কাটিহার রেল ডিভিশনের পক্ষ থেকে কোনও আধিকারিক ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেননি।
একজন ক্ষুব্ধ যাত্রী বলেন, “এসি চলছে না, টয়লেটে জল নেই, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বলে কিছু নেই। দেওঘর থেকে চিৎকার করে জানানো হয়েছে, কিন্তু কেউ কোনও সাহায্য করেনি। এটা কি তীর্থযাত্রীদের প্রাপ্য?”
আরেকজন বলেন, “এটা শুধু একটা ট্রেন নয়, এটা তীর্থযাত্রীদের জন্য স্পেশাল ট্রেন। ন্যূনতম সুবিধাগুলোর নিশ্চয়তা না দিলে কেন এই বিশেষ পরিষেবা?”
ট্রেনটি তখনও অসমের ডিব্রুগড়ের গন্তব্যে পৌঁছাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাকি। এদিকে, গৌহাটির এনএফআর সদর দফতর বা কাটিহার ডিভিশন—দুটো দিক থেকেই কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া মেলেনি। যাত্রীদের অভিযোগ, রেল কর্তৃপক্ষের চরম অব্যবস্থাপনা ও অবহেলা এই সমস্যার মূল কারণ।
এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে, তীর্থযাত্রীদের জন্য চালু হওয়া বিশেষ ট্রেনগুলোর পরিকল্পনা ও পরিচালনার ক্ষেত্রে রেলের প্রস্তুতি কতটা দায়িত্বশীল? এমনকি, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব সম্পন্ন যাত্রার ক্ষেত্রেও যদি যাত্রীদের এইভাবে ভোগান্তির শিকার হতে হয়, তবে রেল কর্তৃপক্ষের দায় কোথায়?
পরিস্থিতি নিয়ে রেলের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া না গেলেও, ক্ষুব্ধ যাত্রীদের বক্তব্যে স্পষ্ট—এটাই একমাত্র ‘বল বম’ ট্রেন নয়, সারা দেশের স্পেশাল ট্রেন ব্যবস্থাপনার প্রতি এই ঘটনার প্রতিফলন ঘটেছে।

