BRAKING NEWS

বিশ্ব পর্যটন দিবসে এবারের থিম পর্যটন এবং শান্তি জাতি ও সংস্কৃতির মধ্যে সেতু বন্ধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে : পর্যটন মন্ত্রী

আগরতলা, ২৫ সেপ্টেম্বর: প্রতিবছর সারা বিশ্ব তথা দেশের সাথে ত্রিপুরা রাজ্যেও বিশ্ব পর্যটন দিবসটিকে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হয়ে থাকে। এবছর বিশ্ব পর্যটন দিবস রাজ্যে এক নতুন আঙ্গিকে ও কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হবে। আজ গীতাঞ্জলী ট্যুরিজম গেস্ট হাউজে এক সাংবাদিক সম্মেলনে পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী একথা জানিয়ে বলেন, এবছর পর্যটন দিবসের মূল থিম বা ভাবনা হল ‘পর্যটন এবং শান্তি’।

তিনি বলেন, সারা বিশ্বে কোথাও না কোথাও একটি অস্থির পরিবেশ চলছে। বিশ্ব পর্যটন দিবসে এবারের থিম ‘পর্যটন এবং শান্তি’ ভাবনাটি জাতি ও সংস্কৃতির মধ্যে সেতু বন্ধনে, শান্তি ও বোঝাপাড়া বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সাংবাদিক সম্মেলনে পর্যটন মন্ত্রী বলেন, এবছরের এই বিশ্ব পর্যটন দিবসের আয়োজক দেশ হল জর্জিয়া। সেই সাথে তিনি জানান, আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ বিশ্ব পর্যটন দিবসকে সামনে রেখে সারা দেশের সাথে রাজ্যেও পর্যটন দপ্তরের পক্ষ থেকে একাধিক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। এই কর্মসূচিগুলি আজ অর্থাৎ ২৫ সেপ্টেম্বর থেকেই শুরু হয়েছে। আজ পর্যটন অনুরাগীদের নিয়ে পর্যটন নিগমের আর্থিক সহায়তায় আগরতলা থেকে চোত্তাখলাস্থিত ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী উদ্যান ভ্রমণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি রাজ্যে বন্যায় মৃত্যু হয়েছে এমন পরিবারগুলির সদস্যের হাতে ১টি করে সাপোর্ট কিটবক্স তুলে দেওয়া হবে। এছাড়া বাকি জেলার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদেরও এই সহায়তা প্রদান করা হবে। রাজ্যে পর্যটনের ব্যান্ড অ্যাম্বাসেডর সৌরভ গাঙ্গুলী ৫টি জেলার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে এই সহায়তা প্রদানে এগিয়ে এসেছেন।

তিনি বলেন, পর্যটন নিগমের উদ্যোগে আগামীকাল ২৬ সেপ্টেম্বর গান্ধীগ্রামস্থিত ‘সান্ধ্যনীড়’ বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের নিয়ে একটি ফেম ট্যুর করা হবে। আমতলী বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের নিয়ে মাতা ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দির দর্শন করানো হবে। এছাড়া বৃদ্ধাশ্রমের সকল আবাসিকদের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ করা হবে।

সাংবাদিক সম্মেলনে পর্যটন মন্ত্রী জানান, ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ প্রাঙ্গণে তিনদিন ব্যাপী পর্যটন দিবস উদযাপনের সমাপ্তি দিনে মূল অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হবে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানে এবারের বন্যায় যে বীরগণ মানুষের জীবন রক্ষায় অসীম সাহসের পরিচয় দিয়েছেন সেই বীরদের সম্মান জানানো হবে। এছাড়া অনুষ্ঠিত হবে বিশেষ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। এতে রাজ্যের বিশিষ্ট শিল্পীদের সাথে উপস্থিত থাকবেন কলকাতার প্রখ্যাত শিল্পী শ্রীকান্ত আচার্য। পর্যটন মন্ত্রী সকলকে এই অনুষ্ঠান উপভোগ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এদিন সকাল থেকে রাজ্যে নানা কর্মসূচি আয়োজিত হবে।

এর মধ্যে রয়েছে শান্তি র‍্যালি। যা পর্যটন দপ্তরের মূল কার্যালয় শ্বেত মহল থেকে শুরু হয়ে ফ্ল্যাগ-ফেস্টুন সম্বলিত বর্ণাঢ্য র‍্যালি হেরিটেজ পার্কে গিয়ে সমাপ্ত হবে। এদিন সকাল ৭টায় র‍্যালি অনুষ্ঠিত হবে। র‍্যালিতে অংশ নেবেন ট্যুর অপারেটর, হোটেলিয়ার্স, ছাত্রছাত্রী, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী, সংগঠন এবং পর্যটন প্রেমীগণ। এই র‍্যালি ও শোভাযাত্রা ফ্ল্যাগ অফ করবেন ত্রিপুরার রাজ্যপাল ইন্দ্রসেনা রেডি নান্নু। এছাড়া ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিকাল ৩টায় ‘পর্যটন ও শান্তি’ এই মূল ভাবনাকে নিয়ে একটি বিশেষ সেমিনার আয়োজিত হবে। এবিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হবে। এছাড়া এদিন সকালে উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ থেকে হেরিটেজ পার্ক পর্যন্ত একটি বাইসাইক্যাল র‍্যালিও অনুষ্ঠিত হবে। সাংবাদিক সম্মেলন শেষে পর্যটন মন্ত্রী শ্রী চৌধুরী বলেন, এই সমস্ত কর্মসূচি পালনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিশ্বব্যাপী সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মূল্যবোধকে প্রভাবিত করে পর্যটন শিল্পকে উন্নত করা এবং মানুষের মধ্যে পর্যটন বান্ধব সচেতনতা সৃষ্টি করা।

সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বিগত বছরে রাজ্যের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে কি কি কাজ করা হয়েছে ও চলতি বছরে কি কি কাজ করা হচ্ছে এবং আগামী দিনে রাজ্যে এই শিল্পের উন্নয়নে কি পরিকল্পনা নেওয়া হবে সেসব তথ্যও তুলে ধরেন। সাংবাদিক সম্মেলন শেষে পর্যটন মন্ত্রী ফ্ল্যাগ নেড়ে ৫টি জেলার বন্যাকবলিত অঞ্চলের উদ্দেশ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির জন্য প্রেরিত সাপোর্ট কিট সম্বলিত গাড়িগুলির যাত্রা করান। এই গাড়িগুলিতে বন্যাকবলিত পরিবারগুলির জন্য রয়েছে পরিধেয় বস্ত্র, কম্বল, বিভিন্ন শুকনো খাদ্য সামগ্রী,বই, খাতা, কলম ইত্যাদি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *