BRAKING NEWS

মেঘালয়ের জাতীয় সড়কে দফায় দফায় ধস, পঞ্চম দিনেও বিচ্ছিন্ন বরাক, ত্রিপুরা, মিজোরাম ও মণিপুর

উভয় দিকে ২৫-৩০ কিলোমিটার ব্যাপী দীর্ঘ লাইনে আটক পণ্য ও যাত্রীবাহী গাড়িজনদুর্ভোগ চরমে

ধস সমস্যার স্থায়ী সমাধানে প্রধানমন্ত্রী মোদীর হস্তক্ষেপ দাবি বরাক উপত্যকার বিভিন্ন সংগঠনের

শিলচর (অসম)১৬ জুন (হি.স.) : মেঘালয়ের পূর্ব জয়ন্তিয়াপাহাড় জেলার সোনাপুরের বুক চিরে ধাবিত গুয়াহাটি-বরাক উপত্যকা ৬ নম্বর (পুরাতন ৪৪ নম্বর) জাতীয় সড়কের বিভিন্ন স্থানে গত পাঁচদিন ধরে দফায় দফায় ধস নামায় ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা দক্ষিণ অসমের বরাক উপত্যকার তিন জেলা, প্রতিবেশী ত্রিপুরা, মণিপুর এবং মিজোরাম। জাতীয় সড়কের ওপর পাহাড় থেকে জল-মিশ্রিত কাদামাটির ধস পড়ায় হাজার হাজার ভারী পণ্যবাহী লরি এবং যাত্রীবাহী ছোট ও বড় গাড়ি রাস্তার দু পাশে আটকে পড়েছে। তবে সৌভাগ্যবলে ভয়াবহ এই বিপর্যয়ে প্রাণহানীর কোনও খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এদিকে মেঘালয়ের পাহাড়ি জাতীয় সড়কে ফি-বছর ভয়ংকর ভূমিধস সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হস্তক্ষেপ দাবি করে তাঁর কাছে বরাক উপত্যকার বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে একাধিক স্মারকপত্র পাঠানো হয়েছে।

প্রতিকূল আবহাওয়া ও লাগাতার বৃষ্টিপাতের ফলে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে মেঘালয়ের পাহাড়ি রাস্তার নানা স্থানে ধস পড়ে যান চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। যার ফলে শিলচর-গুয়াহাটি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। সড়কপথে ধস পড়ার পাশাপাশি লামডিং-বদরপুর রেলপথেও একই কারণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

গতকাল সারারাত ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের নানা স্থানে নতুন করে ধস পড়েছে। মেঘালয়ের সোনাপুরের পর লুমসুলুম এবং রাতাছড়ায় ভয়ংকর ধস নামায় জাতীয় সড়কে যান চলাচল নাগাড়ে পাঁচদিন ধরে স্তব্ধ। সড়কের উভয়দিকে দীর্ঘ ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার ব্যাপী দীর্ঘ লাইনে আটকে পড়েছে হাজারো গাড়ি। কখন যে রাস্তা খুলবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই।

পাহাড়ি জাতীয় সড়কের এক জায়গায় ধস সারাই করতে না-করতেই অপর স্থানে ফের পাহাড় থেকে কাদা-জল ও বড় বড় পাথর নেমে আসায় বিঘ্নিত হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। কেবল তা-ই নয়, বড় বড় ফাটল ধরছে ওই এলাকার জাতীয় সড়কে। পাহাড়ি জল প্রবাহের তীব্রতায় বহু অংশে অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে রাস্তা। জলের ধাক্কায় রাস্তার পিচ সরে গিয়ে জল-কাদায় একাকার হয়ে পড়েছে জাতীয় সড়ক। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

দূরপাল্লার যাত্রী এবং পণ্যবাহী লরিগুলোর চালকদের চরম যন্ত্রণাদায়ক পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এদিকে রাস্তার ভয়াবহতার সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা লাগামছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে অধিক মুনাফা আদায়ে উন্মত্ত হয়ে পড়েছে। একটি ডিমের দাম কুড়ি টাকা, ৫ টাকার বিস্কুট বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়। ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে গুয়াহাটি তথা দেশের অন্যান্য স্থানের সঙ্গে বরাক উপত্যকা তথা পার্শ্ববর্তী ত্রিপুরা, মিজোরাম ও মণিপুর রাজ্য সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

প্রত্যেক বছর বর্ষার মরশুমে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের মেঘালয়ের ধসপ্রবণ পাহাড়ি রাস্তায় ভয়ংকর ভূমিধস সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য ই-মেলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে বরাক উপত্যকার বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে একাধিক স্মারকপত্র পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *