BRAKING NEWS

(রাউন্ড আপ) মালদা উত্তরে আয়োজিত বিশাল জনসভায় কংগ্রেস ও টিএমসিকে তীব্র নিশানা মোদীর

মালদা, ২৬ এপ্রিল (হি.স.) : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের মালদা উত্তরে আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় বক্তব্য রেখেছেন এবং কংগ্রেস ও টিএমসির তোষণের রাজনীতিকে তীব্র আক্রমণ করেছেন। অনুষ্ঠান চলাকালীন, মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মালদা উত্তর লোকসভা প্রার্থী শ্রী খগেন মুর্মু এবং মালদা দক্ষিণ লোকসভা প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী সহ অনেক বরিষ্ঠি কর্মকর্তারা উপিস্থিত ছিলেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ দ্বিতীয় দফার ভোটের দিন ভারত মাতার ধ্বনি দিয়ে জনতা নিজেদের মূল্যবান ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে যাচ্ছেন। আপনাদের ভোটাধিকার সঠিকভাবে ব্যবহার করার অর্থ গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা। তৃণমূল এবং কংগ্রেসের মতো দলগুলি নির্বাচনের প্রথম দফায় পরাজিত হয়েছে এবং এই দফায় এই দলগুলি ভেঙে পড়বে। একটা সময় ছিল যখন বাংলা সমগ্র দেশের উন্নয়নে নেতৃত্ব দিয়েছিল, তা সে সমাজ সংস্কার হোক, বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি হোক, আধ্যাত্মিকতার অগ্রগতি হোক অথবা দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকার, জীবনে এমন কোনও দিক নেই যা বাংলার নেতৃত্বে ছিল না। কিন্তু কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস মিলে বাংলার সম্মান নষ্ট করেছে। তৃণমূলের শাসনে বাংলায় একটাই কাজ চলে আর সেটা হল দুর্নীতি।

শ্রী মোদী বলেন, টিএমসি-র তালিকায় চিট ফান্ড কেলেঙ্কারি, পশু পাচার, পৌর কেলেঙ্কারি, কয়লা কেলেঙ্কারি এবং রেশন কেলেঙ্কারির মতো বেশ কয়েকটি দুর্নীতি এবং কেলেঙ্কারির মামলা রয়েছে। দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূল সরকার কেলেঙ্কারি করেছে, কিন্তু বাংলার জনগণকে ক্ষতি বহন করতে হচ্ছে। বাংলায় কমিশন ছাড়া কোনও কাজই সম্পন্ন হয় না। যেসব কৃষক নিজেদের ফসল বাজারে বিক্রি করতে যায় তাদের আয়ের একটা বড় অংশ চলে যায় মধ্যস্বত্বভোগীদের হাতে। তৃণমূল সরকার যুবকদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলতে পিছপা হয়নি। তৃণমূলের শিক্ষা কেলেঙ্কারির কারণে প্রায় ২৬ হাজার পরিবারের জীবিকা থমকে গিয়েছে এবং তারা ঋণের নিচে চাপা পড়ে গিয়েছেন। বিজেপি সরকার সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে যুবকদের চাকরি দিচ্ছে। বিজেপি মুদ্রা যোজনা, স্টার্টআপ ইন্ডিয়া ক্যাম্পেইন, স্কিল ডেভেলপমেন্ট স্কিমের মাধ্যমে যুবকদের সক্ষমতা আরও বাড়ানোর জন্য কাজ করেছে। বিজেপি সরকারের নীতির কারণে দেশে নতুন নতুন ক্ষেত্র খুলছে যেখানে যুবকরা আরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছেন। কিন্তু বাংলায় টিএমসি যুব সমাজের উন্নয়নের সব দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। বিজেপি সরকারের জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের কারণে জনসাধারণ বিনামূল্যে রেশন পাচ্ছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধির অধীনে বাংলার ৫০ লক্ষেরও বেশি কৃষকের অ্যাকাউন্টে 8 হাজার কোটি টাকা সরাসরি পাঠানো হয়েছে, কিন্তু টিএমসি সরকার জনগণের টাকা লুট করতে কোনও খামতি রাখে না। রাজ্যের উন্নয়নের জন্য কেন্দ্র যে টাকা পাঠায় তা মন্ত্রী, নেতা ও তোলাবাজরা মিলে নষ্ট করে। তৃণমূল সরকার কেন্দ্রের প্রকল্পগুলিও বন্ধ করে দেয়। টিএমসি সরকার রাজ্যে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প বাস্তবায়নেরও অনুমতি দেয়নি। বিজেপি ৭০ বছরের বেশি বয়সী সমস্ত শ্রেণীর মানুষজনকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তবে টিএমসি সরকার বাংলার বয়স্কদেরও এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে দেবে না। টিএমসি চায় বন্দে ভারতের মতো হাই স্পিড ট্রেনও বাংলায় স্তব্ধ হয়ে যাক। মালদার কৃষকদের উৎপাদিত আম ও মাখনা বিশ্ব প্রসিদ্ধ। এই কৃষকদের আয় বাড়াতে বিজেপি সরকার খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপন করবে। তাতেও নিজেদের ভাগ দাবি করে টিএমসি।

শ্রী মোদী বলেন যে, তৃণমূল কংগ্রেস যারা মা মাটি মানুষের কথা বলে ক্ষমতায় এসেছে, তারাই রাজ্যের মহিলাদের প্রতি সবচেয়ে বেশি বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। যখন বিজেপি সরকার তিন তালাক বাতিল করেছিল, টিএমসি এর বিরোধিতা করেছিল। সন্দেশখালিতে মহিলাদের উপর যারা অত্যাচার করেছিল, টিএমসি তাদের আশ্রয় দিয়েছে। মালদায়ও মহিলাদের সাথে যে লজ্জাজনক ঘটনা ঘটেছিল সেখানেও টিএমসি নীরব ছিল। কিন্তু বিজেপি সরকারের কাছে মহিলাদের মর্যাদা সবচেয়ে বেশি। বিজেপি সরকার বাংলায় ৮০ লক্ষেরও বেশি শৌচাগার তৈরি করেছে, ১.২৫ কোটি মহিলাকে উজ্জ্বলা গ্যাসের সংযোগ দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মাধ্যমে দেওয়া বাড়ির অধিকাংশই মহিলাদের নামে। বিজেপি সরকার প্রতিটি স্তরে মহিলাদের ক্ষমতায়ন করছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, টিএমসি এবং কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গে উভয়ই একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করার অভিনয় করে। কিন্তু উভয়েরই চিন্তাভাবনা, আচরণ একইরকম। এই দুটি দলই তোষণের জন্য যে খুশি করতে পারে। তোষণের জন্য এই দলগুলো জাতীয় স্বার্থে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোও বদলে ফেলতে চায়। টিএমসি এবং কংগ্রেস-সহ ইন্ডি জোটের দলগুলি ৩৭০ ধারা পুনরায় আরোপ করা এবং সিএএ আইন বাতিল করার কথা বলছে। তোষণের রাজনীতির জন্য টিএমসি এবং কংগ্রেস চায় না যে হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন এবং পার্সি উদ্বাস্তু শরণার্থীরা নাগরিকত্ব পান। সিএএ নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার নয়, নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন। কিন্তু তারপরও টিএমসি মিথ্যাচার করে গুজব ছড়াচ্ছে।

ইন্ডি জোটকে নিশানা করে মাননীয় মোদী বলেন যে, ইন্ডি জোটের দলগুলি নারী, আদিবাসী এবং দরিদ্রদের বিরুদ্ধে একটি বিপজ্জনক আইন তৈরি করতে চায়। কংগ্রেসের যুবরাজ ঘোষণা করেছেন যে, তিনি দেশের মানুষের গয়না এবং সম্পত্তির হিসেবে নেবে এবং তা দখল করে তাদের নির্দিষ্ট ভোটব্যাংকের মধ্যে তা বিতরণ করবে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল যে, টিএমসিও এর বিরুদ্ধে একটি শব্দও বলেনি এবং নীরবে বিপজ্জনক এই এজেন্ডাকে সমর্থন করেছে। টিএমসি সরকার বাংলায় জনসাধারণের জমি দখল করে বাংলাদেশি অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের জায়গা দিচ্ছে। আর কংগ্রেস জনগণের সম্পত্তি তাদের নির্দিষ্ট ভোটব্যাংকের মধ্যে বণ্টনের কথা বলছে। উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত জনগণের সম্পত্তির ওপর কংগ্রেস ৫৫ শতাংশ কর আরোপ করার কথা ও সেই সম্পত্তি নিয়ে নেওয়ার কথা বলছে। কর্ণাটকে কংগ্রেস সরকার মুসলম্যান সম্প্রদায়কে ওবিসি সংরক্ষণের মধ্যে জায়গা দিয়েছে। কংগ্রেস এইভাবেই এসসি, এসটি এবং ওবিসিদের সাংবিধানিক অধিকারগুলিকে ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। সারা দেশে এই কর্ণাটক মডেল বাস্তবায়ন করতে চায় কংগ্রেস। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বিকশিত ভারতের স্বপ্ন পূরণ করতে এবং দেশে আবারও মোদী সরকার গঠন করতে উপস্থিত জনতার কাছে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *