BRAKING NEWS

আপডেট…মিজোরামে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২, তাঁদের প্রায় সবাই মালদহের (পশ্চিমবঙ্গ) বাসিন্দা : মন্ত্রী লালচামলিয়ানা


উদ্ধার ১৮, বাকিদের দেহ বের করতে চলছে অভিযান : এনডিআরএফ

আইজল, ২৪ আগস্ট (হি.স.) : বুধবার সকাল প্রায় ১১টা নাগাদ মিজোরামের রাজধানী আইজল থেকে প্রায় ২১ কিলোমিটার দূরে ভৈরবী (দক্ষিণ অসমের হাইলাকান্দি জেলা সীমান্ত) থেকে মিজোরামের সাইরাং সংযোগকারী কুরুং নদীর ওপর নির্মীয়মাণ রেলওয়ে সেতু ভেঙে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন ১৮ জন রেল কর্মী ও শ্রমিক। এই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২২। আজ বৃহস্পতিবার এ তথ্য দিয়েছেন রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও পুনর্বাসন মন্ত্রী পু লালচামলিয়ানা।
এদিকে এনডিআরএফ-এর প্রথম বাহিনীর ইনস্পেক্টর অজয়কুমার যাদব জানান, গতকাল সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত স্থানীয়দের সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে ১৮টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে আরও তিন-চারটি মৃতদেহ এখনও নিখোঁজ। দুঘটনার সময় থেকে ওই সকল শ্রমিক নিখোঁজ ছিলেন। তিনি জানান, গতকাল সন্ধ্যায় অন্ধকার নেমে আসায় উদ্ধারকার্য স্থগিত রাখা হয়েছিল। আজ সকাল থেকে ফের শুরু হয়েছে উদ্ধার অভিযান। উদ্ধার অভিযানে এসকেভেটর, লোহার খুঁটি কাটার যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। একটি দেহ ভারী ইস্পাতের ফাঁকে আবদ্ধ, তাকে বের করতে ব্যবহার করা হচ্ছে গ্যাস ওয়েল্ডিং মেশিন।
অন্যদিকে মন্ত্রী পু লালচামলিয়ানা আরও জানান, জেলার সাধারণ ও পুলিশ প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে উদ্ধার অভিযান চালিয়েছেন কুইক রেসপন্স টিম, এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, বিএসএফ এবং ইয়ং মিজো অ্যাসোসিয়েশনের সাইরাং শাখার কর্মকর্তারা।
তিনি জানান, নিহতদের অধিকাংশই পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলার বাসিন্দা। তাঁদের কেউ কেউ মালদহের ইংরেজবাজার ব্লক, গাজোল, কালিয়াচক প্রভৃতি এলাকার প্রত্যন্ত কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দা। তবে মন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে নিহত শ্রমিকদের নাম জানাতে অস্বীকার করে বলেন, ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে তাঁদের পরিবারবর্গকে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার খবর দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ভারতীয় রেলওয়ে বোর্ডের অন্যতম প্রথমসারির সদস্য আরএন সুঙ্কর আজ দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে ট্র্যাজেডির কারণ ও মূল্যায়ন করছেন।
প্রসঙ্গত, বিধ্বস্ত এই প্রকল্পের ১৯৬ নম্বর সেতুর পিলার পি-৪-এর উচ্চতা ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০৪ মিটার, যা নয়াদিল্লির আইকনিক কুতুব মিনারের চেয়ে ৪২ মিটার বেশি। মিজোরামের রাজধানীতে পৌঁছনোর আগে সাইরাং রেলওয়ে স্টেশন শেষ রেলপথ। ভৈরবী থেকে সাইরাং পর্যন্ত সম্পূর্ণ এই রেলপথে সব মিলিয়ে ৫৫টি বড় এবং ৮৭টি ছোট আকারের সেতু সহ মোট ১৪২টি সেতু, পাঁচটি রোড ওভারব্রিজ ও ছয়টি রোড আন্ডারব্রিজ, ২৩টি টানেল এবং চারটি স্টেশন যথাক্রমে হরতকি, কাওয়াইনপুই, মুয়ালংখাং এবং সাইরাং।
ভৈরবী-সাইরাং নয়া রেললাইন প্রকল্পটি অনুমোদন লাভ করেছিল ২০০৮-০৯ অর্থবর্ষে। গোটা প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ৫১.৩৮ কিলোমিটার। প্রকল্পটির জন্য খরচ ধরা হয়েছিল আনুমানিক ৫৫২১.৪৫ কোটি টাকা। অনুমোদন লাভ করলেও প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছিল না। ভৈরবী-সাইরাং ব্রডগেজ লাইন প্রকল্প নির্মাণের জন্য ৪৮৭.৪৭ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
রেলওয়ে দফতর সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্রে সরকার বদল হওয়ার পর সাম্প্রতিক অর্থবর্ষের বাজেটে ভৈরবী-সাইরাং রেলপ্রকল্পের জন্য প্রায় ১,৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কাজ যাতে দ্রুতগতিতে এগোতে পারে সেজন্যই মোটা অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ করেছে রেল মন্ত্রক। জানা গেছে, এবিসিআই ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড নামের নির্মাণ সংস্থা এই প্রকল্পের কাজ করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *