গুয়াহাটি, ২৫ মার্চ (হি.স.) : রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজের বিষয়টি একটি বিচার প্রক্রিয়া, এতে রাজনৈতিক কিছু নেই, বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা।
কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর অযোগ্যতার বিষয়ে তুমুল বিতর্কের মধ্যে আজ শনিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেন, গোটা ঘটনার সঙ্গে কোনও রাজনীতি নেই। কেননা, তিনি আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। রাহুল গান্ধীকে সরকার অযোগ্য ঘোষণা করেনি। আদালতের রায়ের ভিত্তিতে তাঁকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। এটি একটি বৈচারিক প্রক্রিয়া, বৈচারিক চক্র, বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মা আরও বলেন, কর্ণাটক নির্বাচনের সময় ওবিসি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে অসংসদীয়, মানহানিকর শব্দ ব্যবহার করার জন্য রাহুল গান্ধীকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। ওবিসি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্যের ফলে রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছিল। মামলা হয়েছিল অরুণাচল প্রদেশেও। কারণ বিশেষ সম্প্রদায় অরুণাচল প্রদেশেও রয়েছেন। যা-ই হোক, এটা আজ বা এক মাস আগেকার সিদ্ধান্ত নয়, পাঁচ বছর পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে বিচার প্রক্রিয়ার পর তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্ৰী হিমন্তবিশ্ব শৰ্মা আরও বলেন, কোনও রাজনৈতিক নেতা ভাষণ দিতে গিয়ে কখনও-সখনও ভুল বক্তব্য পেশ করতে পারেন। কিন্তু এর পর ক্ষমা চাওয়া হয় বা সংবাদ মাধ্যমে স্পষ্টীকরণ দিয়ে ক্ষমা চান সংশ্লিষ্ট বক্তা। কিন্তু রাহুল গান্ধী একটি জাতি সম্পর্কে কটূ অপমানজনিত মন্তব্য করার পর পাঁচ বছরের মধ্যে একবারও ক্ষমা চাননি। রাহুল গান্ধীকে ওবিসি জাতির কছে ক্ষমা চাওয়া দরকার। তিনি ভাবেন স্বাভিমান কেবল তাঁরই আছে। যে জাতি সম্পর্কে তিনি অপমানসূচক মন্তব্য করেছিলেন, সেই ওবিসি সম্প্রদায়েরও নিজস্ব স্বাভিমান আছে, তা রাহুল গান্ধীর ভুলে যাওয়া উচিত নয়। অথচ তিনি এ ব্যাপারে ভ্ৰূক্ষেপ না করে কখনও ক্ষমা চাওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি। ফলে কী হল, আদালত তাঁর বিরুদ্ধে রায়দান করে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করার পর এখন ‘যুদ্ধবিমান’ হয়ে গেছেন তিনি। তাঁর আচার-আচরণে মনে হচ্ছে যেন তিনি এখন ন্যায় ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে নেমেছেন। অতএব রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ বাতিলের ঘটনায় কোনও রাজনীতি করা হয়নি, সাংবাদিকের জিজ্ঞাসার জবাবে বলেন মুখ্যমন্ত্ৰী।
মুখ্যমন্ত্ৰী বলেন, কংগ্ৰেসের ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত নেতারা কি বলতে পারবেন, রাহুল গান্ধীর ওই মন্তব্যে তাঁরা খুশি? একজন নিৰ্দিষ্ট ব্যক্তিকে অহংকার এবং কোনও জাতির স্বাভিমান, এই দুই বিষয়ের ওপর নজর রাখা দরকার। ‘আপনি যদি আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট না হন, তা-হলে সর্বোচ্চ আদালতে যেতে পারেন।’ বলেন, ড. শর্মা।
তিনি বলেন, মানুষ যে কাজ করে তার ফল এক সময় ভোগ করে। রাহুলের ক্ষেত্ৰেও তা-ই হয়েছে। কেননা, তদানীন্তন প্ৰধানমন্ত্ৰী ড. মনমোহন সিঙের জারিকৃত এ সম্পর্কিত অর্ডিন্যান্সকে ‘ননসেন্স’ আখ্যা দিয়ে রাহুল গান্ধী নিজে ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। সুতরাং নিজের কর্মফল আজ নিজে ভুগছেন রাহুল গান্ধী, বলেন ড. শৰ্মা।
রাহুল গান্ধীকে উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্ৰী বলেন, আপনি রেলি করুন, মিটিং করুন, ভারত জোড়ো যাত্ৰা করুন, কিন্তু একটি কমিউনিটির বিরুদ্ধে এ ধরনের আপত্তিজনক মন্তব্য করা কদাপি উচিত নয়, সব সময় এ কথাটা মনে রাখা উচিত।