প্রচারমাধ্যমে আরও সতর্ক উপস্থিতি চায় আরএসএস

কলকাতা, ১৭ জানুয়ারি (হি স)। প্রচারমাধ্যমে আরও সতর্ক এবং সযত্ন উপস্থিতির লক্ষ্যে প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ

(আরএসএস)। চিরাচরিত ঘরানায় সংগঠনের সদর দফতর থেকে বেড়িয়ে এল সঙ্ঘ। কলকাতায় আসছেন সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত। ছ’দিন থাকবেন শহরে। সাংগঠনিক বৈঠকের পাশাপাশি রয়েছে প্রকাশ্য কর্মসূচিও। আর সেই সফরের সূচি ঘোষণাতেই নজরে এল বদল।

অতীতে দু’একবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছে আরএসএস। তবে সেগুলি অভেদানন্দ রোডের সদর দফতর কেশব ভবনে। এই প্রথম ডাকা হল প্রেস ক্লাবে। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে মূল বক্তা ছিলেন সঙ্ঘের সাংগঠনিক পূর্ব ক্ষেত্রের (পূর্ব ভারত) সঙ্ঘচালক (সভাপতি) অজয়কুমার নন্দী। তাঁর ডান পাশে বসলেন দক্ষিণবঙ্গের প্রচার প্রমুখ বিপ্লব রায় এবং বাঁ দিকে কলকাতার প্রচার প্রমুখ শুভ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।

বুধবার কলকাতায় আসছেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। থাকবেন আগামী সোমবার পর্যন্ত। ছ’দিনের সফরের বেশিটা জুড়েই থাকবে সাংগঠনিক বৈঠক। তার মধ্যেই বৃহস্পতিবার পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশিষ্টদের সঙ্গে কলকাতায় দেখা করবেন ভাগবত। সবটাই একান্তে। রুদ্ধদ্বার। শেষ দিন শহিদ মিনারে প্রকাশ্য কর্মসূচি।

সঙ্ঘের কাজের পদ্ধতি নিয়ে যাঁরা ওয়াকিবহাল, তাঁরা জানেন এমন দৃশ্য নতুন। তবে কি অতীতে ‘প্রচারবিমুখ সংগঠন’ বলে দাবি করা আরএসএস নিজেদের বদলাচ্ছে? রাজ্যের প্রচার প্রমুখ বিপ্লব বলেন, ‘‘সঙ্ঘ তো বরাবরই পরিবর্তনের পক্ষে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্যই প্রায় শতবর্ষ বয়স হতে চলা সঙ্ঘ এখনও সমান ভাবে প্রাসঙ্গিক এবং জীবন্ত। আমরা বিশ্বাস করি, আদর্শ অটুট রেখে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বহিরাঙ্গে বদল আনতে হয়।’’ অতীতে কখনও সাংবাদিক বৈঠক করতই না সঙ্ঘ। সম্প্রতি তা শুরু হলেও এ বার প্রেস ক্লাবে কেন, প্রশ্ন করায় অজয়কুমার বলেন, ‘‘মোহন ভাগবতজি আসছেন বলে নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে কেশব ভবন। এত মানুষকে সেখানে ডাকা সম্ভব নয়। সেই কারণেই প্রেস ক্লাব।’’

যদিও ওয়াকিবহাল মহল শুধু নিরাপত্তাই নয়, এসবের নেপথ্যে সঙ্ঘের প্রচারের প্রস্তুতিতে সতর্ক এবং সচেতন প্রয়াস দেখতে পারছেন। ভাগবত সফরের আগে হোয়াটসঅ্যাপে সঙ্ঘের প্রচার বিভাগ সংবাদমাধ্যমের জন্য একটি ‘গ্রুপ’ তৈরি করেছে। পুরনো তথ্যের ভিত্তিতে দু’দিনে তাতে তোলা হয়েছে ৯০ জনের নাম। এঁদের অনেকেই অবশ্য এখন আর কোথাও সংবাদ দেন না। সঙ্ঘের এক প্রবীণ প্রচারকের ব্যাখ্যা, ‘‘এখন সংবাদমাধ্যমের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। সঙ্ঘ ঢাকঢোল না পিটিয়ে নিজেদের কাজ নিজেদের মতো করেই করতে অভ্যস্ত। কিন্তু ইদানীং দেখা যাচ্ছে, সঠিক তথ্য না থাকায় সঙ্ঘ সম্পর্কে অনেক ভুল খবর প্রচারিত হচ্ছে। সেটা বন্ধ করতেই সঠিক তথ্য দেওয়ার এই উদ্যোগ।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *