বাজারিছড়া (অসম), ১২ ডিসেম্বর (হি.স.) : আজ সোমবার সকালে করিমগঞ্জ জেলার পাথারকান্দি বিধানসভা এলাকার বাজারিছড়া থানাধীন সলগইয়ে অসম-ত্রিপুরা ৮ নম্বর জাতীয় সড়কে সংঘটিত দুর্ঘটনায় জনৈক দিনমজুর যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। জাতীয় সড়কে যানবাহন চালকদের দৌরাত্ম্যে লাগাম ধরা এবং নিহতের পরিবারকে সরকারি সাহায্যের দাবিতে এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয়রা। নিহত যুবককে সলগইয়ের গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা জনৈক মতিন্দ্র শুক্লবৈদ্যের ছেলে মিহির শুক্লবৈদ্য (২২) বলে শনাক্ত করা হয়েছে।
ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে বাজারিছড়া থানাধীন লোয়াইরপোয়া ব্লকের সলগই নাচঘর সংলগ্ন এলাকার ৮ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে। মৃতের পরিবারের সদস্যরা জানান, আজ সকাল প্রায় সাড়ে সাতটা নাগাদ মিহির বাড়ি থেকে বের হয়ে উত্তর ত্রিপুরার কৈলাসহরে কাজে যাওয়ার উদ্দেশ্যে জাতীয় সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে গাড়ির অপেক্ষায় পায়চারি করছিলেন। তখন একটি দ্রুতগামী হোন্ডা ক্রিয়েটা মিহিরকে সজোরে ধাক্কা মেরে সড়কে ছিটকে ফেলে পালিয়ে যায়। অবশ্য কিছুক্ষণ পর পাথারকান্দিতে ঘাতক গাড়িটিকে আটক করা হয়। তবে চালক পালিয়ে গেছে।
এদিকে এই দুর্ঘটনার পর মিহির শুক্লবৈদ্যের মৃহদেহ নিয়ে পরিবারের লোকজন সহ স্থানীয়রা জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলে এই পথ অবরোধ। এতে অবরোধস্থলের উভয় পাশে শত শত গাড়ি আটকে পড়ে। পরে পাথারকান্দি থানায় ওসি সমরজিৎ বসুমতারি ও বাজারিছড়া থানার ওসি চিরঞ্জিৎকুমার বরা পরিবারের লোকজন এবং অবরোধকারীদের বুঝিয়ে জাতীয় সড়ককে অবরোধমুক্ত করার চেষ্টা করলেও চিড়ে ভিজেনি। কিছুক্ষণ পর পাথারকান্দির সার্কল অফিসার অর্পিতা দত্তমজুমদার ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতের পরিবারেরে সাথে কথা বলে তাঁর নিকটআত্মীয়কে সরকারি সহায়তার আশ্বাস প্রদান করেন। তাঁর আশ্বাসে অবরোধ মুক্ত হয় জাতীয় সড়ক।
তার পর পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য করিমগঞ্জ অসামরিক হাসপাতালে প্রেরণ করে। জানা গেছে, মৃত যুবক মিহির শুক্লবৈদ্য প্রায় ১৫ দিন আগে বিয়ে করেছেন। এমন-কি গতকাল রবিবার তিনি শ্বশুর বাড়ি থেকে দ্বিরাগমন করে বাড়ি ফিরেছিলেন। তিনি বাড়ির একমাত্র উপর্জনকারী ছেলে ছিলেন। মাতৃহারা মিহিরের বয়স্ক বাবা রয়েছেন বাড়িতে। অসহায় এই পরিবার যাতে সরকারি সাহায্য পায় সে বাপারে স্থানীয়রা জেলাশাসক এবং স্থানীয় বিধায়কের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
আজ বিকেলে পুলিশ মরদেহ ময়না তদন্তের পর পরিবারের হাতে সমঝে দেয়। এদিনই নিহত মিহির শুক্লবৈদ্যের নিজস্ব গ্রামে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।