সন্তান হারানোর ক্ষতিপূরণ হতে পারে না, যুদ্ধে সন্তান হারান মায়েদের উদ্দেশ্যে বললেন পুতিন

মস্কো, ২৬ নভেম্বর (হি.স.): কোনও কিছুই সন্তান হারানোর ক্ষতিপূরণ হতে পারে না’ বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। স্থানীয় সময় শুক্রবার রাজধানী মস্কোর কাছাকাছি অবস্থিত রাষ্ট্রীয় বাসভবনে ইউক্রেনে যুদ্ধরত ও নিহত রুশ সৈন্যদের মায়েদের একটি দলকে এ কথা বলেন তিনি।

বৈঠকে পুতিনকে ১৭ জন মায়ের সঙ্গে একটি বড় টেবিলে বসে কথা বলতে দেখা গেছে। রুশ প্রেসিডেন্ট এসময় উপস্থিত সবাইকে তাদের কষ্টগুলো ভাগ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আসুন, আমরা সবাই সবার কষ্টগুলো ভাগাভাগি করি’। সবার কথা শোনার পর পুতিন তাদের টেলিভিশন বা ইন্টারনেটের খবরকে বিশ্বাস না করার বিষয়ে সর্তক করেন। তিনি বলেন, এগুলোতে প্রচুর ভুয়া খবর, প্রতারণা এবং মিথ্যা রয়েছে।

দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, নিজ বাসভবনে মা দিবস উপলক্ষ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে অংশগ্রহণকারী রাশিয়ান সেনাদের স্ত্রী ও মায়েদের সঙ্গে এই বৈঠক করেন পুতিন।

বৈঠকে পুতিন বলেন, আমি চাই আপনারা জানুন যে, আমি ব্যক্তিগতভাবে এবং দেশের পুরো নেতৃত্ব আপনার ব্যথা ভাগ করে নিই। তিনি বলেন, আমরা বুঝি যে কোনও কিছুই সন্তান হারানোর ক্ষতিপূরণ করতে পারে না, বিশেষ করে একজন মায়ের জন্য। রুশ প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ১০ মাস ধরে চলা সংঘাতে ছেলে হারানো মায়েদের অতুলনীয় কষ্ট তিনি ভুলবেন না। উল্লেখ্য, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করার পর সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পিছিয়ে পড়ে রুশ সেনারা। এমন পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর গত সেপ্টেম্বরে পুতিন ইউক্রেনে আংশিক সেনা সমাবেশ করার ঘোষণা দেন।

তখন ক্রেমলিন জানায়, নতুন করে তিন লাখ রিজার্ভ সেনাকে ডেকে পাঠানো হবে। এ ঘোষনার পরই যুদ্ধে যাওয়া এড়াতে হাজার হাজার রাশিয়ান পুরুষ দেশ ছেড়ে পালায় এবং যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রথম মেটির জনগণের বিক্ষোভের জন্ম দেয়। এছাড়াও নয় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে ইউক্রেনে লক্ষাধিক রাশিয়ান সামরিক কর্মী নিহত বা আহত হয়েছে বলে শীর্ষ মার্কিন জেনারেলের মন্তব্যের পর এই ক্ষোভ আরও বাড়ে। এমন প্রেক্ষাপটে পুতিন সেনাদের মায়েদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছিলেন এবং তাদের কাছ থেকে শিকড়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন। বৈঠকে রুশ নেতা এক মাকে বলেছিলেন যে, তার ছেলে ‘তার লক্ষ্য অর্জন করেছে’ এবং তার ‘জীবন দেওয়াটা নিরর্থক হয়নি’। এবং তিনি প্রকাশ করেন যে, মাঝেমাধ্যেই তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ান সৈন্যদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন এবং তিনি তাদের ‘জাতীয় বীর’ হিসাবে আখ্যা দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *