BRAKING NEWS

রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের যেসব প্রকল্পগুলি চালু আছে সে সম্পর্কে ছাত্রছাত্রীদের সম্যক ধারণা থাকতে হবে : মুখ্যমন্ত্রী

ফটিকরায়, ২৬ মার্চ : দেশ ও রাজ্যের সামগ্রিক উন্নয়নে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের যেসব প্রকল্পগুলি চালু আছে সে সম্পর্কে ছাত্রছাত্রীদের সম্যক ধারণা থাকতে হবে। সেই সব প্রকল্পগুলিতে যে সব সুযোগ সুবিধা রয়েছে তার থেকে আজকের ছাত্রসমাজ লাভবান হবে। তারা ভবিষ্যতের দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে পারবে, তেমনি অন্যদেরও প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারবে। এজন্য প্রতিনিয়ত প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর টুইটার ও পেজ দেখতে হবে। ফটিকরায় আম্বেদকর মহাবিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে আজ ছাত্রছাত্রীদের সাথে মতবিনিময় ও মোটিভেশন টক-এ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে একথা বলেন। তিনি বলেন, ছাত্রছাত্রীদের আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। শিক্ষা আমাদের এই শক্তিই যুগিয়ে থাকে। যারা আত্মবিশ্বাসে বলিয়ান হয় তারাই নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই অহংকার যেন না আসে।
আম্বেদকর মহাবিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের সাথে মতবিনিময় সভায় মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তপশিলী জাতি কল্যাণমন্ত্রী ভগবান চন্দ্ৰ দাস, ঊনকোটি জিলা পরিষদের সভাধিপতি অমলেন্দু দাস, বিধায়ক সুধাংশু দাস, জেলাশাসক ইউ কে চাকমা, পুলিশ সুপার কিশোর দেববর্মা, উচ্চশিক্ষা অধিকর্তা নৃপেন্দ্র চন্দ্র শর্মা, মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. সুব্রত শর্মা প্রমুখ। ছাত্রছাত্রীদের সাথে আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, এক সময় অভিভাবকরা চাইতেন তার সন্তান সন্ততিরা যেন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা ব্যাঙ্ক অফিসার হন। এই পেশায় যেমন সম্মান আছে তেমনি রোজগারও ভালো হয়। কিন্তু সবাই তো আর ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা ব্যাঙ্ক কর্মী হতে পারে না বা সবাই সরকারি চাকরিও পান না। তখন হতাশা জন্মায়। এথেকে বেরিয়ে আসতে সরকার আগামী ২৫ বছরের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার রূপরেখা লক্ষ্য-২০৪৭ তৈরি করেছে। ফলে ত্রিপুরার ভবিষ্যৎ রূপরেখার দিকে তাকিয়ে এখন থেকেই ছাত্রছাত্রীরা তাদের ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থানের পথ বেছে নিতে পারেন। সেইভাবে শিক্ষাগতভাবে নিজেকে যোগ্য করে নিতে হবে। তবেই সবার জীবনে রোজগার আসবে। এরজন্য উচ্চাকাঙ্খা থাকা চাই।
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, সময়ের প্রতি ছাত্রছাত্রীদের অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। সময়কে বুঝে যারা চলে তাদের জীবনে সাফল্য আসতে বাধ্য। সময়ের সাথে সাথে তাল মিলিয়ে রোজগারের জন্য নিজেকে তৈরি করতে হবে। ব্যবসা বাণিজ্য করেও জীবনে সফল হওয়া যায়।
রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, ত্রিপুরা সরকার পরিচালিত স্কুলগুলি এতোদিন সিবিএসই-এর অন্তর্গত ছিল না। এনসিইআরটি সিলেবাসও চালু ছিল না। এখন তা চালু করা হয়েছে। এর ফলে সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের সুবিধা হবে। প্রসঙ্গক্রমে তিনি রাজ্যের ১২৫টি স্কুলকে বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করার ফলে শিক্ষা ব্যবস্থায় যে উন্নয়ন হবে তাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, রাজ্য সরকার মহিলাদের স্বশক্তিকরণে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। সরকারি চাকরিতেও মহিলাদের ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মহিলাদের নামে জায়গা জমি ক্রয় করলে রেজিস্ট্রেশন ফি ২ শতাংশ কম প্রদান করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি বলেন, মহিলারা রোজগারী হলে গার্হস্থ্য হিংসাও কমে যায়। মহিলাদের জন্য অত্যাধুনিক হাসপাতাল, ওয়ার্কিং হোস্টেল, উচ্চ শিক্ষায় জেন্ডার ভিত্তিক আসন সংরক্ষণ সহ আরও উন্নয়নের পরিকল্পনার বিষয়ও তিনি তুলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ত্রিপুরায় ফরেন্সিক বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠছে। ইতিমধ্যে ক্লাসও শুরু হয়ে গেছে। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব নেশার বিরুদ্ধে সরব হতে ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানান। মতবিনিময় সভার শুরুতে প্রারম্ভিক বক্তব্য রাখেন উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা নৃপেন্দ্ৰ চন্দ্ৰ শৰ্মা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *