BRAKING NEWS

রাজ্যে আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে ১২-১৪ বছর বয়সের ছেলেমেয়েদের কোভিড টিকাকরণ


আগরতলা, ১৫ মার্চ : রাজ্যে আগামী ১৬ মার্চ থেকে ১২-১৪ বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের কোভিড টিকাকরণ শুরু হবে। ১২-১৪ বছর বয়সী ছেলে-মেয়েদের কোরবিভ্যাক্স টিকা দেওয়া হবে। আজ সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের কনফারেন্স হলে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানান জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের রাজ্যের মিশন অধিকর্তা ডা. সিদ্ধার্থ শিব জয়সওবাল।

সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, ২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারী ত্রিপুরা সহ দেশব্যাপী কোভিড-১৯ টিকাকরণ কর্মসূচির সূচনা হয়। প্রথম পর্যায়ে এই টিকাকরণ কর্মসূচিতে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী কর্মীদের টিকা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের টিকাকরণ কর্মসূচিতে প্রথমসারির কর্মীদের এবং পরবর্তীতে গত ১ মার্চ, ২০২১ থেকে ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে সকল নাগরিকদের এবং ১ মে, ২০২১ থেকে গোটা দেশে ১৮ বছর থেকে ৪৪ বছর বয়স পর্যন্ত নাগরিকদের কোভিড-১৯ টিকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ৩রা জানুয়ারী, ২০২২ থেকে ১৫-১৮ বছর বয়সী ছেলে-মেয়েদের কোভিড টিকাকরণ শুরু হয় এবং ১০ জানুয়ারী থেকে স্বাস্থ্য কর্মী, প্রথমসারির কর্মী সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ষাটোর্দ্ধ নাগরিকদেরও (চিকিৎসকের পরামর্শ মত) কোভিড টিকার আগাম সুরক্ষার ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি আরও জানান, আগামী ১৬ মার্চ থেকে গোটা রাজ্যে ১২-১৪ বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের কোভিড টিকাকরণ শুরু হবে। ১৬ মার্চ রাজ্যের প্রত্যেক জেলার ২টি করে বিদ্যালয়ে ছেলেমেয়েদের কোরবিভ্যাক্স টিকা দেওয়া হবে। শুধুমাত্র কোরবিভ্যাক্স টিকা ১২-১৩ বছর বয়স এবং ১৩-১৪ বছর বয়সের ছেলেমেয়েদের দেওয়া হবে। এই টিকার প্রতি ভায়েল ২০ ডোজের হবে। এক জনের জন্য প্রতি ডোজ হবে ০.৫ এম এল। ২৮ দিনের ব্যবধানের মধ্যে দুটি ডোজ নেওয়া যাবে।

সাংবাদিক সম্মেলনে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের রাজ্যের মিশন অধিকর্তা জানান, কোরবিভ্যাক্স টিকা শুধুমাত্র ১২ বছরের ঊর্ধ্বে ছেলেমেয়েদের জন্যই অনুমোদিত হয়েছে। তাই টিকা প্রদানকারী যাচাই করবে যে টিকা নেওয়ার সময় সুবিধাভোগীর বয়স ১২ বছর পূর্ণ হয়েছে কিনা। যাঁদের জন্ম ১৫ মার্চ ২০১০ বা তার আগে তাঁরা প্রত্যেকেই ১৬ মার্চ, ২০২২-এ টিকা নিতে পারবে। এই টিকা নেওয়ার পর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, যেমন- জ্বর, গা, হাত-পা ব্যথা, বমি বমি ভাব, ক্লান্তি বোধ, চামড়ায় লাল ছোপ পড়া, টিকাস্থলে সামান্য ব্যথা অনুভূত হওয়া, লালচে দাগ পড়া ইত্যাদি। তবে এতে অভিভাবকদের দুঃচিন্তার কোনও কারণ নেই। এইগুলি টিকাকরণের সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।

সাংবাদিক সম্মেলনে মিশন অধিকর্তা জানান, টিকা নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া হচ্ছে সুবিধাভোগী পরিবারের সদস্যদের কো-উইন পোর্টালে যে একাউন্টটি আছে সেখানেই নাম রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন বা একটি নতুন মোবাইল নাম্বারের মাধ্যমে একটি নতুন একাউন্ট তৈরী করে নিজের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। সুবিধাভোগীরা টিকাকরণ কেন্দ্রে সরজমিনে গিয়েও রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন। ১২-১৪ বছরের টিকাদান প্রক্রিয়া নির্দিষ্ট টিকাকরণ সেশনের মাধ্যমে পরিচালিত হবে।

যেহেতু ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সের ছেলেমেয়ারা স্কুলে পাঠরত, তাই এই বয়সের সমস্ত যোগ্য সুবিধাভোগীদের টিকাদান নিশ্চিত করতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা হবে। যে সমস্ত ছেলেমেয়েরা সরকারি, কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদিত বিদ্যালয়, আধাসরকারি/ বেসরকারি বিদ্যালয়, মাদ্রাসায় পাঠরত সেই সমস্ত ছেলেমেয়েদের এই টিকাদান প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসার উপর জোর দেওয়া হবে। এই কোভিড টিকাকরণ প্রক্রিয়ায় একটি ছেলেমেয়ও যেন বাদ না পড়ে এবং কোভিড-১৯ এর নির্দেশিকাগুলি কঠোরভাবে আনুগত্যের সাথে পালন করা হয় সে দিকে নজর দেওয়া হবে।

সাংবাদিক সম্মেলনে মিশন অধিকর্তা ডা. সিদ্ধার্থ শিব জয়সওবাল রাজ্যে কোভিড টিকাকরণ প্রক্রিয়ার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে জানান, ১৬ জানুয়ারী ২০২১ থেকে ৩০ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত সর্বমোট ৫১ লক্ষ ২৫ হাজার ১২৯ জন নাগরিককে কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২৬ লক্ষ ৩৭ হাজার ৩১০ জন ১৮ বছর ঊর্ধ্বে নাগরিককে কোভিড-১৯ টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। এর গড় পরিসংখ্যান ১০০ শতাংশ। ২২ লক্ষ ৯ হাজার ৯০৭ জন ১৮ বছর ঊর্ধ্বে নাগরিককে কোভিড-১৯ টিকার দ্বিতীয় দেওয়া হয়েছে। এর গড় পরিসংখ্যান ৮৩.৭৯ শতাংশ। সর্বমোট ৬৭ হাজার ৬৭৭ জন স্বাস্থ্য কর্মী, প্রথমসারির কর্মী এবং বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ষাটোর্দ্ধ নাগরিকদেরও (চিকিৎসকের পরামর্শ মত) কোভিড টিকার আগাম সুরক্ষার ডোজ দেওয়া হয়েছে।তাঁর দাবি, ১ লক্ষ ৩০ হাজার ১১ জন ১৫-১৮ বছর বয়সের ছেলেমেয়েদের কোভিড- ১৯ টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। এর গড় পরিসংখ্যান ৬১.০৪ শতাংশ। ৮০ হাজার ২২৪ জন ১৫-১৮ বছর বয়সের ছেলেমেয়েদের কোভিড-১৯ টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। এর গড় পরিসংখ্যান ৬১.৭১ শতাংশ। তিনি জানান, রাজ্যে ১ লক্ষ ৩৯ হাজার কোরভিভ্যাক্স টিকার ডোজ মজুত রয়েছে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *