BRAKING NEWS

Election : ১৬ আসনের হাইলাকান্দি পুরসভায় নির্দলীয়দের দাপট, তাঁদের দখল ১০, বিজেপির দখলে ৬টি ওয়ার্ড

হাইলাকান্দি (অসম), ৯ মার্চ (হি.স.) : আজ বুধবার সকাল ঠিক আটটায় সরকারি ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে হাইলাকান্দির ১৬টি এবং লালা পুরসভার ১০টি ওয়ার্ডের ভোট গণনার কাজ শুরু হয়। ঘড়ির কাঁটা দশের ঘরে পৌঁছার আগেই ভোটগণনা সম্পন্ন হয়ে যায় দুটি পুরসভারই।

ষোলো সদস্যের হাইলাকান্দি পুরসভায় ১০টি ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন নির্দল প্রার্থীরা। শাসকদল বিজেপি জয়ী হয়েছে ৬-টি ওয়ার্ডে। গণনা পর্ব শেষে বিজয়ীদের উলুধ্বনি, হর্ষধ্বনি, আনন্দ, উন্মাদনা, উল্লাস, আতসবাজি ও ব্যান্ডপার্টিতে ভেসে যায় গোটা শহর। প্রত্যেক দল, নির্দল-বিজয়ীরা তাঁদের ওয়ার্ডে ঘুরে হোলির এক সপ্তাহ বাকি থাকতে অকাল হোলি খেলেছেন সমর্থকদের নিয়ে। করা হয়েছে অনেককে মিষ্টিমুখ। আবিরে আবিরে ছেয়ে গিয়ে নানান গানে নাচের মাধ্যমে তাঁদের প্রিয় বিজয়ী ‘নেতা’ বা ‘নেত্রী’কে ওয়ার্ডের প্রতিটি গলিপথ ঘুরিয়েছেন শুভানুধ্যায়ী ও সমর্থকরা। রাত পর্যন্ত চলে এমন উৎসবমুখর পরিবেশ।

এবার পুরভোটে শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন নির্দলায় পার্থকুমার নাথ। তিনি পেয়েছেন ১,১৬০টি ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি-র জারিনা আখতার মজুমদার পেয়েছেন ৪৭৩টি। নির্দলীয় সাধনারানি নাথ পেয়েছেন মাত্র ১৫টি ভোট।

২ নম্বর ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী। বিজেপি-র কল্যাণময় সূত্রধর ৩৩১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নির্দল পৃথ্বীরাজ শুক্লবৈদ্য পেয়েছেন ২৫৮টি ভোট। এই ওয়ার্ডে মাত্র ২২টি ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন কংগ্রেসের প্রীতম দাস‌। আরেক নির্দল রতিকান্ত দাসের ভাগ্যে জুটেছে মাত্র ৩৪টি ভোট।

৩ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন বিজেপি-র নিতুমণি নাথ। তিনি পেয়েছেন ৭৪৩ ভোট। আর তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নির্দল ঝুমা পাল পেয়েছেন ২৪৪টি ভোট।

৪ নম্বর ওয়ার্ড গিয়েছে গেরুয়া দলের দখলে। এই ওয়ার্ডে বিজেপি-র মানব চক্রবর্তী পেয়েছেন ৮৮৮ ভোট‌। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নির্দল খালেদ আহমদ লস্কর পেয়েছেন ৩৫৮টি ভোট। আরেক নির্দল দেবানন্দ দাস পেয়েছেন ৩৪৮টি ভোট।

৫ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন নির্দলীয় মুন্না দেব। তিনি পেয়েছেন ৬৪২টি ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি-র তাপস দেবনাথ পেয়েছেন ৪৪১টি এবং আরেক নির্দলীয় রাজীব বিশ্বাস পেয়েছেন ৩১২টি ভোট‌।

৬ নম্বর ওয়ার্ডটি গিয়েছে বিজেপি-র দখলে। এই ওয়ার্ডে বিজেপি-র পল্লবী দেবনাথ পেয়েছেন ৪৩৭ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নির্দল মীনা চৌধুরী পেয়েছেন ৩৩১ ভোট‌। এই ওয়ার্ডে প্রার্থী প্রক্ষেপ করেছিল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস। কংগ্রেস প্রার্থী মিতালি গোস্বামী (ভট্টাচার্য) ১১০টি ভোট লাভ করে তৃতীয় স্থান পেয়েছেন।

৭ নম্বর ওয়ার্ড গিয়েছে নির্দলের কব্জায়। জয়ী হয়েছেন শিল্পী দাস। তিনি পেয়েছেন ৭৫২টি ভোট। তিনি হারিয়েছেন বিজেপি-র জ্যোতি দেবনাথকে। জ্যোতি পেয়েছেন ৩৯৩টি ভোট। এখানে ‘নোটা’-য় পড়েছে ১১টি ভোট।

লক্ষ্মীসহর এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ড দখল করেছে নির্দল। এই ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন গতবারের নির্দলীয় বিজয়ী প্রার্থী তপন চৌধুরীর সহধর্মিণী উমা চৌধুরী। উমা পেয়েছেন ৭৩৩টি ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি-র দীপশিখা বিশ্বাস পেয়েছেন ৪৬৯টি ভোট। আরেক নির্দল মণিকা দাস পেয়েছেন ৩৯৮টি ভোট। একমাত্র এই ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়েছিল শাসকীয় জোটশরিক অগপ। কিন্তু অগপ প্রার্থী আফিয়া বেগম চৌধুরীকে মাত্র ২০টি ভোট পেয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে।

মর্যাদাপূর্ণ ওয়ার্ড ৯। মূলত এবার পুরভোটে সবার চোখ নিবদ্ধ ছিল এই ওয়ার্ডের দিকে। কারণ বিজেপি কার্যালয়, দলের একটি মণ্ডল কমিটির কার্যালয় রয়েছে এই ওয়ার্ডে। সবচেয়ে বড় কথা, এই ওয়ার্ডেই রয়েছে দলের নেতা প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম রায়ের বাসভবন। কিন্তু এই ওয়ার্ডে হারের মুখ দেখতে হয়েছে বিজেপি দলকে। এই দলের প্রার্থী অভিজিৎ দে ৪১৩টি ভোট পেয়েছেন। এখানে বিজয়ী হয়েছেন নির্দলীয় রাজু চক্রবর্তী। রাজু পেয়েছেন ৫৪৭টি ভোট। মাত্র ১৩৪ ভোটে রাজু অভিজিতকে ধরাশায়ী করেছেন।

১১ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন নির্দল আব্দুল আজিজ মাঝারভুইয়াঁ। তিনি পেয়েছেন ৬৬২ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নির্দল মাসুদ আহমেদ চৌধুরী পেয়েছেন ২৯৭ ভোট। এই ওয়ার্ডে অবশ্য বিজেপি প্রার্থী প্রক্ষেপ করেনি।

১২ নম্বর ওয়ার্ড গিয়েছে নির্দলের হাতে। জয়ী হয়েছেন শম্পা সেনগুপ্ত। গত বোর্ডের নির্দলীয় বিজয়ী চন্দন সেনগুপ্তের সহধর্মিণী শম্পা সেনগুপ্ত পেয়েছেন ৬৭১ ভোট। আর অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কামাখ্যা পুরকায়স্থের সহধর্মিণী বিজেপি প্রার্থী শুক্লা পুরকায়স্থ পেয়েছেন ৩৫২ ভোট।

১৩ নম্বর ওয়ার্ডেও জয়ী হয়েছেন নির্দল প্রার্থী। সমাজকর্মী তথা ওই ওয়ার্ডের প্রাক্তন পুর সদস্য চিন্ময় দাসের সহধর্মিণী সুপর্ণা দাস পেয়েছেন ৮৬৬ ভোট। এই ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী সাংবাদিক দীপঙ্কর দত্তের সহধর্মিণী বর্ণালী দত্ত পুরকায়স্থ পেয়েছেন ২১৮ ভোট।

১৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন বিজেপি-র রাজেশ মালাকার। প্রাক্তন পুর সদস্য রাজেশ মালাকার পেয়েছেন ৭৯০ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আরেক প্রাক্তন পুর সদস্যা নির্দল লাবি নাথ পেয়েছেন ৬৬১ ভোট। আরেক নির্দল দীপঙ্কর শর্মা পেয়েছেন ৫৭ ভোট।

১৫ নম্বর ওয়ার্ড গিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির দখলে‌‌ এখানে জয়ী হয়েছেন সাংসদ কৃপানাথ মালাহের প্রাক্তন প্রতিনিধি কল্যাণ গোস্বামী। তিনি পেয়েছেন ৫০৭ ভোট। আর তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নির্দল প্রাক্তন সেনাকর্মী বিশ্বজিৎ দেব পেয়েছেন ১৭২ ভোট।

১৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন নির্দল প্রার্থী সুমিত্রা দেবনাথ। প্রাক্তন পুর সদস্য মিঠু দেবনাথের সহধর্মিণী সুমিত্রা পেয়েছেন ৫৮৭টি ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি-র সংহিতা দেবনাথ পেয়েছেন ৩৬৩ ভোট। এখানে ‘নোটা’-য় পড়েছে ১৬টি ভোট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *