BRAKING NEWS

হাইকোর্টে তীব্র ভর্ৎসনা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে

কলকাতা, ২৮ ফেব্রুয়ারি (হি. স.) : সিবিআইকে ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার এক মামলার শুনানি চলাকালীন হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, সিবিআই তদন্তেই যদি গাফিলতি হয় তা হলে রাজ্যের সাধারণ মানুষ কার উপর ভরসা করবে।

২০১২ সালের একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে এই মামলা হয়েছিল। ধনেখালি থানায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। যা নিয়ে তোলপাড় হয় রাজ্য। দায়ের হয় জনস্বার্থ মামলা। তার প্রেক্ষিতেই ২০১৩ সালে আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, এই ঘটনার তদন্ত করবে সিবিআই। সেইমতো সিবিআই তদন্তও শুরু করে। পেশ করা হয় চার্জশিট। সেখানে পুলিশের গাফিলতির কথাও বলা হয়। কিন্তু তারপর সিবিআইয়ের তদন্তের গতিবিধি নিয়ে প্রশ্ন তোলে নিহতের পরিবার। আদালতে যায় তারা।

আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে জানান, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে নিহতের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তারপরও সিবিআই শুধুমাত্র গাফিলতির অভিযোগ এনে তদন্তের কাজ শেষ করেছে। সোমবার আদালত নির্দেশ দিয়েছে, সিবিআইয়ের দিল্লি অফিসের ডিআইজিকে এই ঘটনার অনুসন্ধান করতে হবে। সেই অনুসন্ধান রিপোর্ট আগামী ৩০ মার্চের মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে জমা দিতে হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে ধনেখালি থানায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় শেখ নাসিরুদ্দিন নামে এক ব্যক্তির। পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন এক অভিযুক্তের মৃত্যু নিয়ে উত্তাল হয় রাজ্য। এর পরই কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন আইনজীবী প্রতিম সিংহরায়। পরের বছর অর্থাৎ ২০১৩ সালে কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয় রাজ্য পুলিশ নয়, এই ঘটনার তদন্ত করবে সিবিআই। শুরু হয় সিবিআই তদন্ত।

সিবিআই তদন্ত করে ৩০৪ (এ) ধারায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে চার্জশিটও পেশ করা হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, পুলিশের গাফিলতিতেই মৃত্যু হয়েছে নাসিরুদ্দিনের। এরপরই সিবিআই তদন্তে খুশি না হয়ে নাসিরুদ্দিনের স্ত্রী মানুজা বিবি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। মানুজা বিবির আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে জানান, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে শেখ নাসিরুদ্দিনের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তা সত্ত্বেও সিবিআই শুধুমাত্র গাফিলতির অভিযোগ এনে তদন্তের কাজ শেষ করেছে।

বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এর পর বলেন, “রাজ্যের সাধারণ মানুষ যখন পুলিশের তদন্তে খুশি হতে পারছে না, তারা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার উপর ভরসা রাখতে চাইছে। এই অবস্থায় সিবিআইয়ের এই ধরনের তদন্ত আদালতকে আশ্চর্য করেছে। সিবিআইয়ের তদন্তের হাল যদি এরকম হয় তাহলে রাজ্যের সাধারণ মানুষ কার উপরে ভরসা করবে।” বিচারপতি নির্দেশ দেন, সিবিআইয়ের দিল্লি অফিসের ডিআইজি এই ঘটনার অনুসন্ধান করে আগামী ৩০ মার্চের মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে জমা দেবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *