নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৫ ডিসেম্বর৷৷ শান্তিই সমৃদ্ধি ও উন্নতি আনতে পারে৷ পবিত্র বড়দিনে শান্তির বার্তা জাতি জনজাতির মিলনস্থল ত্রিপুরার ঘরে ঘরে পৌঁছে যাক৷ আজ সদর মহকুমার মরিয়মনগরের শান্তি রাণী ক্যাথলিক চার্চে ভগবান যীশুর জন্মদিনে বড়দিনের কেক কেটে এই কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভালো কাজের মধ্য দিয়ে সহজেই সংযোগ তৈরী হয়৷ ইতিবাচক চিন্তাভাবনা করলেই জীবন সুুন্দর হয়৷ জীবনে সফলতার জন্য দরকার সঠিক পরিকল্পনা৷
মরিয়মনগরের শান্তি রাণী ক্যাথলিক চার্চে বড়দিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী ২১ জানুয়ারি রাজ্যে পূর্ণ রাজ্য দিবসের ৫০ বছর পূর্তি হতে যাচ্ছে৷ স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের সাথে সাথে ত্রিপুরায় পূর্ণ রাজ্যের সুুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপিত হবে৷ পূর্ণ রাজ্য দিবসের সুুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানেই ভিশন-২০৪৭’র রূপরেখা তুলে ধরা হবে৷ ২০২২ থেকে ২০৪৭ সাল পর্যন্ত রাজ্যের আগামী প্রজন্মকে সঠিক দিশা দেখাতে রাজ্যে কি কি উন্নয়ন কর্মসূচি রূপায়িত হবে তা এই রূপরেখাতে থাকবে৷ তিনি বলেন, প্রত্যেক অভিভাবকই চান তার সন্তান শ্রেষ্ঠ হয়ে গড়ে উঠবে৷
অভিভাবকদের স্বপকে বাস্তবায়িত করতেই আগামী ২৫ বছরের কর্মপরিকল্পনা নিয়েই ভিশন-২০৪৭’র রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দেখানো দিশাতেই রাজ্য সরকার এই কর্মসূচি গ্রহণ করেছে৷ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্যের বিকাশে ক’ষিক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে৷ ক’ষিক্ষেত্রে ক’ষকদের প্রভূত উন্নতি হয়েছে৷ রাজ্যে ক’ষকদের আয় বেড়েছে৷ ২০১৭-১৮ সালে ক’ষকদের মাসিক আয় ছিল ৬৫৮০ টাকা৷ ২০২০-২১ সালে ক’ষকের আয় বেড়ে হয়েছে ১১,০৯৩ টাকা৷ ক’ষকদের আয় দ্বিগুণ করতে রাজ্য সরকার সহায়ক মূল্যে ক’ষকদের কাছ থকে ধান ক্রয় করছে৷ চলতি বছরেও সরকার ক’ষকদের কাছ থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন ধান ক্রয় করবে৷ প্রতি কেজি ধানের জন্য ক’ষকরা পাবেন ১৯ টাকা ১৮ পয়সা৷ রাজ্যের প্রায় ২.৩৫ লক্ষ ক’ষককে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি যোজনার আওতায় আনা হয়েছে৷ এই যোজনায় ক’ষকগণ বছরে ৬ হাজার টাকা করে পাচ্ছেন৷
রাজ্যের জাতি জনজাতি অংশের জনগণের উৎপাদিত আনারস বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ত্রিপুরা থেকে প্রায় ১২১ কোটি টাকার বিভিন্ন ধরণের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে৷ রাজ্য সরকার সমাজের অন্তিম ব্যক্তির উন্নয়নে কাজ করছে৷ প্রধানমন্ত্রীর স্বপ পূরণে কাজ করছে সরকার৷ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী জানান, আগামী ৪ জানুয়ারি আগরতলায় মহারাজা বীর বিক্রম আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷
অনুষ্ঠানে বিধানসভার অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তী বলেন, করোনা অতিমারীর প্রভাব এখনো শেষ হয়ে যায়নি৷ ওমিক্রন নামে নতুন রূপে করোনা বিশ্বজড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে৷ সৌভাগ্যের কথা আমাদের রজ্যে এখনও ওমিক্রন সংক্রমণের ঘটনা ঘটেনি৷ তবে আমাদের সকলকে সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে৷ শ্রীচক্রবর্তী সকলকে করোনার বিধিনিষেধ পালন করে চলার আহ্বান জানান৷ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পূর্বোদয়া সামাজিক সংস্থার সম্পাদক নিতি দেব৷ অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ রাখেন মরিয়মনগর শান্তি রাণী ক্যাথলিক চার্চের ফাদার লিনাস৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এদিন অরুন্ধতীনগরস্থিত ইউনিয়ন ব্যাপটিস্ট চার্চেও বড়দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন৷