BRAKING NEWS

Suicide : বেতন না পাওয়ায় কৈলাশহর সাইন কম্পিউটার সংস্থার এক কর্মচারীর প্রকাশ্যে রাস্তায় আত্মহত্যার চেষ্টা

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১০ ডিসেম্বর।। মাসের পর মাস বেতন না পাওয়ায় কৈলাশহর সাইন কম্পিউটার সংস্থার এক কর্মচারীর প্রকাশ্যে রাস্তায় আত্মহত্যার চেষ্টা করে শুক্রবার। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। সাধারণ মানুষের পর খোদ সাই কম্পিউটার সংস্থার স্থানীয় স্টাফরা বেতন না পেয়ে অফিস তালাবন্ধী করে প্রকাশ্যেই অফিসের সামনে কৈলাসহর শহরের রাজপথে সুইসাইড করতে উদ্যত হয়। পথচলতি মানুষের প্রচেষ্টায় সাই কম্পিউটার সংস্থার স্থানীয় স্টাফকে সুইসাইড করা থেকে রক্ষা করে। গোটা ঘটনায় কৈলাসহরে তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে । পাশাপাশি সাই কম্পিউটার সংস্থার উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা শহরের সচেতন নাগরিকরা এবং ভর্ৎসনা করছেন। উল্লেখ্য, গত দুই বছর ধরে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক কৈলাসহর মহকুমার বিদ্যুৎ দপ্তর পরিচালনা করছে উত্তর প্রদেশ থেকে আসা সাই কম্পিউটার সংস্থা নামক প্রাইভেট সংস্থা। এই সাই কম্পিউটার সংস্থা যেদিন থেকে কৈলাসহরের বিদ্যুৎ দপ্তরের দায়িত্ব নিয়েছে সেই দিন থেকেই কৈলাসহরের বিদ্যুৎ পরিসেবা লাটে উঠেছে বলে সাধারণ মানুষের অভিমত।

শুধু অভিমতই নয়, সাই কম্পিউটার সংস্থার পরিসেবা নিয়ে গত আট ডিসেম্বর সাই কম্পিউটার সংস্থার বিরুদ্ধে প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হয়ে সাধারণ মানুষেরা কৈলাসহরের ভগবান নগর এলাকায় ধর্মনগর – কুমারঘাট রাস্তা অবরোধ করে প্রকাশ্যেই প্রায় সাত ঘন্টা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিলো। এবার নতুন করে সংযোজন সাই কম্পিউটার সংস্থার নগন্য চেহারা। সাই কম্পিউটার সংস্থায় কর্মরত স্টাফরা প্রথম থেকেই অর্থাৎ গত দুই বছর ধরেই প্রতি মাসে সময় মতো বেতন পাচ্ছে না। কোনো মাসে দশ তারিখ, কোনো মাসে পনেরো তারিখ, কোনো মাসে কুড়ি তারিখ, কোনো মাসে পঁচিশ কিংবা আটাশ তারিখ বেতন দেওয়া হচ্ছে। তাও স্টাফরা প্রতি মাসে বার বার বলার পর এবং খোঁজার পর বেতন দেওয়া হচ্ছে। এমনকি সমকাজে সমান বেতনও প্রদান করা হচ্ছে না বলে স্টাফরা জানান।একই দিনে একসঙ্গে কাজে যোগ দিয়ে লাইন ম্যানের যারা কাজ করছেন তাদের মধ্যে এক জনের সাথে আরেক জনের বেতনের মিল নেই। সাই কম্পিউটার সংস্থায় কর্মরত শুধু লাইন ম্যানই নয়, ক্লারিক্যাল স্টাফ, গ্রুপ ডি স্টাফ, ইঞ্জিনিয়ারদের মধ্যেও এক জনের সাথে আরেক জনের বেতনের মিল নেই। অথচ, একেক জন স্টাফদের দিয়ে দশ ঘন্টা কিংবা তারও অধিক সময় ধরে কাজ করাচ্ছে সাই কম্পিউটার সংস্থা।

স্থানীয় স্টাফদের মধ্যে কয়েকজনের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। স্টাফরা একত্রিত হয়ে গত নভেম্বর মাসেও উত্তর প্রদেশ থেকে আসা সাই কম্পিউটার সংস্থার উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের অফিসের ভিতরে আটকে রেখে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিলো। তাতেও স্থানীয় স্টাফদের ভাগ্যের চাকা ঘুরেনি। উল্টো বিক্ষোভ প্রদর্শন করার জন্য সাই কম্পিউটার সংস্থার উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা রাজীব সিনহা, বিক্রম দাস, পিনাক মালাকার ও রমেন দাস নামে চারজন স্থানীয় স্টাফদের কোনো কারন না দেখিয়ে সাসপেন্ড করে দিয়েছে নভেম্বর মাসের শেষ দিকে। অথচ, গত আট ডিসেম্বর সাই কম্পিউটার সংস্থার ভুল নীতির জন্য কৈলাসহরের ভগবান নগর এলাকায় রাস্তা অবরোধ চলাকালে সাধারণ মানুষের হাতে প্রকাশ্যেই মার খেয়েছিলেন সাই কম্পিউটার সংস্থার এক লাইন ম্যান এবং এক ইঞ্জিনিয়ার। শুধু তাই নয়, সংগে প্রশাসনের এক ডি.সি.এম এবং শাসক দলের এক নেতাও মার খেয়েছিলেন সাধারণ মানুষের হাতে। এত কিছুর পরও সাই কম্পিউটার সংস্থার সম্বিত ফেরেনি।

স্থানীয় স্টাফদের কেন বিনা কারণে সাসপেন্ড করা হলো এবং চলতি মাসে এখনও অব্দি স্থানীয় স্টাফদের বেতন প্রদান করা হচ্ছে না এইসব ব্যাপারে স্থানীয় স্টাফরা দশ ডিসেম্বর শুক্রবার দুপুরে কৈলাসহর শহরে অবস্থিত সাই কম্পিউটার সংস্থার অফিসে গিয়ে উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের জিজ্ঞাসা করতেই স্টাফদের অফিসের ভিতর থেকে ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়ে অফিস তালাবন্ধী করে দেয় সাই কম্পিউটার সংস্থার উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা। সংস্থার এহেন ব্যবহারে স্টাফরা উত্তেজিত হয়ে গিয়ে রাজীব সিনহা নামে স্থানীয় এক স্টাফ অফিসের সামনেই প্রকাশ্যেই চিৎকার দিয়ে কাঁদতে থাকে এবং সুইসাইড করার জন্য উদ্যত হয়। এই দৃশ্য দেখে পথচলতি মানুষ এগিয়ে এসে স্থানীয় স্টাফকে রক্ষা করে। এসব ব্যাপারে কৈলাসহর শহরে অবস্থিত উত্তর প্রদেশ থেকে আসা সাই কম্পিউটার সংস্থার উচ্চ আধিকারিকদের সাথে যোগাযোগ করলে উনারা কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হয়নি। সাই কম্পিউটার সংস্থা কর্তৃক গোটা কৈলাসহর মহকুমায় বিদ্যুৎ পরিসেবা নিয়ে এবং সাই কম্পিউটার সংস্থার উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের খারাপ অভব্য আচরণের জন্য যেকোনো দিন যেকোনো মুহুর্তে কৈলাসহরে বড় ধরনের ঘটনা এমনকি প্রান হানীকর ঘটনাও ঘটে যেতে পারে বলে অনেকের অভিমত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *