BRAKING NEWS

Tripura board result announced : ত্রিপুরায় ঘোষিত মাধ্যমিকের ফলাফল, পাশের হার বেড়ে হল ৮০.৬২ শতাংশ, ছাত্রীরা এগিয়ে

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩১ জুলাই।। করোনাকালে ত্রিপুরায় মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিল করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। কিন্ত, ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যত চিন্তায় আজ মাধ্যমিকের ফলাফল ঘোষণা দিয়েছে ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফলও ঘোষণার সিদ্ধান্ত থাকলেও, আজকের বদলে আগামীকাল তা ঘোষিত হবে। আজকের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, সার্বিক পাশের হার বেড়েছে এবং ছাত্রীরা এবছরও ছাত্রদের পেছনে ফেলে দিয়েছে। পরীক্ষা বাতিল তাই, এবছর পর্ষদ কোন মেধা তালিকা প্রকাশ করেনি। তবে, আজকের ফলাফলে অসন্তষ্ট ছাত্রছাত্রীরা লিখিত পরীক্ষার জন্য আবেদন জানাতে পারবে। ওই পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। আজ সাংবাদিক সম্মেলনে এই ফলাফলের ঘোষণা দিলেন ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সভাপতি ড. ভবতোষ সাহা। সাথে তিনি যোগ করেন, এখনই মার্কসিট দেওয়া সম্ভব নয়। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রত্যেককে মার্কসিট দেওয়া হবে।


পর্ষদ সভাপতির কথায়, করোনার প্রকোপে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে বিদ্যালয়গুলিতে পঠন-পাঠন ভীষণভাবে ব্যহত হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ ছিল, মার্চ মাসে নির্ধারিত পরীক্ষা মে মাসে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্ত, মে মাসেও পরীক্ষা নেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরী হয়নি। ফলে প্রথমে স্থগিত এবং পরে পরীক্ষা বাতিল করতে হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, পরীক্ষা বাতিল সংক্রান্ত বিষয়ে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ওই কমিটির সুপারিশ এবং পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মতামত অনলাইনে সংগ্রহ করে যাচাইয়ের ভিত্তিতে গত ১৬ মে সমস্ত পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। তাঁর দাবি, পরীক্ষা বাতিল হওয়ার পর পর্ষদ ২১ জুন দশ সদশ্যক বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছিল। ওই কমিটি ছাত্রছাত্রীদের নম্বর বন্টনে পদ্ধতি নির্ণয় করেছে।


এদিন তিনি বলেন, এবছর মাধ্যমিকে ৩৯৯৮৭ জন এবং মাদ্রাসা আলিম ৯৪ জন পরীক্ষার্থী নাম নথিভুক্ত করেছিল। তাছাড়া, কন্টিনিউ ৫০৬০ জন, কম্পার্টমেন্টাল ১৩৪১ জন এক্সটার্নাল কম্পার্টমেন্টাল ৫ জন এবং এক্সটার্নাল ২০৭ সব মিলিয়ে মাধ্যমিকে ৪৬৬০৩ জন নাম নথিভুক্ত করেছিল। এদিকে, এবছর মাধ্যমিকে পাশের ৮০.৬২ শতাংশ। অন্যান্য মিলিয়ে সাকুল্যে ৭৬.৮৮ শতাংশ পাশের হার হয়েছে। গত বছর পাশের হার ছিল ৬৯.৪৯ শতাংশ। অন্যান্য মিলিয়ে পাশের হার ছিল ৬৫.১৪ শতাংশ। তাঁর দাবি, এবছর সর্ব ক্ষেত্রে ছাত্রীরা ছাত্রদের পেছনে ফেলে দিয়েছে। তাঁর কথায়, তপশিলি জাতি শ্রেণীভুক্ত ৮০.৮১ শতাংশ এবং তপশিলি জনজাতি শ্রেণীভুক্ত ৭৫.৬২ শতাংশ পাশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে ছাত্রীদের পাশের হার এবং গ্রেড ছাত্রদের তুলনায় বেশি।


পর্ষদ সভাপতি এ-বিষয়ে বলেন, তপশিলি জাতি শ্রেণীভুক্ত ৩৯৪৭ জন ছাত্র পাশ করেছে পাশের হার ৭৮.৩৬ শতাংশ এবং ৪৫৮ জন গ্রেড পেয়েছে। সেই তুলনায় ওই শ্রেণীভুক্ত ৪১৪১ জন ছাত্রী পাশ করেছে। পাশের হার ৮৩.০৪ শতাংশ এবং ৬২৮ জন গ্রেড পেয়েছে। তেমনি তপশিলি জনজাতি ছাত্র ৫২১২ জন পাশ করেছে। পাশের হার ৭৫.০৫ শতাংশ। ২১১ জন গ্রেড পেয়েছে। সেই তুলনায় ওই শ্রেণীভুক্ত ৬২১৬ জন ছাত্রী পাশ করেছে। পাশের হার ৭৬.০৯ শতাংশ এবং ২৭৮ জন গ্রেড পেয়েছে। সাথে তিনি যোগ করেন, গত ৫ বছর ধরে টানা পরীক্ষাগুলিতে ছাত্রী সংখ্যা ছাত্রদের থেকে অনেক বেশি হচ্ছে।

এদিন তিনি বলেন, মাধ্যমিকে টিটিএএডিসি ভুক্ত বিদ্যালয়গুলিতে পাশের হার ৭৬.৬৪ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ৫৮.৫৩ শতাংশ। এছাড়া মাধ্যমিকে গোমতি জেলায় সর্বোচ্চ ৮৮.৮৪ শতাংশ পাশের হার রয়েছে। সর্বনিম্ন পাশের হার হয়েছে ধলাই জেলায় ৭৩.৩৭ শতাংশ। তিনি বলেন, মাধ্যমিকে ১০০ শতাংশ পাশ এমন স্কুলের সংখ্যা ৪২৬। গত বছর ওই সংখ্যা ছিল ৮০টি। সাথে তিনি যোগ করেন, এবছর মাধ্যমিকে ১২ জন দিব্যাঙ্গন ছাত্রছাত্রী নাম নথিভুক্ত করেছে। তবে, সংশোধনাগার থেকে মাধ্যমিকে কেউ নাম নথিভুক্ত করেনি।
পর্ষদ সভাপতির বক্তব্য, ফলাফলে অসন্তুষ্ট পরীক্ষার্থী ইচ্ছে করলে লিখিত পরীক্ষা দিতে পারবে। তাতে কোন অতিরিক্ত ফি দিতে হবে না। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর ওই পরীক্ষা নেওয়া হবে। কিন্ত, ওই পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর চূড়ান্ত হিসেবে গণ্য হবে। সাথে তিনি যোগ করেন, এই পরীক্ষায় যারা কম্পার্টমেন্টাল পাবে তারাও সেই পরীক্ষা দিতে পারবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *