BRAKING NEWS

অসমে ব্যাপক মাদক-বিরোধী অভিযান, বিভিন্ন স্থানে হানা দিয়ে বহু কোটি টাকার নেশাদ্রব্য সহ গ্ৰেফতার ২৬

গুয়াহাটি, ১৩ জুন (হি.স.) : রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে নেশা বিরোধী অভিযান তীব্র করে তুলেছে পুলিশ প্রশাসন। গত এক মাসে রাজ্যে হিমন্তবিশ্ব শর্মার নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠনের পর প্রায় আট কোটি টাকার নেশাদ্রব্য বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তবে এতে সন্তুষ্ট নন মুখ্যমন্ত্রী। তাই তিনি নেশার বিরুদ্ধে আরও কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে পুলিশ প্রশাসনকে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। এবার পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যাপক হারে নেশাদ্রব্য উদ্ধারের পাশাপাশি মোট ২৬ জন মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অনুরূপ এক খবর এসেছে দক্ষিণ শালমারা মানকাচর জেলা থেকে।

আজ ভোর প্রায় পাঁচটা নাগাদ মানকাচর থানা এলাকার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবৰ্তী ২ নং পুবের গ্রামে পুলিশ ও সিআরপিএফ যৌথ অভিযান চালিয়ে এক ড্ৰাগস কারবারির হেফাজত থেকে ৪৩২টি নেশার ট্যাবলেট বাজেয়াপ্ত করেছে। নেশা কারবারের অভিযোগে জনৈক হাবিবুল ইসলাম (২৫)-কে গ্ৰেফতার করেছে পুলিশ।

মানকাচর থানার ওসি নিতাইচন্দ্র রায় জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আজ ভোরে তাঁর এবং এসএসআই সন্তোষ কুমার বৰ্মনের নেতৃত্বে পুলিশের এক দল মানকাচরের কামাখ্যায় অবস্থিত ৪৮-এ ব্যাটালিয়নের সিআরপিএফ নিয়ে ২ নম্বর পূবের গ্রামে ড্ৰাগসের বিরুদ্ধে অভিযান চালান। গ্রামের জনৈক মধু মিঞার বছর ২৫-এর ছেলে হাবিবুল ইসলামের ঘরে হানা দিয়ে তাঁরা ৪৩২টি নেশার ট্যাবলেট বাজেয়াপ্ত করতে সক্ষম হন। থানায় নিয়ে আসা হয় হাবিবুল ইসলামকে। থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে এনডিপিএস-এর নির্দিষ্ট ধারায় তাকে গ্ৰেফতার করা হয়েছে। আগামীকাল সকালের দিকে বমাল হাবিবুলকে হাটশিঙিমারি মহকুমা বিচারবিভাগীয় আদালতে পাঠানো হবে, জানান ওসি নিতাইচন্দ্ৰ রায়।

এদিকে শোণিতপুর জেলা সদর তেজপুর এবং  চারিদুয়ার এলাকায় পৃথক দুই অভিযানে এক ড্ৰাগস কারবারি এবং দুই মাদকাসক্তকে গ্ৰেফতার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ধৃত নেশা কারবারিকে শিঙিতলির জনৈক নজরল ইসলাম এবং দুই মাদকাসক্ত যথাক্রমে সুরামণি সেনছোয়া ও দীপজ্যোতি বরুয়া বলে পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনজনের হেফাজত থেকে ১.৩ গ্ৰাম এবং ১.২৮ গ্ৰাম ব্ৰাউন সুগার, দুটি সিরিঞ্জ এবং দুটি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ৷ এছাড়া চারিদুয়ার পুলিশের ড্ৰাগস-বিরোধী অভিযানে হাবুল হক নামের আরেক নেশা কারবারি গ্ৰেফতার হয়েছে। তার কাছ থেকে পুলিশ ৩৫ মিলিগ্ৰামের ব্ৰাউন সুগার উদ্ধার করেছে পুলিশ।

অন্যদিকে ধুবড়ি জেলার বিলাসীপাড়া মহকুমার অন্তর্গত চাপর পুলিশের অভিযানে বাজেয়াপ্ত হয়েছে ১০ কেজি গাঁজা ও ১০০ বেতল বিলাতি মদ। এর সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে চারজনকে। ধৃত জামিনুর ইসলাম, বলভদ্র নাথ, চন্দ্ৰমোহন নাথ এবং দেবরাজ বৰ্মনের বিরুদ্ধে চাপর থানায় ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ২০-বি ধারায় ২৭৬/২১ নম্বরে মামলা রুজু হয়েছে।

এছাড়া ধুবড়ি জেলারই চাপর শহরের বেপারিপট্টি সংলগ্ন এক জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৪৬ শিশি নেশার কফ সিরাপ সহ আব্দুল ওয়াহাব (২৬) এবং আব্দুল সবুর (২৩) নামের দুজনকে গ্রেফতার করেছেন ওসি প্ৰণব দলে।

এদিকে গুয়াহাটি মহানগর পুলিশের জালে পড়েছে কুখ্যাত দুই ড্ৰাগস পাচারকারী। গোপন সূত্ৰের তথ্যের ভিত্তিতে পূব শরণিয়ার শঙ্করদেব পথের ৪৫ নম্বর বাড়িতে এক ভাড়াটের ঘর থেকে ৪৩ গ্রাম ড্রাগস ভরতি ৫৪টি কন্টেইনার, নগদ ১১,৬২০ টাকা, এএস ০১ ইএম ৯১৫৪ নম্বরের একটি স্কুটার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। মাদক কারবারে জড়িত আয়ুব আলি এবং বাপধন পাঠককে গ্রেফতার করেছে মহানগরের চানমারি থানার পুলিশ।

এভাবে গুয়াহাটির বোন্দা এলাকায় সাদা পোশাকে নুনমাটির এসিপি নীলোৎপল ডেকা পানিখাইতি ফাঁড়ির পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালিয়ে ড্ৰাগসের ডেরা উৎখাত করেছেন। সেই সঙ্গে ড্রাগস পাচারের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে বোন্দার মণ্টু দেউরি, বারকুচির যতীন কলিতা, বিকাশ কুমার রায় এবং বিট্টু সোনারকে আটক করা হয়েছে। অভিযানে ৪৩ গ্রাম ড্ৰাগস ও নগদ ৩৬ হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশের অভিযানকারী দল।

রাজ্য পুলিশের ড্রাগস-বিরোধী অভিযান তীব্র হওয়ায় পাচারকারীরা নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করেছে। দিন কয়েক আগে ড্রাগসের হোম ডেলিভারি করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছে সুইগি-জমাটোর ডেলিভারি বয় ব্রজেন দাসে। এদিনই একই এলাকায় অপর অভিযানে এক মহিলা সহ শুভঙ্কর সরকার নামের দুজনকে গ্রেফতার করেছে পল্টনবজার থানার পুলিশ। তাদের হেফাজত থেকে ছয় গ্রাম ব্রাউন সুগার এবং ১৩টি কন্টেনার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ধৃত তিন ড্রাগস পাচারকারীর মধ্যে ব্রজেন দাস সুইগির মাধ্যমে খাদ্যসামগ্রী ঘরে ঘরে যোগান দিত৷ তার বিরুদ্ধে বহুদিন ধরে ড্রাগস কারবারের অভিযোগ রয়েছে৷ এছাড়া ধৃত মহিলাটি পূব শরণিয়ার ভাড়াবাড়ি থেকে গত কয়েক বছর ধরে নিষিদ্ধ মাদক কারবার চালাতেন। একইভাবে বশিষ্ঠ পুলিশ এনইএফ ল কলেজ লাগোয়া এলাকা থেকে ড্রাগস সহ দুই যুবক-যুবতীকে গ্রেফাতার করা হয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *