আগরতলা, ১৫ মে (হি. স.) : কোভিড মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ত্রিপুরা সরকার। বিভিন্ন রাজ্য যখন কোভিড মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে, অক্সিজেন স্বল্পতা কোথাও কোথাও জীবন রক্ষায় অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে, ঠিক তখনই ত্রিপুরা দেখাচ্ছে অন্য দিশা। চিকিৎসা ব্যবস্থাকে কেন্দ্রীভূত না করে, রাজ্যের প্রতিটি জেলা এবং মহকুমাতে সমানভাবে উন্নত চিকিৎসা পরিকাঠামো প্রস্তুত করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত অক্সিজেন যুক্ত বেডের পাশাপাশি সমস্ত জেলায় রয়েছে ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা। রাজ্যের প্রতিটি জেলার কোভিড কেয়ার সেন্টার এবং ডেডিকেটেড কোভিড হেল্প সেন্টার গুলির প্রস্তুতি ও ব্যবস্থাপনা পরিদর্শন-র পর এ-কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। ইতিমধ্যেই ছয় জেলার চিকিৎসা কাঠামো পরিদর্শনের পর, আজ সিপাহীজলা জেলার কোভিড ব্যবস্থাপনা পরিদর্শন করেন তিনি।
এদিন প্রথমেই সিপাহীজলা জেলার লালসিংমুড়ার কোভিড কেয়ার সেন্টার পরিদর্শণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন তিনি। কথা বলেন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের সঙ্গেও। এখানেই কোভিড সংক্রমিত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে কারা আবাসিকও। এদিন চিকিৎসার পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন মুখ্যমন্ত্রী। চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমি যখন সংক্রমিত হয়েছিলাম আপনারাই আমাকে সুস্থ করেছেন। রোগীদের প্রতি আরো বেশী যত্নবান হওয়ার হওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য কর্মীদেরও নিজেদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সরকার লকডাউনের বিষয়ে কিছু ভাবেনি। এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা সরকারকে পরামর্শ দেবেন, যদি লকডাউন এর মত পরিস্থিতি হয়, সেই রিপোর্ট এর উপরে সরকার বিষয়টি বিবেচনা করবে। প্রসঙ্গত, লালসিংমুড়া কোভিড কেয়ার সেন্টারে বর্তমানে মোট শয্যা সংখ্যা ১০০, এর মধ্যে অক্সিজেন যুক্ত শয্যা সংখ্যা ৮০ টি।
সেখান থেকে বিশ্রামগঞ্জ দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের ওয়ার রুম/কল সেন্টারটি পরিদর্শন-এ যান মুখ্যমন্ত্রী। এখানে রোটেশন করে প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত ৬০ জন শিক্ষক শিক্ষিকা নিযুক্ত রয়েছেন। জেলার কোভিড চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য এখানে ফোন করলেই জানা যাবে। এরপর বিশ্রামগঞ্জ জেলা পঞ্চায়েত রিসোর্স সেন্টারে কোভিড সেন্টার পরিদর্শণ করেন তিনি। এখানে ১০০ শয্যার প্রত্যেকটিই অক্সিজেন সাপোর্টেড। জেলার কোভিড ব্যবস্থাপনা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন তিনি বলেন, একমাত্র সাবধানতাই আমাদের কোভিড সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত রাখতে পারে। কোভিড মোকাবিলায় স্বাস্থ্যকর্মীদের সব ধরনের প্রস্তুতির পাশাপাশি প্রয়োজন মোতাবেক দপ্তর এর সঙ্গে কথা বলে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
এরপর মেলাঘরস্থিত সোনামুড়া মহকুমা হাসপাতালের ডেডিকেটেড কোভিড হেল্থ সেন্টারের প্রস্তুতি পরিদর্শন করেন তিনি। এখানে অক্সিজেন যুক্ত শয্যা তৈরী হচ্ছে ২৫টি, ভেন্টিলেটর থাকবে চারটি। হাসপাতালে চত্বরেই গড়ে উঠছে অক্সিজেন প্লেন্ট। এদিন নির্মিয়মান অক্সিজেন প্লেন্টটিও ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। মেলাঘরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন, সাংসদ প্রতিমা ভৌমিক, বিধায়ক সুভাষ দাস, খাদি গ্রামোদ্যোগ বোর্ডের চেয়ারম্যান রাজীব ভট্টাচার্যী, বিজেপি সাধারণ সম্পাদিকা পাপিয়া দত্ত, সিপাহীজলার জেলাশাসক বিশ্বেশ্বর বি, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সহ অন্যান্য আধিকারিক গণ। মুখ্যমন্ত্রী সবাইকে টিকাকরণে অংশ নিয়ে কোভিড আচরণবিধি মেনে চলার আবেদন করেন। গোটা জেলার ব্যবস্থাপনা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।