BRAKING NEWS

দু-একদিনের মধ্যেই বরাকবঙ্গকে ‘অসম ভাষা গৌরব’ প্রকল্পের আর্থিক অনুদান, কৃপা-কৃষ্ণেন্দু-রাজদীপকে আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর

গুয়াহাটি, ২ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : দু-এক দিনের মধ্যেই ‘বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন’-কে ‘অসম ভাষা গৌরব’ প্রকল্পের আর্থিক অনুদান প্রদান করা হবে, আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল। পাশাপাশি চা জনজাতির ভরতি-বঞ্চিত পাঁচ মেডিক্যাল ছাত্রের সমস্যা সমাধানেরও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

অসমের স্থানীয় ভাষা রক্ষা ও সমৃদ্ধির জন্য নিয়জিত ২১টি সাহিত্য সভাকে ‘অসম ভাষা গৌরব’ প্রকল্পের আর্থিক অনুদান প্রদান করেছে রাজ্য সরকার। অথচ এই প্রকল্প-প্রাপক ২১টি সংগঠনের তালিকায় বরাক উপত্যকার কোনও বাংলাভাষী সংগঠনের স্থান হয়নি। এমন-কি বাংলা ভাষা ও বাঙালির অস্তিত্ব রক্ষায় দীর্ঘদিন থেকে নিরলসভাবে নিয়োজিত ‘বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন’-এর ভাগ্যে এই প্রকল্পের অধীনে একটি টাকাও বরাদ্দ করেনি রাজ্য। এ-নিয়ে বরাক উপত্যকার সচেতন মহলে তীব্র অসন্তোষের সৃষ্টি হয়। মুখ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী মুখেই শুধু বরাক ও বাঙালিপ্রীতি দেখান। বাস্তবে বিজেপি সরকার যে বাঙালি বিদ্বেষী, এই আওয়াজ সমগ্র বরাক জুড়ে প্রবল আকার ধারণ করতে শুরু করেছে। নির্বাচনের প্রাক-মুহূর্তে স্পর্শকাতর এই বিষয়টি নিয়ে বরাকের জনমনে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে। তা আঁচ করতে পেরে তড়িঘড়ি করে সোমবার সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়ালের সঙ্গে তাঁর দফতরে দেখা করেন করিমগঞ্জের সাংসদ কৃপানাথ মালাহ, পাথারকান্দির বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল এবং রাজদীপ গোয়ালা।

‘অসম ভাষা গৌরব’ প্রকল্পে সুবিধাভোগীদের তালিকায় বরাকের কোনও বাঙালি সংগঠনের স্থান হয়নি। এই বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর সামনে সবিস্তারে তুলে ধরেন কৃপা-কৃষ্ণেন্দু-রাজদীপ। তাঁদের কাছ থেকে বিষয়টি অবগত হয়ে, বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনকে এই প্রকল্পের আওতায় আর্থিক অনুদান দেওয়ার আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী।

মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের আশ্বাস দিয়েছেন, দু-এক দিনের মধ্যেই বরাকবঙ্গকে তাদের প্রাপ্য অনুদান তুলে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে চা জনজাতির ভরতি-বঞ্চিত পাঁচ মেডিক্যাল ছাত্রের সমস্যা সমাধানেরও আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী সনোয়াল।

উল্লেখ্য, ‘অসম ভাষা গৌরব’ প্রকল্পের অধীনে বিভিন্ন ভাষিক সাহিত্য সভাকে সরকার অনুদান দিয়েছে। কিন্তু এই প্রকল্প প্রাপকদের তালিকায় বরাকের কোনও সংগঠনের স্থান হয়নি। একে কেন্দ্র করে বরাক উপত্যকায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এর‌ই পরিপ্রেক্ষিতে গুয়াহাটিতে অবস্থানরত কৃপানাথ মালাহ, কৃষ্ণেন্দু পাল এবং রাজদীপ গোয়ালা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল বলেন, বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সম্মেলন এই প্রকল্পের অনুদান থেকে বঞ্চিত থাকার কথা নয়। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরার‌ও প্রয়োজন ছিল না। প্রকল্পের সুবিধা গ্রহণের জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বিভিন্ন সংবাদপত্রে লিখিত আবেদন জানানোর বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্তু বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন সহ রাজ্যের কোনও বাঙালি সংগঠন এই প্রকল্পের সুবিধা গ্রহণের জন্য আবেদন জানায়নি। 

তাই এর জন্য সরকারকে দোষারোপ করা বা বাঙালিদের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ উত্থাপন করা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অর্থহীন বলে মনে করেন বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল। মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি অবগত হয়ে দু-এক দিনের মধ্যেই বঙ্গসাহিত্যের আবেদন বিবেচনায় নিয়ে অনুদান রাশি তুলে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে অযথা নোংরা রাজনীতি না করে বাস্তব তথ্য যাচাই করার পরামর্শ দিয়েছেন বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *