চলতি মাসে ঝড় বৃষ্টিতে ১১৩৭ টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্থ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৫ মে৷৷ সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণে রাজ্যে ৪৩৪টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে৷ গোমতি, ঊনকোটি, খোয়াই, উত্তর এবং সিপাহীজলা জেলায় ভারী বর্ষণে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে৷ তাছাড়া ধর্মনগর, কৈলাসহর এবং পানিসাগরে ত্রাণ শিবিরে প্রচুর মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন৷ তাছাড়া, চলতি মাসে বিভিন্ন সময়ে ঝড়-বৃষ্টিতে ১১৩৭ টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে৷


রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ২৪ মে রাত থেকে শুরু বৃষ্টিতে গোমতি জেলার উদয়পুর মহকুমার কিল্লা ব্লকে ৮টি এবং মাতাবাড়ি ব্লকে ৯টি বসতঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে৷ ভারী বর্ষণে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে ঊনকোটি জেলার কৈলাসহর পুর পরিষদ এলাকা এবং কুমারঘাটে৷ কৈলাসহর পুর পরিষদ এলাকায় ভারী বর্ষণে ২৪৬টি বসতঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে৷ তাছাড়া, ৬টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে৷ সেখানে ১৬৪টি পরিবারের ৩৫৮ জনকে ঠাঁই দেওয়া হয়েছিল৷ আজ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় ত্রাণ শিবির থেকে মানুষ ফিরতে শুরু করেছেন৷ কৈলাসহর মহকুমা শাসকের রিপোর্ট অনুযায়ী বিভিন্ন এলাকায় জল নেমে গিয়েছে৷ এদিকে, মনু নদীর জলও স্বাভাবিক সীমায় বইছে৷ দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী কুমারঘাটে ৪৬টি বসতঘর আংশিক এবং একটি ঘর পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে৷


এদিকে, ভারী বর্ষণে নতুন করে ধর্মনগরে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে৷ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ধর্মনগর এলাকার বেশকিছু গ্রামে উদ্ধার কাজে নেমেছে এন ডি আর এফ-এর টিম৷ বৃহস্পতিবার রাত দুটো থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত টানা পাঁচ ঘন্টার ভারী বর্ষণের ফলে জলমগ্ণ হয়ে যায় ধর্মনগর এলাকার বেশকিছু গ্রাম, তার মধ্যে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কামেশ্বর, সিগনাল বস্তি, টঙ্গীবাড়ি এবং সোনার বাসা গ্রাম৷ সব মিলিয়ে প্রায় ৬০০ পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷


শুক্রবার ভোর রাত থেকে উদ্ধার কাজ চলছে৷ ধর্মনগর মহকুমা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রথমে এন ডি আর এফ-এর টিম চারটি বোট নিয়ে উদ্ধার কাজ চালায়৷ পরবর্তী সময় জল বাড়তে থাকায় আগরতলা থেকে আরও পাঁচটি বোট আনা হয়৷ ধর্মনগরের মহকুমা শাসক সুুবত দাস জানান, এখন পর্যন্ত চারটি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে৷ ধর্মনগর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, ধর্মনগর কলেজ, টঙ্গীবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং টঙ্গীবাড়ি অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারে ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে৷ তাতে ৩৫৬ জনকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে৷ শুক্রবার সকাল থেকেই ধর্মনগর মহকুমা শাসক সুুব্রত দাস সহ বিধানসভার উপাধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন, মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বর্ণালী গোস্বামী বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শন করছেন৷ জল কমতে থাকায় পরিস্থিতি এখন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আছে৷ দূযর্োগ মোকাবিলা দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী, কাকরি এবং জুরি নদীর জল স্বাভাবিক সীমা দিয়ে বইছে৷


এদিকে, কাঞ্চনপুর মহকুমার লালজুড়িতে ভারী বর্ষণে একটি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে৷ তাছাড়া, পানিসাগর মহকুমার পানিসাগরে ১২১টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং একটি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছিল৷ তাতে ২৫ জন আশ্রয় নিয়েছিলেন৷ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় তাঁরা ত্রাণ শিবির থেকে ফিরে গিয়েছেন৷ অন্যদিকে, সিপাহীজলা জেলায় ভারী বর্ষণে তিনটি বসতঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে৷ আবহাওয়া দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী, আগামীকাল সকাল পর্যন্ত ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *