BRAKING NEWS

কৃষি ঋণ মকুব নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ রাহুল গান্ধীর, কংগ্রেসের অনিয়মের জেরে দেশবাসী ঘুমতে পারেনি, দাবি রবিশঙ্কর প্রসাদের

নয়াদিল্লি, ১৮ ডিসেম্বর (হি.স.) : কৃষি ঋণ মকুব প্রসঙ্গে ফের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। দেশের সমস্ত কৃষকদের কৃষি ঋণ মকুব না করলে প্রধানমন্ত্রীকে ঘুমাতে দেব না। এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন কংগ্রেস সভাপতি| এর পাল্টা কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ বলেন, ওই ধরনের মন্তব্য করে রাহুল নিচু মনের পরিচয় দিয়েছেন। একসময় তাঁদের দল নানা দুর্নীতি ও অনিয়ম করে সারা দেশের লোককেই ঘুমোতে দেয়নি।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাহুল গান্ধী বলেন, এখনও পর্যন্ত কৃষকদের এক টাকা ঋণও মকুব করেননি প্রধানমন্ত্রী। কৃষকদের ঋণ মকুব না করলে প্রধানমন্ত্রীকে ঘুমাতে দেব না। সমস্ত বিরোধী দলের দাবি কৃষি ঋণ মকুব করে দিতে হবে। লড়াইটা এখন ১৫-২০ জন ব্যবসায়ীর সঙ্গে ছোট ব্যবসায়ী এবং কৃষকদের। প্রধানমন্ত্রীর নোটবন্দি করে সাধারণ মানুষের টাকা ১৫-২০ জন ব্যবসায়ীকে দিয়ে দিয়েছে। অনিল আম্বানি-সহ দেশের ১৫ জন শিল্পপতিদের অবাদে ঋণ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কৃষকদের ঋণ মকুব করে দেওয়ার জন্য বিগত চার বছরে তৎপর হননি প্রধানমন্ত্রী। নোটবন্দি বিশ্বের সর্ববৃহদ দুর্নীতি।
সোমবার মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর কৃষকদের মকুব করে দেন কমল নাথ। পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে কৃষি ঋণ মকুব করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। পাশাপাশি বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার কৃষি ঋণ মকুব করছে না বলে অভিযোগও করতে থাকেন তিনি। এমতাবস্থায় কৃষি ঋণ মকুব প্রসঙ্গে ফের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন কংগ্রেস সভাপতি| রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড়ে কংগ্রেসের জয়কে কৃষক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, গরিব মানুষের জয় বলে মনে করেন রাহুল।
মঙ্গলবার সংসদের বাইরে সাংবাদিক বৈঠকে রাহুল ফের মোদিকে আক্রমণ করে বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুটি ভারত তৈরি করেছেন। একদিকে রয়েছে গরিব মানুষ, যুব সমাজ, কৃষক এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে রয়েছে দেশের ১৫ জন শিল্পপতি।’ কৃষিঋণ নিয়ে বললেও সজ্জন কুমারের সাজা নিয়ে মন্তব্য এড়িয়েছেন রাহুল। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, \”শিখ বিরোধী হিংসা সম্পর্কে আগেই আমার অবস্থান খুব স্পষ্ট করে বলেছি। এই সাংবাদিক বৈঠকটি দেশের কৃষকদের সম্পর্কে হচ্ছে।\”
ক্ষমতায় এসেই মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড়ে দরাজ হস্ত প্রসারিত কৃষি ঋণ মকুব করলেন কংগ্রেস সরকার। সোমবার শপথ নেওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে কৃষকদের ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ মকুবের ফাইলে সই করেছিলেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ। পাশাপাশি ছত্তিশগড়ে শপথ নেওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী ভুপেশ বাঘেল ঘোষণা করেন ধানের সহায়ক মূল্য কুইন্টাল প্রতি ৮০০ টাকা বাড়াবে সরকার। সেই সঙ্গে কৃষিঋণ মকুবের সিদ্ধান্তও ঘোষণা করেছেন তিনি।
অন্যদিকে কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, রাহুল এমন এক দলের সভাপতি যাদের দুর্নীতি ও অনিয়মের জন্য একসময় সারা দেশের লোক ঘুমোতে পারেনি। তাঁর থেকে এর চেয়ে ভাল কিছু আশা করা যায় না।
এদিন রাফায়েল চুক্তি নিয়ে সংসদের দুই কক্ষে ব্যাপক হইচই হয়। উভয় কক্ষই মুলতবি হয়ে যায় দীর্ঘক্ষণের জন্য। এই প্রসঙ্গে রবিশংকর প্রসাদ বলেন, কংগ্রেস রাফায়েল নিয়ে বিতর্ক চালাতে ভয় পাচ্ছে। সেজন্য তারা সংসদের অধিবেশন চলতে দিচ্ছে না।
তাঁর মন্তব্য, আমরা চাই রাফায়েল চুক্তি নিয়ে আলোচনা হোক। কংগ্রেস পালিয়ে যাচ্ছে কেন? পালানোর দরকার কী? আমি জানি কেন কংগ্রেস বিতর্কে যোগ না দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। তারা বুঝেছে, বিতর্ক হলে কংগ্রেসের অনেক গোপন কথা জানাজানি হয়ে যাবে। রাফায়েল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কংগ্রেস যে কথাটা হজম করতে পারছে না, তা হল, দেশের সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, ওই চুক্তিতে কোথাও অনিয়ম হয়নি।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *