BRAKING NEWS

মিজো সংস্কৃতি বিনাশ করে দিয়েছে কং, লুংলেইয়ে নির্বাচনী প্রচারে এসে বলেছেন মোদী

লুংলেই-আইজল (মিজোরাম), ২৩ নভেম্বর, (হি.স.) : ৪০ আসনের মিজোরাম বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-র পালে ঝড় তুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ শুক্রবার রাজ্যের রাজধানী আইজল থেকে প্রায় ৩২ কিলোমিটার দূরে লেংপুই বিমানবন্দরে বেলা প্রায় ১১.৩০টা নাগাদ বিশেষ বিমানে অবতরণ করে করে হেলিকপ্টারে করে সোজা চলে আসেন লুংলেইয়ের লুঙলাবন ময়দানে নবনির্মিত হেলিপ্যাডে। হেলিপ্যাড থেকে এসে উঠেন নির্বাচনী সভামঞ্চে। মঞ্চে ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা রাম মাধব, মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী নংথমবাম বীরেন সিংহ, নাগাল্যান্ডের উপ-মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই পাট্টন, নর্থ-ইস্ট ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (নেডা)-এর আহ্বায়ক তথা অসমের মন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা-সহ প্রদেশ বিজেপি সভাপতি এবং লুংলেই জেলার সাত দলীয় প্রার্থী।
‘রেলি ফর চ্যাঞ্জ’ শীর্ষক বিশাল সমাবেশে মিজো ভাষায় উপস্থিত সহস্রাধিক জনতাকে শুভেচ্ছা ও আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আজ নিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২৭ বার এসেছেন তিনি। গত ডিসেম্বর মিজোরামে এসে কলাশিব জেলায় তুরিয়াল নদীবাঁধে ৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন জলবিদ্যুৎ প্রকল্প উদ্বোধন করেছেন জানিয়ে বলেন, মিজো সংস্কৃতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ। মিজো জনগোষ্ঠী তাঁর আত্মা। এর পরই প্ৰধানমন্ত্ৰী হামলা চালান কংগ্রেসের ওপর। বলেন, এত সমৃদ্ধ মিজো সংস্কৃতি বিনাশ করে দিচ্ছে কংগ্রেস। মিজোদের ভাবনা, আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি মোটেও যত্নশীল নয় শতাব্দীপ্রাচীন এই দল। কংগ্রেসের ভ্রান্ত ধারণা ও নীতির কবলে পড়ে মিজো জাতিগোষ্ঠী ভুলতে বসেছেন তাঁরা ভারতীয় সমাজের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। কংগ্ৰেস হল ভেদাভেদ সৃষ্টিকারী এবং ক্ষমতালিপ্সু একটি দল। এই দলের একটিই নীতি দেশকে জাহান্নমে পাঠাও, জাতিভেদ, এক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে অন্য সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাত বজায় থাকুক, গোল্লায় যাক রাষ্ট্রীয় ভাবনা। তাই নিজেদের সংস্কৃতি, কৃষ্টি বজায় রাখার তাগিদে কংগ্রেসকে ছুঁড়ে বিজেপিকে রাজ্যের ক্ষমতায় আনতে মিজোরামের জনসাধারণের কাছে আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী মোদী। মোদী বলেন, রাজ্যে বিজেপিকে ক্ষমতায় বসালে মিজোর সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পাবেন। কংগ্রেস মিজোদের এই অধিকার ক্ষুণ্ণ করেছে।
প্ৰধানমন্ত্ৰী বলেন, আজকের দিনে কংগ্ৰেসের কোনও প্ৰাসঙ্গিকতা নেই। তাই হাতেগোনা কয়েকটি রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে তারা। সে সব রাজ্য থেকেও মানুষ কংগ্রেসকে উৎখাত করে দিচ্ছেন। উদাত্ত ভাষণে নরেন্দ্র মোদী আরও বলেন, কংগ্রেসের কর্মসংস্কৃতি নেই। দুর্নীতি ভ্রষ্টাচারে নিমজ্জিত কংগ্রেস দেশকে পঙ্গু করে দিয়েছে। অথচ কংগ্রেসের উলটো পথে গিয়ে বিজেপি সব ধর্মের, সব সম্প্রদায়ের, সব জনগোষ্ঠীর মানুষকে নিয়ে একাত্মতার বলে কেবল দেশের বিকাশে মনোনিবেশ করে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। কেননা বিজেপি সব মানুষকে নিজের পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য বলে ভাবে। তাই-তো বিজেপির মূল মন্ত্র সব-কা সাথ সব-কা বিকাশ। অর্থাৎ সকলের সঙ্গে সকলের উন্নয়ন।
প্রসঙ্গক্রমে প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের কংগ্রেস শাসনে কেন্দ্রীয় সব জনমুখি প্রকল্পে সংঘটিত ব্যাপক দুর্নীতির তথ্যও তুলে ধরেছেন। বলেছেন, কেবল দুর্নীতির ফলেই কোনও কল্যাণমুখি প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়নি দশকের পর দশক ধরে। মিজোরামের জনসাধারণের উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার যে সব প্রকল্পে কাড়ি কাড়ি টাকা যোগান দিয়েছে, সেগুলোর একটাও বাস্তবায়িত করেনি ক্ষমতাসীন কংগ্রেস সরকার। কংগ্রেস সরকারের দৌলতেই রাজ্যের বিকাশ থমকে গেছে।
লুংলেইয়ে নির্বাচনী সভায় ভাষণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী চলে যান আইজল। হেলিকপ্টারে ফের লেংপুই বিমানবন্দরে অবতরণ করে ৩২ কিলোমিটার দূরে রাজধানী শহরে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী। সড়কপথে যাত্রার সময় সংশ্লিষ্ট এলাকার নাগরিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে আসেন আইজল ক্লাবে। এখানে রাজ্যের সুশীল সমাজের সঙ্গে মতবিনিময় করে বিকেলেই দিল্লি ফিরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *