BRAKING NEWS

ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের উপনির্বাচনে বিজেপি ও আইপিএফটির আধিপত্য, টক্কর দিল বিরোধীরাও

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩ অক্টোবর৷৷ ত্রিস্তর উপ-নির্বাচনে ৯৬ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়ে গিয়েছে বিজেপি-আইপিএফটি৷ অবশিষ্ট ৪ শতাংশ আসনে লড়াইয়েও বিজেপি-আইপিএফটি’র একাধিপত্য লক্ষ্য করা গেছে৷ তবে, বিরোধী কংগ্রেস-সিপিএমও কিছু আসনে কড়া টক্কর দিতে পেরেছে বলেই মনে হচ্ছে৷ বুধবার গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৩২টি আসনের মধ্যে ১৩০টি এবং পঞ্চয়েত সমিতির ৭টি শূণ্য আসনে উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হয়েছে৷ খোয়াই ব্লকে লক্ষ্মীনারায়নপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দুটি শূণ্য আসনে আগামী ৫ অক্টোবর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ এদিনের ফলাফলে দেখা গেছে, গ্রাম পঞ্চায়েতে শূণ্য আসনগুলিতে বিজেপি ১১৩টি, আইপিএফটি ৯টি, সিপিএম ৪টি এবং কংগ্রেস ৪টি আসনে জয়ী হয়েছে৷ তেমনি পঞ্চায়েত সমিতির শূণ্য আসনগুলিতে বিজেপি ৫টি এবং সিপিএম ২টি আসনে জয়ী হয়েছে৷ সমস্ত আসনে ভোটের শতকরা হার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে পাওয়া সম্ভব হয়নি৷ কিন্তু, ব্লক স্তরে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, ভোটের শতকরা হারে বেশ কিছু আসনে বিরোধীরা বেশ কিছু আসনে শাসকদলকে কড়া টক্কর দিয়েছে৷

গত ৩০ সেপ্ঢেম্বর ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের অবশিষ্ট ৪ শতাংশ আসনে ভোট গ্রহণ হয়েছিল৷ ১১টি ব্লকের অধীন ৫৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৩২টি শূণ্য আসনে এবং পঞ্চায়েত সমিতির ৭টি আসনে ভোট গ্রহণ হয়েছিল৷ বুধবার পঞ্চায়েত ভোটের গণনা সম্পন্ন হয়েছে৷ এদিন গণনাকে ঘিরে প্রতিটি বুথ গণনা কেন্দ্রে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল৷

রাজ্য নির্বাচন কমিশনের প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, বেশ কিছু আসনে বিরোধীরা খাতাই খুলতে পারেনি৷ চন্ডিপুর, আমবাসা, কুমারঘাট, খোয়াই, কল্যাণপুর এবং মোহনপুর সবকটি আসনে বিজেপি জয়ী হয়েছে৷ গৌরনগর ব্লকের অধীন গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬টি আসনে শাসক-বিরোধী হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে৷ বিজেপি ও কংগ্রেস ৩টি করে আসনে জয়ী হয়েছে৷ এছাড়া কলাছড়া এবং যুবরাজনগরে ১টি করে আসনে ও পানিসাগরে ২টি আসনে সিপিএম জয়ী হয়েছে৷ কংগ্রেস গৌরনগর ছাড়া শুধু মাত্র যুবরাজনগরে একটি আসনে জয়ী হয়েছে৷ বিজেপি গৌরনগর ছাড়া কলাছড়া ৭টি, কদমতলা ৯টি, যুবরাজনগর ১৩টি, চন্ডিপুর ১৮টি, আমবাসায় একমাত্র আসনটি, কুমারঘাট ৯টি, খোয়াই ১০টি, কল্যাণপুর ৩টি, মোহনপুরে একমাত্র আসনটি এবং পানিসাগরে ৩৯টি আসনে জয়ী হয়েছে৷

গ্রাম পঞ্চায়েতের শূণ্য আসনে আইপিএফটি কদমতলায় ১টি, খোয়াই ৩টি এবং কল্যাণপুর ৫টি আসনে জয়ী হয়েছে৷

এদিকে, পঞ্চায়েত সমিতির ৭টি শূণ্য আসনে বিজেপি ৫টি এবং সিপিএম ২টি আসনে জয়ী হয়েছে৷ গৌরনগরে ২টি আসনে ১টি করে আসনে বিজেপি ও সিপিএম জয়ী হয়েছে৷ তাছাড়া কদমতলায় একটি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে সিপিএম জয়ী হয়েছে৷ অবশিষ্ট কলাছড়া, যুবরাজনগর, খোয়াই এবং কল্যাণপুর পঞ্চায়েত সমিতি বিজেপির দখলে গিয়েছে৷

ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের উপনির্বাচনে মোট ৩ ৩৮৬টি শূণ্য আসনের মধ্যে বিজেপি ৩২৩৬টি এবং আইপিএফটি ১১টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে৷ এর মধ্যে গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ৩২০৭টি শূণ্য আসনের মধ্যে বিজেপি ৩০৬৪টি এবং আইপিএফটি ১১টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে৷ পঞ্চায়েত সমিতির মোট ১৬১টি শূণ্য আসনে ১৫৪টি আসনে বিজেপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে৷ তাছাড়া, জিলা পরিষদের মোট ১৮টি শূণ্য আসনে সবকটিতেই বিজেপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে৷

নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর বিজেপি প্রদেশ কমিটির বক্তব্য, ভোটে ফের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলই প্রতিফলিত হয়েছে৷ ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের ৯৬ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজেপি জয়ী হয়েছিল৷ বাকি আসনেও রাজ্যবাসী বিজেপির উপরই আস্থা রেখেছে৷

এদিন ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর সিপিআইএম ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদকমন্ডলী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার আসার পর ত্রি-স্তর পঞ্চায়েতের বিপুল সংখ্যক আসনে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের শাসক দলের দুর্বৃত্তদের দ্বরা জোর জবরদস্তি হামলা-হুমকির মাধ্যমে পদত্যাগ করানোর পর উপনির্বাচনে ৯৬ শতাংশ আসনে বিজেপি’র তথাকথিত জয় যে চূড়ান্ত প্রহসন, তা আজ কিছু আসনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী ফল ঘোষণায় এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, উপনির্বাচনে জনগণের বিজেপি বিরোধী ক্ষোভের প্রতিফলন আটকাতেই শাসক দলের কর্মীদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হতে প্ররোচিত করেছে৷ বিবৃতিতে আরো দাবি করা হয়েছে, সংক্ষিপ্ত পরিসরে হলেও নির্বাচনী ফলাফলে প্রতিফলিত জনগণের এই বিজেপি-বিরোধী মনোভাবকে সংহত করে রাজ্য সরকার গত ৭ মাসে গণতন্ত্র বিরোধী যে পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে এবং জনস্বার্থবাহী কোনও নতুন কর্মসূচী গ্রহণে ব্যর্থ হচ্ছে, তাকে গণসংগ্রামে পর্যবসিত করতে হবে৷ পার্টি মনে করে, জনগণের কাজ, খাদ্য সহ আশু জরুরি দাবি সমূহ এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে এই ফলাফলে গতি সৃষ্টি হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *