BRAKING NEWS

লেজার গবেষক তিন বিজ্ঞানী পাচ্ছেন নোবেল

স্টকহোম, ৩ অক্টোবর (হি.স.) : লেজার রশ্মি নিয়ে গবেষণায় মৌলিক অবদানের স্বীকৃতিতে ২০১৮ সালের পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হলেন তিন বিজ্ঞানী- আমেরিকার আর্থার অ্যাশকিন, ফ্রান্সের জেরার্ড ম্যুরো এবং কানাডার ডোনা স্ট্রিকল্যান্ড।’রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস’-র পক্ষ থেকে তাঁদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটি জানিয়েছে, এবার মোট পুরস্কারমূল্য ৯০ লক্ষ সুইস ক্রোনারের (১০ লক্ষ মার্কিন ডলার) অর্ধেক তিনিই পাবেন। বাকি অর্ধেক জেরার্ড এবং ডোনাকে ভাগ করে দেওয়া হবে। আগামী ১০ ডিসেম্বর স্টকহোমে আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁদের পুরস্কৃত করা হবে।

১১৭ বছরের ইতিহাসে তৃতীয় মহিলা হিসেবে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পাচ্ছেন ডোনা। অন্যদিকে, ৯৬ বছরের আর্থার প্রবীণতম নোবেলজয়ী হিসেবে রেকর্ড গড়েছেন। ১৯০৩ সালে প্রথম মহিলা হিসেবে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পেয়েছিলেন পোলিশ বংশোদ্ভূত ফরাসি বিজ্ঞানী মাদাম কুরি। ছ’দশক পরে ১৯৬৩ সালে জার্মানির মারিয়া গ্যেপার্ট মায়ার উত্তরসূরি হয়েছিলেন মাদাম কুরির। ৫৫ বছর পরে ফের কোনও মহিলা পদার্থবিদ্যায় নোবেল পাচ্ছেন। এদিন নোবেল কমিটির বার্তা পাওয়ার পরে টরেন্টোয় ডোনা বলেন, ‘আমার মনে হয়,বিশ্বের সব মহিলা পদার্থবিদের কাছেই উৎসবের দিন। এবার আমাদের আরও দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাওয়ার সময় এসেছে।’ মৌলিক গবেষণায় সাফল্যের জন্য তাঁর টিপস, ‘প্রথমেই এটিকে পাগলামি বলে ধরে নিতে হবে!’ গবেষণায় ব্যস্ত থাকার জন্য এদিন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাননি আর্থার।

অন্টারিওর ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর’ ডোনার নেতৃত্বাধীন ‘আলট্রাফাস্ট লেজার গ্রুপের উদ্ভাবিত সংক্ষিপ্ত তরঙ্গদৈর্ঘ্যের লেজার দ্বারা অপটিক্যাল পালস পদ্ধতিতে চোখের কিছু রোগের অনুসন্ধান ও চিকিৎসা সহজ হয়েছে। জেরার্ডের গবেষণার বিষয়ও উচ্চ তীব্রতা সম্পন্ন ‘অপটিক্যাল পালস’। চিকিৎসা ও শিল্পক্ষেত্রে তাঁর আবিষ্কৃত লেজার ব্যবহার হয়। ডোনা এবং জেরার্ড লেজার রশ্মির ‘পিক’ছোট করে সেগুলি আরও শক্তিশালী ও কার্যকরী করে তুলতে সমর্থ হয়েছেন। তাঁদের উদ্ভাবিত ‘চিপড পালস অ্যাপ্লিকেশন’ (সিপিএ) পদ্ধতিতে উচ্চ তীব্রতার (টেরাওয়াট) লেজার তৈরি হয়েছে। পদার্থবিদদের মতে, এর সাহায্যে ভবিষ্যতে নানা ইলেকট্রনিক যন্ত্র উন্নততর করা সম্ভব হবে।

আর্থার ‘অপটিক্যাল টুইজার্স’ নামক লেজার যন্ত্রের মৌলিক পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। ব্যাকটিরিয়া, ভাইরাসের মত অণুবীক্ষণিক কণা বা জীবকোষের কোনও ক্ষতি না-করেই এই যন্ত্রের লেজার রশ্মির সাহায্যে ধরা যাবে, নিয়ন্ত্রণ করা যায়। নোবেল কমিটি এদিন বিবৃতিতে বলেছে, ‘লেজার ফিজিক্সের পরবর্তী গবেষণার ক্ষেত্রে তিন বিজ্ঞানীর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’ ষাটের দশকে লেজার-‘সাঁড়াশি’র সাহায্যে প্রথম ব্যাকটিরিয়াকে পাকড়াও করে তার গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়েছিলেন আর্থার। পর্যায়ক্রমে সেই যন্ত্রের উৎকর্ষ বাড়াতে পেরেছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *