নয়াদিল্লি, ১১ আগস্ট (হি.স.) : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে আবারও তীব্র আক্রমণ করলেন কংগ্রেসের সাসপেন্ডেড নেতা মণিশঙ্কর আইয়ার। শনিবার রাজধানী দিল্লিতে অসহিষ্ণুতা বিরোধী একটি কর্মসূচির উদ্বোধনে গিয়ে তিনি বলেন, ‘যিনি মুসলিমদের কুকুর বলে মনে করেন তিনি যে একদিন দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন, ভাবতে পারিনি কখনও। ২০১৪ সালের আগে এটা কখনও ভাবতে পারিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০০২-র গুজরাট দাঙ্গায় মুসলিমদের প্রাণহানির ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করায় মোদী বলেছিলেন, রাস্তায় একটি কুকুর গাড়ি চাপা পড়লেও আমি ব্যাথা পাই।’ তিনি এখন দেশের প্রধানমন্ত্রী।
নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করে তিনি আরও বলেন, দাঙ্গা বিধ্বস্ত গুজরাটে মুসলিমদের ত্রাণ শিবির পরিদর্শনে যাননি গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অনেক সমালোচনার পর শেষে ঘটনার ২৪ দিন পর মুসলিমদের শিবির পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। এমনকি আহমেদাবাদের শাহ আলম মসজিদে গিয়েছেন মোদী কেবল মাত্র অটলবিহারি বাজপেয়ী সেখানে গিয়েছিলেন বলে। সেসময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন অটল বিহারি বাজপেয়ী। প্রটোকল রক্ষায় সেখানে যেতে হয়েছিল তাঁকে।
এর আগে গুজরাত ভোটের মুখে নরেন্দ্র মোদীকে ‘নীচ’ আখ্যা দিয়ে দলকে বেজায় অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন মণিশঙ্কর। অস্বস্তি এড়াতে দল তাঁকে সাসপেন্ড করে। কিন্তু মোদী নিন্দায় নাছোড় মণিশঙ্কর। পাকিস্তানের মাটিতে দাঁড়িয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘‘ভারতের অবস্থাটা জঘন্য। ১৯২৩ সালে ভি ডি সাভারকার নামে একজন তাঁর বইয়ে ‘হিন্দুত্ব’ শব্দটা আবিষ্কার করেছিলেন, শাস্ত্রে যার কোনও উল্লেখই ছিল না। দ্বিজাতি তত্ত্বের সেই প্রথম প্রবক্তাই ভারতের বর্তমান শাসকদের আদর্শগত গুরু।’’ এর পরে মণিশঙ্কর চলে আসেন মোদী ও নির্বাচনের প্রসঙ্গে। বলেন, ‘‘গত ভোটে ৭০ শতাংশ ভোটার মোদীকে ভোট দেননি। কিন্তু নিজেদের মধ্যে বিভক্ত ছিলেন বলে তাঁরা জিততেও পারেননি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ওই ৭০ শতাংশের একটি বড় অংশ একজোট হয়ে ভারতের বর্তমান বিচ্যুতির অবসান ঘটাবে।’’
গুজরাট হোক বা কর্নাটকের ভোট, বুঝি না কংগ্রেস কেন প্রতি বার পাকিস্তানকে জড়িয়ে নেয়।’’ এই সূত্রে পুরনো অভিযোগ তুলে আনেন অমিত শাহ, ‘‘গুজরাট ভোটের মুখে পাকিস্তানের কয়েকজন শীর্ষকর্তার সঙ্গে নৈশভোজ করে বিজেপিকে হারানোর চক্রান্ত হয়েছিল। কর্নাটক ভোটের আগে এখন এই টিপু আর জিন্না প্রেম। কংগ্রেসের প্রতি আবেদন, দেশের রাজনীতিতে অন্য রাষ্ট্রকে জড়াবেন না।’’ দু’দিন আগে পাকিস্তান ঠিক একই অভিযোগ তুলেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। তাদের বক্তব্য, পাকিস্তানকে না জড়িয়ে বিজেপি যেন নিজের শক্তিতে ভোটে লড়ে।
মণিশঙ্কর হিন্দুত্বের ধ্বজাধারী বিজেপি ও মোদীকে নিশানা করলেও, কংগ্রেস তাঁর পাশে দাঁড়াচ্ছে না। গুলাম নবি আজাদের কথায়, ‘‘মণিশঙ্করকে কংগ্রেস সাসপেন্ড করেছে। এবার তাঁর অবসর নিয়ে বাড়িতে বসে থাকা উচিত।’