বালুরঘাট, ৭ আগস্ট (হি.স.): তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকে বালুরঘাট হাইস্কুল ময়দানের জনসভায় বিজেপিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক ব্যানার্জী। মঙ্গলবার দুপুরে এই জনসভায় জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ হাজির হয়েছিল। সেখানেই বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমন করেন তিনি। বলেন, ‘আগে যারা ছিল মার্কবাদ, পরে তারাই হল হার্মাদ, বিজেপি-র হাওয়ায় সিপিএম ছেড়ে তারা এখন উন্মাদ, আর ২০১৯ এ তারাই হবে বরবাদ’। আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে দেশ ছাড়া করার ডাক দিলেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি অভিষেক ব্যানার্জি। তিনি বলেন, ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের পরেই সবাই বুঝতে পারবেন যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি মানুষের কতটা হৃদয়জুড়ে রয়েছেন। তৃণমূল যুব কংগ্রেসের ডাকে মঙ্গলবার বালুরঘাট হাইস্কুল মাঠে এক জনসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তীব্র ভাষায় বিজেপিকে আক্রমন করেন অভিষেক ব্যানার্জি। তৃণমূল সরকারের ৭ বছরের কাজের খতিয়ান তুলে ধরে বলেন, তৃণমূল গ্রামে গ্রামে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু করেছে। প্রতিটি গ্রামের রাস্তাঘাট তৈরী হয়েছে। বিজেপি ২ কোটি মানুষকে চাকরী দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি। তিনি বলেন, একবার নয়, ৭ বার জন্ম নিলেও আগামী লোকসভা নির্বাচনে একটি বুথ থেকেও তৃণমূলকে সরাতে পারবে না বিজেপি। আমি নিজেকে হিন্দু বলে মনে করি। ‘হিন্দুত্ব কখনও ধ্বংস শেখায় না। আমি স্বামীজীর হিন্দুত্বে বিশ্বাস করি। স্বামীজী বারবার বলেছেন, যে কোনো সমাজের উন্নয়নের জন্য স্বাধীনতার প্রয়োজন। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানে স্বাধীনতা দরকার। অথচ কেন্দ্রীয় সরকার মানুষের খাওয়া দাওয়া, কথাবার্তা, চলাফেরা সবখানে বিধান দিচ্ছে’। তিনি বলেন, তিনি যোগী আদিত্যনাথের হিন্দুধর্মে বিশ্বাস করেন না। মমতা ব্যানার্জী হিন্দুদের জন্য যা করেছেন তার শতকার পাঁচ ভাগও বিজেপি শাসিত কোনো রাজ্য করেনি। হিন্দুদের জন্য মমতা ব্যানার্জীর কাজের খতিয়ানও তুলে ধরেন এদিন। বলেন, দক্ষিণেশ্বরে স্কাই ওয়াক চালু করেছে এই সরকার। গঙ্গাসাগরের মেলা উপলক্ষ্যে গঙ্গাসাগরকে আরো আধুনিক করে গড়ে তোলা হয়েছে। ভগিনী নিবেদিতার বাড়ি সংস্কার করা হয়েছে। কলকাতার রেড রোডে প্রতিবছর দুর্গাপূজার এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন এই সরকারই প্রথম শুরু করেছে। তিনি বলেন, মমতা ব্যানার্জি পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে তার দেওয়া যাবতীয় প্রতিশ্রুতি পালন করে দেশের কাছে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। দুর্নীতি রুখতে সারদা কান্ডের নায়ক সুদীপ্ত সেনকে কোমরে দড়ি পরিয়ে কাশ্মীর থেকে কলকাতায় নিয়ে এসেছিলেন মমতা ব্যানার্জি। অথচ, বিজেপি-র আশ্রয়ে নীরব মোদি, ললিত মোদি, বিজয় মালিয়ারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুঠ করে দেশের বাড়ি সুরক্ষিত ভাবে পাড়ি দিয়েছে। অথচ,তাদের লুঠ করা টাকা উদ্ধারে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বিজেপি সরকার। রাজ্যে তৃণমূল সরকার আসার পরে কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, সবুজ সাথী সহ একাধিক প্রকল্পে আড়াই কোটি মানুষ উপকৃত হয়েছেন বলে অভিষেক ব্যানার্জি জানান। এদিনের সভায় অভিষেক ব্যানার্জি ছাড়াও রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য্য, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা, জেলার পর্যবেক্ষক সুব্রত বক্সী, বালুরঘাট লোকসভার সাংসদ অর্পিতা ঘোষ, প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বালুরঘাটের প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর চক্রবর্তী, তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র, জেলা পরিষদের সভাধিপতি ললিতা টিগ্গা সহ জেলার একাধিক তৃণমূল নেতা হাজির হয়েছিলেন। এই সমাবেশ উপলক্ষ্যে প্রতিটি এলাকার শয়ে শয়ে গাড়ি নেবার কারণে যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে ওঠে।