BRAKING NEWS

এনআরসি-র মডালিটি সর্বজনীন করায় শৌলেশ-প্রতীককে ভর্ৎসনা সুপ্রিমকোর্টের

নয়াদিল্লি, ৭ আগস্ট, (হি.স.) : অসমে প্রকাশিত জাতীয় নাগরিকপঞ্জির মডালিটি সর্বজনীন করায় রেজিস্টার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (আরজিআই) এস শৈলেশ এবং এনআরসি-র রাজ্য সমন্বয়ক প্রতীক হাজেলাকে ভর্ৎসনা করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। ভারতের সুপ্রিমকোর্টের সরাসরি তত্ত্বাবধনে অসমে চলছে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) নবায়ন-প্রক্রিয়া। তাই গত ৩০ জুলাই এনআরসি-র নবায়িত সম্পূর্ণ খসড়া প্রকাশের পর সর্বোচ্চ আদালতে বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এবং রোহিংটন ফলি নরিমানকে নিয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চে আজ অনুষ্ঠিত হয়েছে দ্বিতীয় পর্বের শুনানি।

আজকের শুনানি পর্বে এনআরসি-র মডালিটি এবং দাবি ও নিষ্পত্তি সম্পর্কে ‘সংবাদ মাধ্যমের কাছে কেন, কোন অধিকারে তথ্য প্রকাশ করেছেন, মডালিটির তথ্য প্রকাশ করতে আপনাদের কে অনুমতি দিয়েছে?’ বলে প্রশ্ন করে ভারতের রেজিস্টার জেনারেল এস শৈলেশ এবং নাগরিকপঞ্জির রাজ্য সমন্বয়ক প্রতীক হাজেলাকে ভর্ৎসনা করেছে দুই সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ। হাজেলা এবং শৈলেশকে কেবল ভর্ৎসনাই নয়, এ সম্পর্কিত আর কোনও তথ্য সংবাদ মাধ্যমে সর্বজনীন করতেও নিষেধ করেছেন দুই বিচারপতি। এ ব্যাপারে আদালত অবমাননার দায়ে দোষী বলে সাব্যস্ত করে তাঁদের গ্রেফতার করা যেতে পারে বলেও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।

এনআরসি সম্পৰ্কে সংবাদ মাধ্যমে তথ্য ফাঁস করায় আক্ষেপ ব্যক্ত করে সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, এনআরসি-র রাজ্য সমন্বয়কের কাজ সংবাদ মাধ্যমের কাছে মুখ খোলা নয়। এ ব্যাপারে ভারতের রেজিস্টার জেনারেলকেও কড়া ভাষাষ় ভর্ৎসনা করেছে আদালত। ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে তাঁদের সচেতন হওয়ার নিৰ্দেশ দিয়ে অনুমতি ছাড়া এনআরসি সম্পর্কে সংবাদ মাধ্যমের কাছে কোনও মন্তব্য দিতে সাবধান করে দিয়েছে দুই সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ। হাজেলা এবং শৈলেশকে দুই বিচারপতি বলেছেন, মনে রাখবেন, আদালতের নিৰ্দেশে এনআরসি নবায়নের কাজে আপনারা নিয়োজিত হয়েছেন। তাই খুব সাবধানে কোনও পদক্ষেপ নেবেন। সুপ্রিমকোর্ট স্পষ্ট করে দিয়ে তাঁদের বলেছে, এনআরসি-র দাবি ও আপত্তি নিষ্পত্তি সম্পৰ্কে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্ৰসিজিওর (এসওপি) নিশ্চিত করার দায়িত্ব কেবল কেন্দ্ৰীয় সরকারকে দেওয়া হয়েছে। এসওপি সম্পর্কে দুই আধিকারিকের যে মতামত ছিল তা প্ৰথমে আদালতকে জানানো প্ৰয়োজন ছিল। কিন্তু তা আজ পৰ্যন্ত আদালতে জমা দেওয়া হয়নি। এমন হলে আদালত কর্তৃক নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ যদি আদালতকেই অবগত না করে বিষয়টি সর্বজনীন করেন তা হলে সংশ্লিষ্টদের আদালত অবমাননার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে তাঁদের দুজনকে কারাগারে পাঠাতে পারে বলেও স্পষ্ট করে দিয়েছে বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এবং রোহিংটন ফলি নরিমানকে নিয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ।

অবশ্য একটি শুদ্ধ এনআরসি-র তাগিদে আদালত এ ধরনের কাজ করবে না বলে জানিয়ে ভবিষ্যতে এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে পরামৰ্শ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। এছাড়া এনআরসি-র রাজ্য সমন্বয়ক প্রতীক হাজেলা এবং আরজিআই এস শৈলেশকে অন্য কাজ ছেড়ে নাগরিকপঞ্জি নবায়নের কাজে মনোনিবেশ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ সম্পর্কে পরবৰ্তী শুনানি আগামী ১৬ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে।

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নিৰ্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে চলতি ২০১৮-এর ৩০ জুলাই নিৰ্দিষ্ট সময়ে প্ৰকাশ করা হয়েছিল জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি)-র নবায়িত সম্পূর্ণ খসড়া। এই সম্পূৰ্ণ খসড়ায় মোট ৩,২৯,৯১,৩৮৫ জন আবেদনকারীর মধ্যে বিস্তৃত পরীক্ষণের পর ২,৮৯,৮৩,৬৭৭ জনের নাম প্ৰকৃত ভারতীয় হিসেবে এনআরসিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এ থেকে বাদ পড়েছে ৪০,০৭,৭০৭ জনের নাম। অসমে এনআরসি-র নবায়নের ক্ষেত্ৰে রাজ্যে ১৯৭১ সালের ২৫ মাৰ্চের পূর্ববর্তী বাসিন্দাদের প্ৰকৃত নাগরিক বলে গণ্য করা হয়েছে। এবার বাদ পড়া এই চল্লিশোর্ধ নাগরিক তাঁরা প্রকৃত ভারতীয় কিনা সে ব্যাপারে ফের দাবি-আপত্তি জানাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *