BRAKING NEWS

স্বচ্ছ ও দক্ষ প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়তে কাজ করছে রাজ্য সরকার ঃ মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৬ মে৷৷ মুক্ত ও স্বচ্ছ বিচার ব্যবস্থা গণতন্ত্রে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে৷ রবিবার সকালে ত্রিপুরা হাইকোর্টের অডিটোরিয়াম হলে আয়োজিত ত্রিপুরা জুডিশিয়াল অফিসারদের পঞ্চম বার্ষিক কনক্লেভ এর উদ্বোধন করে এই কথাগুলি বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ তিনি বলেন, বিগতক পাঁচ বছরে ত্রিপুরা হাইকোর্ট বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিচার সংক্রান্ত রায় দিয়েছেন৷ তিনি আরও বলেন, সুষ্ঠুভাবে রাজ্য চালনার জন্য জেলা প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থার মধ্যে শুষ্ঠু সমন্বয় থাকা প্রয়োজন৷ বর্তমানে রাজ্যে ৫টি বিচার বিভাগীয় জেলা রয়েছে৷ প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের ফলে বর্তমানে রাজ্যে ৮টি জেলা রয়েছে৷ রাজ্যের প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থার মধ্যে সুষ্ঠু সমন্বয় সুনিশ্চিত করতে মুখ্যমন্ত্রী ৮টি জেলাতেই বিচার বিভাগীয় কার্যাবলী শুরু করার জন্য হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ জানান৷ এই জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা ও পরিকাঠামো তৈরীতে রাজ্য সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্য সরকার প্রশাসনে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারকে আরও ব্যাপকভাবে বর্ধিত করছে৷ এরফলে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ে স্বচ্ছতা আসবে এবং দুর্নীতি কমিয়ে আনতে সহায়ক হবে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যবাসীকে দায়িত্বশীল স্বচ্ছ ও দক্ষ প্রশাসনিক ব্যবস্থার সুবিধা দিয়ে নতুন ত্রিপুরা গড়ার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার বদ্ধপরিকর৷ এই ব্যবস্থার মাধ্যমে গড়ে উঠবে নতুন ভারত যা গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছেন আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিজি৷ এই জন্য সাধারণ মানুষের সমস্যা ও অভিযোগ শুনে সমাধান করার জন্য এরাজ্যেও সপ্তাহে তিনদিন জনতার দরবার কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হচ্ছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি তিনি অনলাইন পাবলিক গ্রীভেন্স রিড্রেস্যাল সিস্টেম চালু করেছেন যার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ অনলাইনে অভিযোগ জানাতে পারবেন৷ তিনি আরও বলেন, আরও কিছুদিনের মধ্যে এই অনলাইন পাবলিক গ্রীভেন্স সিস্টেমে এস এম এস পরিষেবা যুক্ত করা হবে যার মাধ্যমে অভিযোগকারীকে তার অভিযোগ নিষ্পত্তির প্রতিটি স্তরে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া যাবে৷ মুখ্যমন্ত্রী শ্রীদেব বলেন, রাজ্য প্রশাসন বিভিন্ন জেলা ও মহকুমা আদালতে শান্তিভঙ্গের অভিযোগ সংক্রান্ত মামলাগুলি সঠিক সময়ে নিষ্পত্তি করার জন্য জোর দিচ্ছে৷ এরফলে বিচার ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণভাবে মামলার সংখ্যা কমবে৷ সরকার অমীমাংসিত রাজস্ব মামলাগুলি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করার উপরও জোর দিচ্ছে৷ তার জন্য রাজ্য সরকার জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমা শাসককে সপ্তাহে একবার করে রেভেনিউ কোর্ট অনুষ্ঠিত করার জন্য নির্দেশ দেবে যা বর্তমানে মাসে একবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে৷
হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অজয় রাস্তোগি বলেন, বিচার ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা সমাজ থেকে দুর্নীতি হ্রাসে গুরুত্ব ভূমিকা নিতে পারে৷ তিনি প্রতিটি জেলায় একটি করে ভোক্তা আদালত চালু করার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন৷ তিনি ত্রিপুরার সংসৃকতি এবং ঐতিহ্যের ভূয়সি প্রশংসা করেন৷ এছাড়া, এদিনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন হাইকোর্টের বিচারপতি এস তলাপাত্র৷ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল এস জি চট্টোপাধ্যায়৷ ধন্যবাদ সূচক বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা জুডিশিয়াল একাডেমির ডিরেক্টর অরিন্দম পাল৷ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্য সচিব সঞ্জিব রঞ্জন, রাজ্যের অপসারপ্রাপ্ত বিচারপতি, জেলা ও মহকুমা আদালতের বিভিন্ন বিচারপতি সহ অন্যান্য জুডিশিয়াল আধিকারিকগণ৷ ত্রিপুরা জুডিশিয়াল একাডেমির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত জুডিশিয়াল অফিসার কনক্লেভের দ্বিতীয় সেশনে বিচার ব্যবস্থায় বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *