কলকাতা, ৩১ মার্চ (হি. স.): “যৌবনে যদি কেউ মার্কসবাদী না হন, তাহলে তাঁর হৃদয় বলে কিছু নেই৷ আর, যদি পরে তিনি মার্কসবাদ পরিত্যাগ না করেন, তা হলে তাঁর মস্তিষ্ক বলে কিছু নেই৷ এটা আমার কথা নয়, বলেছিলেন হেনরি কিসিঞ্জার!”
শনিবার হাসির লেখার রাজা শিবরাম চক্রবর্তীর ওপর লেখা একটি বইয়ের প্রকাশ অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায়৷ বলেন, “আমি আপাদমস্তক দক্ষিণপন্থী৷ তাই ওই কথাটার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি৷”
বইটির লেখক প্রবীণ সাংবাদিক অসীম কুমার মিত্র অনুষ্ঠানে বলেন, “শিবরাম চক্রবর্তী প্রথম জীবনে লিখেছিলেন, আমার কাছে গৌতম বুদ্ধর চেয়ে লেনিন বড় ৷ কারণ, লেনিন দু মুঠো অন্ন অভুক্তের মুখে তুলে দিয়েছিলেন৷ সেই বয়সে এটাই ছিল তাঁর উপলব্ধি৷ বিপ্লবের কথা শোষণমুক্তির কথা, এমনকি রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে তিনি লিখেছেন৷ কিন্তু পরবর্তীকালে লিখেছেন, খাদ্যের পরেও আর একটা জিনিস দরকার, যেটা লেনিন দিতে পারেননি| গুরু হেগেল কিছুটা দিতে পেরেছিলেন ৷” অসীমবাবুর এই মন্তব্যর প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়েই তথাগতবাবু ওপরের কথা বলেন ৷
চন্ডি লাহিড়ির আঁকা ‘চেনা অচেনা শিবরাম’ নামে বইটির উন্মোচনে তথাগতবাবু এ দিন বলেন, “শিবরামের লেখা এবং হাস্য়রস আমার কৈশোরের সঙ্গে জড়িয়ে ছিল”৷ অসীমবাবু শিবরামবাবুর আপাত অজানা নানা দিকের কথা আলোচনা করে ৷ প্রবীণ সাংবাদিক দেবব্রত মুখোপাধ্যায় তাঁর বাবা পাঁচুগোপাল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে শিবরাম চক্রবর্তীর কী রকম সম্পর্ক ছিল, তার নানা নমুনা দেন ৷ এক সময়ে কীভাবে শিবরাম চক্রবর্তী ‘যুগান্তর’ পত্রিকার স্বত্বাধিকারী হলেন, সেই ঘটনার সবিস্তার অবতারণা করে জানান, ঘোষেরা বন্ধ হয়ে যাওয়া ওই পত্রিকা ১৯৩৭ সালে ফের চালু করতে শিবরাম চক্রবর্তীকে ৫০০ টাকা দিয়ে স্বত্বাধিকারী হন ৷”
স্মৃতির ঝুলি থেকে শিবরাম চক্রবর্তীর নানা কথা বলেন তাঁর অতি ঘনিষ্ঠ, বিগত দিনের অভিনেত্রী সবিতা বসু৷ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রবীন সাংবাদিক বিশ্বজিত মতিলাল৷ ধন্যবাদ জানান আর এক সাংবাদিক সুজিত রায়৷