নয়াদিল্লি, ২৪ নভেম্বর (হি.স.) : পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত বিমল গুরুংকে গ্রেফতার বা আটক করা যাবে না । সেই সঙ্গে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত দার্জিলিঙে বিমল গুরুং কোনও মিছিল করতে পারবেন না বলে শুক্রবার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।
গত ২০ নভেম্বরের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিলেন বিমল গুরুং। অডিও বার্তায় জানিয়েছিলেন, শীঘ্রই সামনে আসবেন। এই পরিস্থিতিতে সোমবারের নির্দেশের বিরোধিতা করে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে জোরাল সওয়াল করল রাজ্য সরকার। সুপ্রিম কোর্টে বিমল গুরুংয়ের জামিনের তীব্র বিরোধিতা করল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার৷ এদিন সুপ্রিম কোর্টে ওই মামলার শুনানিতে রাজ্য সরকারের তরফে প্রশ্ন তোলা হল, কীসের ভিত্তিতে জামিন পেলেন ওই মোর্চা নেতা৷ একই সঙ্গে রাজ্য সরকারের তরফে এদিন সুপ্রিম কোর্টের কাছে তুলে ধরা হয় যে বিমল গুরুংয়ের বিরুদ্ধে ঠিক কী কী অভিযোগ রয়েছে৷ যদিও রাজ্যের সওয়ালের বিরোধিতা করা হয় বিমলের আইনজীবীর তরফে৷ সব শোনার পর আগামী মঙ্গলবার এই মামলার শুনানির জন্য দিন নির্ধারিত করেছে শীর্ষ আদালত৷
বিমল গুরুং সুপ্রিম কোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছেন৷ ওই আবেদনের ভিত্তিতে কয়েকদিন আগে গুরুংকে অন্তর্বর্তী জামিন দেয় শীর্ষ আদালত৷ তাদের তরফে জানানো হয়, পরবর্তী শুনানির আগে গুরুংকে গ্রেফতার তো করা যাবেই না৷ এমনকী তাঁকে ধরতে কোনও অভিযান করা যাবে না৷ এর পরই রাজ্যের তরফে বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তোলা হয়৷ রাজ্যের তরফে অভিযোগ করা হয় যে, সুপ্রিম কোর্ট তাদের বক্তব্য না শুনেই এই নির্দেশ দিয়েছে৷ তাই এদিন সুপ্রিম কোর্টে পাল্টা আবেদন করা হয় রাজ্যের তরফে৷
শুক্রবার রাজ্যের আবেদনের ভিত্তিতেই শুনানি হয়৷ সেই শুনানিতেই সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বলেন, বিমল গুরুঙের বিরুদ্ধে ৭৭টি মামলা রয়েছে। কয়েকটি মামলায় বারবার সমন করা সত্ত্বেও তিনি আসেনি। এসআই খুন, পুলিশের গাড়ি পোড়ানোর মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে গুরুঙের বিরুদ্ধে। তাঁর বাড়িতে বিস্ফোরক তৈরির কারখানারও হদিশ পাওয়া গিয়েছে। মিলেছে একে-৪৭, জিলেটিন স্টিক। এখন বিমল গুরুং পলাতক। এক্ষেত্রে অন্তবর্তী জামিন হয় না।
বিচারপতিরা বলেন, এত মামলার কথা তাঁরা জানতেন না। গুরুঙের আইনজীবী পাল্টা সওয়ালে বলেন, এ সব রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।
রাজ্য সরকারি আইনজীবী তখন বলেন, আন্দোলনে শিশুদের ব্যবহার করেছেন বিমল গুরুং। শিশুসুরক্ষা কমিশনও তাঁকে তলব করেছে, কিন্তু হাজির হননি।
গুরুঙের আইনজীবী দাবি করেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার যেহেতু গোর্খাল্যান্ডের বিরুদ্ধে, তাই বিমল গুরুঙের বিরুদ্ধে এত মামলা। গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের ভাঙার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা চাই, সিবিআই বা অন্য কোনও রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করা হোক। রাজ্য সরকারের তোলা অভিযোগগুলির প্রেক্ষিতে হলফনামা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক।
সর্বোচ্চ আদালত জানিয়ে দেয়, পরবর্তী শুনানি মঙ্গলবার। তার আগে হলফনামা জমা দিতে হবে।
এদিকে এদিনই বিমল গুরুঙের বিরুদ্ধে নিহত এসআই অমিতাভ মালিকের মা সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা করেছেন। তাঁর দাবি, গুরুঙের কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে গোটা পরিবার।