BRAKING NEWS

জানুয়ারিতে ব্রিগেডে সভা করতে চায় রাজ্য বি জে পি

কলকাতা, ২১ নভেম্বর ( হি.স.): সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন । তার আগে শাসকদলের সঙ্গে সরাসরি টক্কর দিতে জানুয়ারিতে ব্রিগেডে সভা করতে চায় রাজ্য বি জে পি । দলীয় কর্মীদের মনোবল আরও মজবুত করতে ও দলের সাংগঠনিক ভিত সুদৃঢ় করতে সভার প্রধান বক্তা হিসাবে অমিত শাহকেই পেতে চায় রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। এবিষয়ে ইতিমধ্যে নয়া দিল্লিকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বঙ্গ বিজেপির তরফে । বি জে পি-তে সদ্য যোগ দেওয়া মুকুল রায় রানি রাসমনি রোডের সভায় বলেছিলেন, তিনি সেদিন তৃণমূলের প্রথম দফার মুখোশ খুললেন, দ্বিতীয় দফার মুখোশ খুলবেন ব্রিগেডের সমাবেশ করে ।
২০১৪ সালে, লোকসভা নির্বাচনের আগে ব্রিগেডে সভা করেছিলেন মোদী । সেই নির্বাচনে রাজ্যে বি জে পি-র উত্থান ছিল চোখে পড়ার মতো । পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তাই ফের একবার ব্রিগেড থেকেই ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করতে চায় বি জে পি নেতৃত্ব । আর এবার সেনাপতি হিসাবে তাদের পছন্দ অমিত শাহ ।
চলতি মাসে রানি রাসমণি রোডের সমাবেশে অক্সিজেন পেয়েছে রাজ্য বি জে পি । সেদিনের জনসমাগম বঙ্গ বি জে পি-র আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে অনেকটাই কাজ করেছে বলে মনে করেছে ওয়াকিফহাল মহল । শাসক তৃণমূলের সামনে তাই শক্তি জাহির করতে সব থেকে বড় ময়দানকেই ব্যবহার করতে চাইছে গেরুয়া শিবির । বি জে পি সূত্রে খবর, ওই সমাবেশে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারের সুর বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি তৃণমূল থেকে বি জে পি-তে যোগদানে ইচ্ছুকদের বার্তা দিতে চায় বি জে পি নেতৃত্ব ।
মাথার উপর মোদী-অমিত শাহর আশীর্বাদের হাত থাকলে কিছুতেই বেগ পেতে হয় না । বি জে পি কার্যালয়ে মুকুল রায়ের আলাদা ঘর প্রাপ্তি ঘিরে এই কথাটা এখন হাড়েহাড়ে বুঝেছেন মুকুলকে আলাদা ঘর দিতে নারাজ রাজ্য বি জে পি নেতারা । তৃণমূল ছেড়ে পদ্ম শিবিরে মুকুল আশ্রয় পেয়েছেন নভেম্বরের ৩ তারিখ । আর গতকালই বি জে পি-র রাজ্য দফতরে নিজের জন্য আলাদা ঘর পেলেন মুকুল রায় । ৬ মুরলীধর সেন লেনে রাজ্য বিজেপির কার্যালয় । সেই বাড়িরই দোতলায় অফিস সেক্রেটারির ঘরের পাশের ঘরটি বরাদ্দ হল তৃণমূল ছেড়ে আসা নেতার জন্য । আর এই ঘটনাকে রাজ্য বি জে পি-তে ‘বেনজির’ বলছেন দলেরই একাংশ । কোন বিশেষ পদে না থাকায় মুকুলকে প্রথমটায় আলাদা ঘর দিতে রাজি হয়নি রাজ্য নেতৃত্বের একটা অংশ । কিন্তু ‘কাজের ছেলে’ মুকুলের জন্য অবিলম্বে ঘরের ব্যবস্থা করতে হবে, এমন ধমকই আসে দিল্লি থেকে । আর তারপরই দ্রুত ঘর পেলেন মুকুল । ফলে এখন তাকে ব্রিগেডের সমাবেশ সফল করার প্রচেষ্টায় নামতে হবে ।
প্রসঙ্গত বলা যায়, মুকুল রায়ের বি জে পি-তে যোগদানের বিষয়ে ঘোর আপত্তি রয়েছে রাজ্য বি জে পির একাধিক নেতার, এমনটাই শোনা যাচ্ছিল । সে জন্যই নাকি মুকুলকে দলে নিতে দেরি হচ্ছিল বি জে পি-র । কিন্তু সে সব বাধা পেরিয়ে কৈলাশ বিজয়বর্গীয়র হাত ধরে পদ্ম শিবিরে প্রবেশ করেছেন মুকুল । দলে আসার পরপরই রানি রাসমনি রোডের সভায় ‘লোক এনে’ এবং মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর ভাইপোর প্রতি আঘাত হেনে নতুন দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বাহবা কুড়িয়েছেন মুকুল রায় । আর এতেই নাকি কেল্লাফতে । দিন কয়েক আগে গুজরাটে গিয়েছিলেন ‘কেন্দ্রীয় নেতা’ মুকুল । যাত্রাপথে আমেদাবাদ বিমানবন্দরে দেখা হয়ে যায় অমিত শাহর সঙ্গে । সূত্রে খবর, অমিতের কানেও গিয়েছে রানি রাসমনির সভায় ‘মুকুল ম্যাজিকে’র কথা । আর তাই দেখা হতেই মুকুলের পিঠও চাপড়ে দিয়েছেন বি জে পি-র কেন্দ্রীয় সভাপতি । এসবের মধ্যেই দলীয় কার্যালয়ে ঘর পেলেন মুকুল রায় । ফলে, মুকুলের এই ঘর প্রাপ্তিকে ‘ইঙ্গিতপূর্ণ’ বলে মনে করছেন দলের একাংশ ।
এমনিতে বিশেষ পদাধিকারী না হলে আলাদা ঘর পাওয়ার নিয়ম নেই বি জে পি-তে। বর্তমানে বি জে পি-র রাজ্য দফতরে আলাদা ঘর রয়েছে কেবল বর্তমান সভাপতি দিলীপ ঘোষ, প্রাক্তন সভাপতি তথা দলের বর্তমান কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাহুল সিনহার এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক (অর্গানাইজেশন)-এর । আর এরপর ঘর পেলেন কেবল মুকুল, তাও কোনও পদে না থেকেই । ফলে অনেকেই বলছেন, ‘নিজের ‘ক্ষমতা প্রমাণ করে ঘর অর্জন করলেন’ পোড় খাওয়া রাজনীতিক মুকুল রায় । এখন তাকে ব্রিগেডে তার বাকি ক্যারিশমা দেখানোর পালা’ ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *