গুরুগ্রাম, ২১ নভেম্বর (হি.স.) : ডেঙ্গির চিকিৎসা করাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল সাত বছরের আদ্যা সিং। কিন্তু বাঁচানো যায়নি তাকে । ১৫ দিনে ৬৬০ সিরিঞ্জ ও ২৭০০টি গ্লাভসের খরচ দেখিয়ে হাসপাতাল তার বাবা, মাকে প্রায় ১৮ লক্ষ টাকার বিল ধরিয়েছে। তা নিয়ে তুলকালাম গুরগাঁওয়ে। ঘটনার পূর্ণ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডা।
ডেঙ্গিতে আক্রান্ত সাত বছরের নাবালিকা আধ্যা সিং ১৫ দিন ভর্তি ছিল গুরগাঁওয়ের ফর্টিস মেমোরিয়াল রিসার্চ ইনস্টিটিউটে। তাঁকে রাখা হয় আইসিইউতে। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ফর্টিস থেকে তাঁকে রোকল্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরেই মারা যায় আধ্যা। এরপরই ফর্টিস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মেয়েটির পরিবারের কাছে বকেয়া বাবদ ১৬ লাখ টাকার বিল পাঠায়। যা দেখে তো মাথায় হাত মধ্যবিত্ত পরিবারটির। অগত্যা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। স্বাস্থমন্ত্রী জেপি নাড্ডা ঘটনাটি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। ফর্টিস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিন্তু পরিবারটির অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, মেয়েটিকে সুস্থ করে তোলার যাবতীয় চেষ্টা করা হয়েছিল। সমস্ত নিয়ম মেনেই বিল পাঠানো হয়েছে। যার পরিমাণ ১৫ লক্ষ ৭৯ হাজার টাকা। গত চারদিন ধরে টুইটারে এই খবরটি নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন অনেকেই। যা দেখে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক নড়েচড়ে বসেছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে তারা।
মেয়েটির বাবা জয়ন্ত সিং ফর্টিসের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন। মেয়ের চিকিৎসার জন্য ৫ লাখ টাকার লোন তুলেছিলেন জয়ন্ত। জমানো টাকাও শেষ হয়েছে। তার পরেও হাসপাতাল বকেয়া বাবদ ১৬ লাখ দাবি করছে। দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী আধ্যা গত ২৭ আগস্ট জ্বর নিয়ে রকল্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি হয়। দু’দিন পর জানা যায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত সে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তখন ফর্টিস হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে আধ্যাকে। কথামতো ৩১ আগস্ট আধ্যাকে ভর্তি করা হয় ফর্টিসে। টানা ১৫ দিন আধ্যাকে রাখা হয় আইসিইউতে। কিন্তু অবস্থার উন্নতি হয়নি। ওইসময় নানাভাবে পরিবারটির কাছ থেকে চিকিৎসাবাবদ টাকা দাবি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ১৪ সেপ্টেম্বর এমআরআই করে জানা যায় মেয়েটির ব্রেন পুরো ড্যামেজ হয়ে গেছে। এরপরই পরিবারের তরফে অন্য হাসপাতালে আধ্যাকে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু আধ্যার পরিবারের দাবি অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সও দেয়নি ফর্টিস। সেপ্টেম্বরের ১৪ তারিখ আধ্যাকে নিয়ে আসা হয় রকল্যান্ডে। সেখানে মধ্যরাতে মারা যায় সে। ফর্টিস অবশ্য মেয়েটির পরিবারের যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। ঘটনার তদন্ত করছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক।