BRAKING NEWS

নিরাপত্তাবাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান : এনডিএফবি-ছুটদের নিয়ে অসমে গঠিত নয়া জঙ্গি সংগঠন

গুয়াহাটি, ২০ জুলাই, (হি.স.) : ‘ন্যাশনাল ফ্রিডম ফাইটার অব বোডোল্যান্ড’ (এনএফএফবি) নামে অসমে গঠিত হয়েছে আরও এক সশস্ত্র জঙ্গি সংগঠন। এই তথ্য দিয়েছে নবগঠিত সংগঠনটির ধৃত দুই ক্যাডার জন বসুমতারি ও দীপক চৌধুরী। তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লাভ করেছে পুলিশ।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গুয়াহাটি রেলস্টেশন থেকে জন ও দীপককে গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্য জন বসুমতারির বাড়ি চিরাঙে এবং দীপক চৌধুরী থাকে স্থানীয় গীতানগরের এক ভাড়া বাড়িতে। স্থানীয়দের কাছে দীপক এতদিন এয়ারটেলের এক এজেন্ট বলেই পরিচিত ছিল। দিন দুয়েক আগে দীপকের ভাড়াবাড়িতে এসেছিল জন। কিন্তু গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। ৩৭৯/১৭ নম্বরে এক মামলা রুজু করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। ইতিমধ্যে দীপকের ভাড়া বাড়িতে তালাশি চালিয়ে ২৬ প্যাকেট (প্রতি প্যাকেটে ৫০টি প্যাড) এনএফএফবি-র প্যাড বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ডিমাপুরে (নাগাল্যান্ড) ছাপানো প্যাডগুলি বোডোল্যান্ড টেরিটোরিয়াল এরিয়াজ ডিসট্রিক্ট (বিটিএটি)-এর বিভিন্ন এলাকায় পাঠিয়ে তোলা আদায় করার পরিকল্পনা তাদের ছিল। তবে দীপক মূল জঙ্গি সদস্য না হলেও তাকে একজন সহায়ক হিসেবে নিয়োজিত করে তার মাধ্যমে এ ধরনের কাজ করানো হতো বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।

পুলিশ সূত্রটি আরও জানিয়েছে, সেদিন সন্ধ্যায় পুলিশ তাদের পিছু করছে টের পেয়ে নবগঠিত জঙ্গি সংগঠনের আরও দুই ক্যাডার পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। ইতিমধ্যে এই সংগঠনের আরও কয়েকজন বিটিএডি-র বাকসা, ডিরাং ও ওদালগুড়িতে গ্রেফতার হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্রটি।

ধৃতদের স্বীকারোক্তির উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, নবগঠিত এনএফএফবি তাদের এলাকায় সাম্প্রতিককালে জোরদার সদস্য ভরতি ও টাকা সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছে। ধৃতদের কাছে পুলিশ নাকি জানতে পেরেছে, সেনা-পুলিশের যৌথ অভিযানে কোণঠাসা এনডিএফবি (সংবিজিত) জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে কৌশলগত কারণে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে নতুন সংগঠনের জন্ম দেওয়া হয়েছে। এনডিএফবি ছাড়াও বহু সমাজবিরোধী এবং অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত যুবকও নবগঠিত সংগঠনে যুক্ত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এই সংগঠনের চেয়ারম্যান হিসেবে বি দিনথ্রিগ্রা এবং বি দানশ্রাংকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। সংগঠনটি বিডিএডি ভিত্তিক হলেও এর মূল কার্যকলাপ ডিমাপুর থেকে পরিচালিত হয় বলে জানিয়েছে সূত্রটি।

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, এনডিএফবি-র রঞ্জন দৈমারি এবং ধীরেন বোড়ো নেতৃত্বাধীন দুই গোষ্ঠী সরকারের সঙ্গে আলোচনার পথ অবলম্বন করায় সংগঠনের সংবিজিত গোষ্ঠী বেজায় সক্রিয় হয়ে ওঠে। কিন্তু নিরাপত্তাবাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে এই গোষ্ঠী একপ্রকার বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে আইকে সংবিজিত ওরফে সংবিজিত ইংতি (এনডিএফবি-সংবিজিত গোষ্ঠীর প্রধান)-কে সরিয়ে বি বিদাই ওরফে বিষ্ণু গয়ারির হাতে এনডিএফবি (সং)-র নেতৃত্ব তুলে দেওয়া হয়। জানা গেছে, ইতিমধ্যে এনডিএফবি থেকে বিতাড়িত হয়ে রাজ্যের পাহাড়ি জেলা কারবি আংলঙে পৃথক একটি জঙ্গি সংগঠন গড়েন আইকে সংবিজিত। এদিকে বি বিদাইয়ের হাতে এনডিএফবি (সং)-র দায়িত্ব তুলে দিলেও নিরাপত্তাবাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে এই সংগঠনটি তাদের পুরনো শক্তি হারিয়ে ফেলেছে বলে মনে করছে পুলিশ প্রশাসন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *