নয়াদিল্লি, ৯ জুলাই (হি.স.) : একদিকে নতুন করে তেতে উঠেছে পাহাড় । এই অবস্থায় পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে রাজধানী দিল্লিতে সরব গোর্খারা। রবিবার সকালে রাজঘাট থেকে যন্তর মন্তরের উদ্দেশে রওনা দেয় ‘গোর্খা সংযুক্তি সঙ্ঘর্ষ সমিতি’র সদস্যরা। আলাদা রাজ্যের দাবিতে সেখানে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।
সংস্থার সদস্য রাজীব শর্মা জানিয়েছেন, ‘গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে অনড় আমরা। সেখান থেকে সরে আসার প্রশ্নই ওঠে না। আলাপ–আলোচনার দুয়ো দিয়ে সরকার ডেকে পাঠাতেই পারে। কিন্তু তাতে লাভ হবে না। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কোনওরকম আলোচনায় বসব না আমরা।’ মিছিলে যোগদানকারী আর এক প্রতিবাদী জানিয়েছেন, ‘গোর্খারা ভারতীয় নাগরিক। দেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ আমরা। তার জন্যই আমাদের লড়াই। এতে রাজনীতিকদের ইন্ধন নেই।’
এদিকে শুক্রবার থেকে পাহাড়ের পরিস্থিতি ফের অগ্নিগর্ভ হয়েছে। দিনভর তাণ্ডব চলেছে সোনাদায়। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার রাত পর্যন্ত মোট ৪ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন ‘গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট’ সমর্থক তাশি ভুটিয়া। জিএনএলএফ মুখপাত্র নীরজ জিম্বা দাবি করেন, ‘শুক্রবার রাতে দাদার জন্য ওষুধ কিনতে বেরিয়েছিলেন তাশি। সেই সময় তাঁর পথ আটকায় পুলিশের ১২–১৩টি কনভয়। কান ঘেঁষে গুলি করে তাঁকে হত্যা করে।’ যদিও জিম্বার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। বলা হয়েছে, শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ সোনাদার কাছে দার্জিলিংগামী গাড়িতে কয়েকজন ভাঙচুর চালাচ্ছিল। পুলিশ বাধা দিতে গেলে সঙ্ঘর্ষ বাঁধে। তাতেই হয়ত প্রাণ হারিয়েছেন তাশি।
যার জেরে শনিবার সকাল থেকেই নতুন করে তেতে ওঠে পাহাড়। সোনাদা থেকে তাশির মৃতদেহ নিয়ে দার্জিলিঙে প্রবেশের চেষ্টা করে বিক্ষোভকারীরা। তাতে বাদ সাধে পুলিশ ও সেনা। তাতে পরিস্থিতি আরও বিগড়োয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় সোনাদা স্টেশন ও থানা। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইঁট, পাথর ছোঁড়া হয়। কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে, লাঠি চালিয়ে কোনওরকমে তাদের হটাতে সক্ষম হয় সেনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দার্জিলিং ও সোনাদায় দুই কলাম সেনা নামানো হয়। ১৪৪ ধারা জারি হয় সোনাদায়। সেনা পাঠানো হয় কার্শিয়াঙেও। তবে রবিবার সকালেও বিক্ষোভের ছবি ধরা পড়েছে। মিরিকের পোখরিবংয়ের পঞ্চায়েত অফিস, কার্শিয়াঙে এসডিও–র অফিসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।-