খোয়াইয়ে পথ অবরোধে জনদুর্ভোগ চরমে, সিট্যু নেতাদের নিয়ন্ত্রণে নেই গাড়ির মালিক ও চালকরা

নিজস্ব প্রতিনিধি, খোয়াই, ১০ জুন৷৷ বামপন্থী শ্রমিক সংগঠন সিআইটিইউ’র নেতৃত্বদের কমান্ড শোনছেন না যান চালকরা৷

খোয়াইয়ে অটো গাড়ি চালকদের পথ অবরোধ৷ শনিবার তোলা নিজস্ব ছবি৷

পরিবহণ ব্যবসার ক্ষেত্রে একের পর এক জটিল পরিস্থিতিতে নেতৃত্বের কাছ থেকে তেমন কোন ইতিবাচক সাড়া মিলছে না৷ পরিবহণ ব্যবসায় মার খাচ্ছেন গাড়ির মালিক ও চালকরা৷ তার ওপর রয়েছে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে আন্দোলন করার ক্ষেত্রে প্রশাসনিক প্রতিবন্ধকতা৷ একপ্রকার দিশেহারা অবস্থায় রয়েছেন পরিবহণ ব্যবসায় যুক্ত মোটার শ্রমিকরা৷ এই পরিস্থিতিতে সিআইটিইউ নেতৃত্বদের বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহী হয়ে উঠছেন গাড়ির মালিক ও চালকরা তা সামনে এল খোয়াইয়ে৷ একই সঙ্গে বামপন্থী এই শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে যে ফাটল ধরাতে পেরেছে বিরোধীতা তাও সনাক্ত হয়ে গিয়েছে৷
শনিবার খোয়াই শহরে বেলা ১১ট থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত শহরের ১৯টি সড়ক ও গলিপথ অবরোধ করল বিভিন্ন গাড়ীর চালকরা৷ কৈলাসহর, কমলপুর, তেলিয়ামুড়া সহ বিভিন্ন স্থানের বাড়ী যাওয়ার রাস্তা পর্যন্ত বন্ধ করে দেয় যান চালকরা৷ এ ধরনের আন্দোলন মেনে নিতে পারেনি খোয়াইয়ের জনগণ৷ এই ঘটনা প্রশাসন এবং শ্রমিক সংগঠনের দূর্বলতার বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছেন জনগণ৷ শ্রমিক সংগঠনের খোয়াই জেলা সম্পাদক নির্মল বিশ্বাসের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এ ধরনের রাস্তা অবরোধকে সিআইটিইউ সমর্থন করে না৷ তবে অধিক পরিমানে গাড়ির চালকদের জরিমানা করা হয় তাও মেনে নেওয়া যায় না৷ তাঁকে প্রশ্ণ করা হয় যে রাস্তা অবরোধ প্রত্যাহার করতে ব্যর্থ শ্রমিক সংগঠন৷ তবে কি ধরা যায় যে শ্রমিক সংগঠন ব্যর্থ৷ সরাসরি কোন উত্তর না দিলেও তিনি ঘুরিয়ে মেনে নেন যে বিরোধী শিবিরের একটি চক্রান্ত কাজ করছে৷
এদিকে, শনিবার বসেছিল খোয়াইয়ে লোক আদালত৷ কয়েকশ চালক আজ উপস্থিত ছিল এবং জরিমানা বাবদ দশ শতাংশ দিতে রাজী হয় তারা৷ যদিও লোক আদালত তা মানতে নারাজ৷ বরং লোক আদালত থেকে ষাট শতাংশ জরিমানা মিটিয়ে দেওয়ার কথা জানানো হয়৷ এরপরই চালকরা তা না মেনে আন্দোলনে শামিল হন৷ মহকুমা শাসক ও পুলিশ প্রশাসন বারবার অনুরোধ করে যে আগামী ১৯ জুন আবার আলোচনার মাধ্যমে কোন সুরাহা করা যায় কি না তা দেখা হবে৷ কিন্তু, আন্দোলনকারীরা তা মানতে নারাজ৷ এরপরই সিআইটিইউর খোয়াইয়ের নেতৃত্বরা ময়দানে নামেন৷ কিছু শ্রমিক অবরোধ আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ালেও সিংহভাগ শ্রমিক আন্দোলন অব্যাহত রাখেন৷ অথচ আচমকা এই রাস্তা অবরোধ আন্দোলনের ফলে দূরপাল্লার যাত্রীসহ প্রবীণ নাগরিক ও শিশুরা পর্যন্ত রেহাই পায়নি৷ শেষ পর্যন্ত শনিবার বিকাল চারটা নাগাদ অবরোধ আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়৷ কিন্তু, খোয়াইয়ে ক্রমাগত যে কোন ইস্যুতে রাস্তা অবরোধ একটা ট্রেডিশানে পরিণত হয়ে যাওয়াকে ভাল চোখে দেখছেন না খোয়াইবাসী৷ পাশাপাশি যেখানে খোয়াইয়ের সিআইটিইউ তথা সিট্যু নেতারা একাধিপত্য বজায় রেখেছিল সেখানে বিরোধী শক্তি সক্রিয় হয়ে সংগঠনে ফাটল ধরিয়ে দিয়েছে৷ এই বিষয়টি এখন শাসক দলকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে৷