BRAKING NEWS

ছয় দিনের পুলিশ রিমান্ডে নুর, ডাক্তারকে গ্রেপ্তারের দাবীতে আদালত চত্বরে গণধর্ণা

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৫ মে৷৷ আনোয়ারা চৌধুরী হত্যা কান্ডে ধৃত প্রধান অভিযুক্ত তার মামা তথা রাজ্যের শাসক

হত্যা মামলায় মূল অভিযুক্ত নুর মহম্মদকে আদালতে তোলা হয় কঠোর পুলিশ প্রহরায় ৷ সোমবার তোলা নিজস্ব ছবি৷

সিপিআইএম এর বিশিষ্ট নেতা তথা মৃতার মামা নুর মহম্মদের ছয় দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত৷ দুই দিনের জেল হেফাজতের মেয়াদ শেষে সোমবার আদালতে পেশ করা হলে তাকে ছয়দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে৷ আগামী ২০ তারিখ তাকে আবার আদালতে হাজির করা হবে৷ গ্রেফতারের পর টানা ২দিন আদালতের নির্দেশে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার পর আনোয়ারা চৌধুরীর মামা তথা এলাকার বিশিষ্ট সিপিআইএম নেতা ধৃত নুর মহম্মদকে আজ ফাস্ট ট্রেক কোর্টে হাজির করা হয়৷ আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর নুর মহম্মদের জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়ে তদন্তের স্বার্থে তাঁকে ছয় দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়৷
এখানে উল্লেখ্য যে আনোয়রা হত্যা মামলার তদন্ত ভার সিআইডি-কে দিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার৷ সিআইডি-র পক্ষ থেকে এই হত্যাকান্ডের তদন্ত ভার সংশ্লিষ্ট থানা থেকে নিয়ে নেবার বিষয়টিও আদালতকে জানানো হয়েছে৷ এখন থেকে এই মামলায় পশ্চিম মহিলা থানার পুলিশের আর কোন হাত থাকছে না৷ এদিকে সকাল থেকেই আদালতে ছিল উপচে পরা ভিড়৷ আদালতে পেশ করার সময় ধৃত নুর মহম্মদকে উদ্দেশ্য করে তির্যক মন্তব্য করতে থাকে ক্ষুব্ধ জনতা৷ যদিও পরিস্থিতি বেগতিক হয়ে উঠতে পারে ধারনা করে পুলিশ সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করে৷ ধৃত এই শাসক দলের ডাকসাইটে নেতাকে কালো ফুল-মাস্ক হেলমেট পরিয়ে সুরক্ষার ধেরা টোপে নিয়ে পুলিশের গাড়ি থেকে বের করে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়৷ আবার একই ভাবে নিয়ে আসা হয়৷ এদিকে আজও আনোয়ারা চৌধুরীর সহপাঠীরা আদালত চত্ত্বরেও হাজির হয়৷ তাদের বক্তব্য খুনিদের হাত অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত৷ তারা দাবী করেছে, আনোয়ারার চিকিৎসককেও গ্রেফতার করতে হবে৷ কারণ সেও প্রত্যক্ষ ভাবে ঘটনার সঙ্গে যুক্ত৷ আর হাসপাতালে সবকিছু সঠিক ভাবে চললে আনোয়ারা চৌধুরীর অকাল মৃত্যু ঠেকানো যেত৷ শুধুতাই নয়, মৃত্যুর পর ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে আনোয়ারার হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে বলা হত না৷ সত্যটা তখনই বেরিয়ে আসত৷ ছাত্র ছাত্রীরা আরও দাবি করেছে এই ঘটনার তদন্ত নুর মহম্মদকে হাজতে রেখেই ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে করতে হবে৷ উল্লেখ করা যেতে পারে এক মাস আগের এই হত্যা কান্ড নিয়ে সারা রাজ্যে ছাত্র বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরছিল৷ একই সঙ্গে পুলিশী ব্যর্থতা এবং শাসক দলের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠতে থাকে৷ এই অবস্থায় বহুমুখী চাপে পরে শুক্রবার পুলিশ আনোয়ারা চৌধুরীর মৃত্যু রহস্য উদঘাটনের জন্য তার নিকট আত্মীয়দের দুজনকে থানায় তুলে আনে৷ তাদের দিনভর জিজ্ঞাসা বাদের পর উভয়কেই পুলিশ সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখানে রাজ্য পুলিশের ডিআইজি অরিন্দম নাথের নেতৃত্বে পুলিশ আধিারিকদের একটি দল আনোয়ারা চৌধুরীর মামা তথা এলাকার বিশিষ্ট সিপিআইএম নেতা নুর মহম্মদ এবং তার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে৷ রাত বড়তেই তাদের গ্রেফতার করা হয়৷
পরিবারের তরফে শারীরিক অসুস্থতার কারনে আনোয়ারা মৃত্যুর কথা বলা হলেও তার সহপাঠীরা হত্যার অভিযোগ এনেছে এবং তার মামা ও অন্যান্য আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা কান্ডের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে এনেছে৷ রাজ্য পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, নুর মোহম্মদের জিজ্ঞাসাবাদের পর্বে পুলিশ অনেক কিছু জানতে পেরেছে৷ তবে আনোয়ারা চৌধুরীর মৃত্যুর পেছনে অস্বাভাবিক কিছু বিষয় রয়েছে যা ময়না তদন্তের রিপোর্টে স্পষ্ট হয়ে গেছে৷ কিন্তু ধর্ষণ হয়েছিল কিনা তা এখনো স্পষ্ট করে পুলিশ বলতে পারছে না৷
আনোয়ারা ছোট বয়সেই মাতৃ হারা হয়৷ মা এর জীবদ্দশাতেই তার পিতা একাধিক বিয়ে করেন৷ মায়ের মৃত্যুর পর অশায় আনোয়ারা প্রথমে তার দিদার কাছে লালিত পালিত হন৷ দিদার মৃত্যুর পর মামা মামির কাছেই থাকত আনোয়ারা তবে আনোয়ারার নামে বিস্তর সম্পত্তি ছিল৷ তার আঠার বৎসর বয়স হলেই আনোয়ারা এই সম্পত্তির মালিক হত৷ কিন্তু এর কিছুদিন আগেই আনোয়ারার রহস্য জনক মৃত্যু হয়৷ সহপাঠীদের অভিযোগ মামা সহ বেশ কয়েকজন আত্মীয়পরিজন এই হত্যা কান্ডের সঙ্গে যুক্ত৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *