BRAKING NEWS

যোগত্য না থাকলে শিক্ষকতা করা যায় না ঃ শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২ মে৷৷ মুখ পুড়ে সম্বিত ফিরল রাজ্য সরকারের৷ গুণগত শিক্ষাই প্রয়োজন সেটা এখন হারে হারে টের পাচ্ছে বামফ্রন্ট সরকার৷ শিক্ষামন্ত্রী তপন চক্রবর্তী স্বীকার করলেন, যে কোন মানুষ শিক্ষকতা করতে পারেন না৷ মান বজায় না থাকলে শিক্ষকতা করা যায় না৷ কারণ, শিক্ষা মানবসম্পদ তৈরি করে৷ শিক্ষামন্ত্রীর এই অকপট স্বীকারোক্তিতে স্পষ্ট যে রাজ্যে সাক্ষরতার হার বাড়লেও শিক্ষিত লোকের সংখ্যা সেই তুলনায় খুবই নগণ্য৷
অবশ্য এই স্বীকারোক্তির পরও শিক্ষামন্ত্রী ১০,৩২৩ জন শিক্ষকের চাকুরি বাতিল হওয়ার ঘটনায় ত্রিপুরা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিমকোর্টের রায়কে আবারও সিপিএম পার্টি লাইনে অমানবিক বলতে ভুলেননি৷ তিনি ক্ষোভের সুরে বলেন, চাকুরি বাতিলের রায়ে ১০,৩২৩ জন শিক্ষকের পরিবারদের ভাতের থালা কেড়ে নেওয়া হয়েছে৷ ঐ রায়ে শত শত সুকল এখন শিক্ষকের সমস্যায় ভুগছে৷ মঙ্গলবার নবনির্মিত শিক্ষাভবনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী তপন চক্রবর্তী এই কথাগুলি বলেছেন৷ তাঁর বক্তব্যকে ঘিরে নীতির প্রশ্ণে বামফ্রন্ট সরকারের ভূমিকায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে৷
একদিকে শিক্ষামন্ত্রী বলছেন শিক্ষকতা করতে গেলে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা খুবই দরকার৷ যে কেউ এসে শিক্ষকতা করতে পারেন না৷ তিনি এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে জোরগলায় দাবি করেন, মান বজায় না থাকলে শিক্ষকতা করা যায় না৷ পাশাপাশি তিনি বলেন, শিক্ষিত হওয়ার ক্ষেত্রে গুণগত শিক্ষার যথেষ্ট প্রয়োজনীয়তা রয়েছে৷ এখন প্রত্যেকেই সেটা অনুভব করতে পারছে৷ সেই অনুভূতি থেকে তিনি অভিভাবকদের অনুরোধ করেন, শিক্ষার সদব্যবহার করার জন্য৷ পাশাপাশি তিনি শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও তাদের দায়িত্ব ঠিকঠাক ভাবে প্রতিপালন করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন৷ তিনি আরো বলেন, রাজ্যের শিক্ষক শিক্ষণকেন্দ্র কম রয়েছে৷ বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষক পদে উপযুক্তদের নিয়োগ করার জন্য ২০১৫ সালে টিআরবিটি গঠন করা হয়েছে৷ এদিন তিনি বলেন, শিক্ষার মানবসম্পদ তৈরি করে৷ কিন্তু রাজ্যের অবস্থা থেকে বোঝা যাচ্ছে শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা কত৷ তাতে তিনি এও ইঙ্গিত দিয়েছেন, সাক্ষরতার হার ৯৮ শতাংশ হলেও প্রকৃত শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে তাঁর মনে৷ শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্য প্রমাণ করছে রাজ্য সরকার অনুভব করতে পারছে শিক্ষক পদে যাদের নিয়োগ করা হয়েছে তাদের সকলে ঐ পদে চাকুরি পাওয়ার যোগ্য নন৷
অন্যদিকে, তিনি তুলে ধরেন আদালতের রায়ে ১০,৩২৩ জন শিক্ষকের চাকুরি বাতিল রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থাকে পঙ্গু করে দিয়েছে৷ এদিন তিনি বলেন, ১৯৭৮ সালে চাকুরি নীতি মেনেই শিক্ষকদের চাকুরি দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু ত্রিপুরা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিমকোর্ট ঐ নীতিতে নিয়োগ করা ১০,৩২৩ জন শিক্ষকের চাকুরি বাতিল করে দিয়েছে৷ তিনি আবারও এদিন আদালতের রায়কে অমানবিক বলে উষ্মা প্রকাশ করেছেন৷ পাশাপাশি চাকুরিচ্যুত শিক্ষকদের পাশে রাজ্য সরকার রয়েছে বলেও স্বপ্ণ ফেরি করেছেন৷
শিক্ষামন্ত্রী একদিকে যোগত্য থাকলে তবেই শিক্ষকতা করা সম্ভব তা মানছেন৷ অন্যদিকে চাকুরি বাতিলের ঘটনা আদালতের রায়ে উষ্মা প্রকাশ করছেন৷ ফলে, নীতির প্রশ্ণে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য বিতর্কের সৃষ্টি করেছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *