BRAKING NEWS

দুই বছর পরও রাজ্যগুলির সাথে নীতি আয়োগের সমন্বয়ে সন্দিহান মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৩ এপ্রিল৷৷ যোজনা কমিশন ভেঙ্গে নীতি আয়োগ গঠনের দুই বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও

রবিবার নয়াদিল্লীতে নীতি আয়োগের গভর্নিং কাউন্সিলের তৃতীয় বৈঠকে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার সহ অন্যান্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা৷ ছবি – পিআইবি৷

যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে রাজ্যের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন নিয়ে সন্দিহান মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ এই প্রেক্ষিতে তাঁর পরামর্শ এমন একটি পন্থা অবলম্বন করতে হবে যাতে নীতি আয়োগ এবং রাজ্যগুলির মধ্যে পদ্ধতিগত প্রক্রিয়ায় আলোচনা এবং মতবিনিময় করা যায়৷ রবিবার নয়াদিল্লীতে নীতি আয়োগের গভর্নিং কাউন্সিলের তৃতীয় বৈঠকে মতামত ব্যক্ত করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার একথা বলেন৷ এই বৈঠকে পৌরোহিত্য করেন নীতি আয়োগের গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷
এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে চলতে হবে৷ এজন্য নীতি আয়োগকে একটি পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হবে যার মাধ্যমে রাজ্য ও কেন্দ্রের সমন্বয়মূলক বিষয়গুলিকে আরও শক্তিশালী করা যায়৷ মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার এদিনের বৈঠকে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে জানান যে এমজিএনরেগা প্রকল্পে প্রতিবছর প্রতিটি পরিবারকে একশ দিনের কাজের নিশ্চয়তা দেওয়ার কথা থাকলেও দেশে তা গড়ে ৫০-৫৫ দিন হয়েছে শুরুর দিকের বছরগুলিতে কিন্তু, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা হয়েছে গড়ে ৪৬ দিন৷ তিনি এপ্রসঙ্গে বলেন, বছরে প্রতি পরিবারকে দুইশ দিন কাজের ব্যবস্থা করতে হবে৷ সেই সাথে মজুরীও বাড়ানো প্রয়োজন বলে তিনি মত প্রকাশ করেছে৷ রেগার মজুরী প্রদানে যে পদ্ধতি বর্তমানে চালু রয়েছে তাকে আরও সহজ ও সরল করার উপরও মানিক সরকার গুরুত্বারোপ করেছেন৷ যে পদ্ধতিতে মজুরী প্রদান করা হচ্ছে তা অনেকটাই বিলম্বিত প্রক্রিয়া৷ তিনি দাবী রাখেন রেগা প্রকল্পটি শুধুমাত্র গ্রামেই নয় শহর এলাকাতেও যাতে চালু করা হয়৷ কারণ, শহর এলাকার বিভিন্ন বস্তিতে প্রচুর সংখ্যায় গরীব অংশের জনগণ বসবাস করছেন৷
কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রয়োজন বিভিন্ন দপ্তরে যেসব শূন্যপদ রয়েছে সেগুলি পূরণ করা এবং এই নিয়োগ প্রক্রিয়া জারি রাখা৷ কার ফাকি দেওয়া প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি যাতে কর আদায় করা হয় সেজন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে৷ পরিকাঠামো ক্ষেত্র নিয়ে মানিকবাবু বলেন, পরিকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে গ্রামীণ এলাকার দিকে নজর দিতে হবে৷ তাতে করে গ্রামীণ এলাকার জনগণের ক্রয় ক্ষমতাও দিনদিন বৃদ্ধি পাবে৷
মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে তার মতামত দিতে গিয়ে বলেন, জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা আইন হল একটি আইনী অধিকার৷ তাই শহর ও গ্রামীণ এলাকার সিংহভাগ পরিবারকে এই আইনের আওতায় আনার জন্য তিনি পরামর্শ দিয়েছেন৷ পাশাপাশি গণবন্টন ব্যবস্থাকে আরও সম্প্রসারিত করার উপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি৷ চিনি ও কেরোসিন প্রসঙ্গ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রেশনে চিনি ও কেরোসিন সরবরাহ বন্ধ করার যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা মূলত গরীব স্বার্থ বিরোধী৷
দক্ষতা বিকাশের ক্ষেত্রেও সাফল্য আসেনি বলে অসন্তোষ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দক্ষতার বিকাশের ক্ষেত্রে আরও বেশী জোর দিতে হবে৷ এক্ষেত্রে দক্ষ যুবাদের নিজ রাজ্যের বাইরে গিয়ে কাজ করতে হচ্ছে৷ তাতে তাদের নানাহ সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে৷ বিশেষ করে ভাষা, খাদ্যাভ্যাস এবং সংসৃকতির ক্ষেত্রে৷ তাতে কের দেখা যাচ্ছে বহু দক্ষ যুবরা নিজ রাজ্যের বাইরে গিয়ে কাজ করতে চাইছেন না৷ এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার জন্য মুখ্যমন্ত্রী নীতি আয়োগের এই বৈঠকে পরামর্শ দিয়েছেন৷
এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী স্বচ্ছ ভারত অভিযান প্রকল্পে গ্রামীণ এলাকা এবং শহর এলাকায় স্বাস্থ্যসম্মত শৌচালয় নির্মাণের ক্ষেত্রে টাকার পরিমাণ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন৷ এমর্মে নিতি কারণ দেখিয়েছেন বিভিন্ন রাজ্যে নির্মাণ খরচ বিভিন্ন৷ মুখ্যমন্ত্রী দারীদ্র দূরীকরণ এবং কৃষি ও কৃষক কল্যাণেও বর্তমানে যেসব প্রকল্প রয়েছে সেগুলির উপর জোর দেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *