BRAKING NEWS

পিজিপি দপ্তরের নামে গড়া হলো কলোনী, বরাদ্দ অর্থ কোথায় যাচ্ছে জানেন না গিরিবাসীরা

নিজস্ব প্রতিনিধি, তেলিয়ামুড়া, ২২ এপ্রিল৷৷ একটা মানুষ ভারতীয় সংবিধান অনুসারে সরকারী যাবতীয় সুযোগ সুবিধা কিভাবে পাবে, হয়তো আন্দোলন করে নয়তো নেতা মন্ত্রী সহ আমলা-কামলাদের হাত ধরে আর যদি তাদের মধ্যে কেউই সাহায্য না করেন তবে কি করে মানুষ বাঁচবেন৷ হোক দলগত আন্দোলন, নয়তো একার আন্দোলন৷ তবে সরকারী ভাবে যাবতীয় সুযোগ সুবিধা ভোগ করার জন্যে প্রত্যন্ত অঞ্চলের গিরিবাসীরা ন্যায্য পাওনার দাবীতে মুখ খুলতে শুরু করে দিয়েছেন৷ তেলিয়ামুড়া মহকুমা মুঙ্গিয়াকামী ব্লকের আঠারমুড়া এডিসি৷ ভিলেজের পিজিপি কলোনীতে বসবাসরত এক রিয়াং পরিবারের টংঘর তুফানে ভেঙ্গে গেলেও আজ পর্যন্ত সরকারী কোন সাহায্য পায়নি৷
তেলিয়ামুড়া মহকুমার মুঙ্গিয়াকামী ব্লক থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার পাহাড়ী পথ পার হয়ে পিজিপি কলোনী৷ ২০০৩ সালের সরকারী সহযোগিতায় পিজিপি কলোনীতে রিয়াং সম্প্রদায়ের লোকেরা বসবাস করতে শুরু করেন৷ সেই সময় রিয়াং সম্প্রদায়ের লোকেদের একটাই দাবী ছিলো, জীবন ধারনের জন্যে একটি মজবুত ঘরের৷ যদিও সেই সময় থেকে পূর্ব পুরুষদের শেখানো পথ অনুসরণ করে ছন বাঁশের টংঘরের মধ্যে জীবন জীবিকা প্রতিপালন করতে শুরু করেন৷ দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও গিরিবাসীদের আর্থ সামাজিক মানোন্নয়ন হয়নি৷ সেই একাংশ জনজাতি গিরিবাসীরা যে তিমিরে ছিলেন, সেই তিমিরেই রয়ে গেছে৷ তার পরেও বীরমন্ত রিয়াং এর স্ত্রী শুকন্তলা রিয়াং এর পরিবার আজও নানা সমস্যার মধ্যে দিয়ে দিন গুজরান করে যাচ্ছন৷ শুকন্তলা রিয়াং এর পরিবারের সংসারের কেবল মাত্র ভরসা৷ বনের লতা পাতা সহ বাঁশের কুড়ুল ও বনের কুড়ানো লাকড়ী বিক্রি করে সংসারের যাবতীয় ভরণ পোষণ৷ আর তা যদি না হয় খালি পেটে কয়েকদিন পার করতে হয়৷ বর্তমান প্রশাসনের কাছে বার কয়েক দাবীও করেছিলেন বীরমন্ত রিয়াং৷ ছন বাঁশের টংঘর থেকে টিনের দীর্ঘ মেয়াদী সরকারী ঘরের৷ কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয় হলো বধির প্রশাসনের বধির পিজিপি দপ্তর তাদের দাবীকে উপেক্ষা করে দিনের পর ছলনা করে যাচ্ছেন৷ কিছুদিন পূর্বে কায়িক শ্রমের বিনিময়ে নিজের কয়েকটি টাকা সঞ্চয় করে টংঘরে টিনের ছাউনি দিয়েছিলেন বীরমন্ত রিয়াং৷ কিন্তু দুঃখের কপালে প্রকৃতির কাছে তাও সহ্য না হওয়াতে ওনার ঘরের টিনের ছাউনি সহ বাঁশের বেড়া এক দৈত্যকার তুফানে ভেঙ্গে তছনছ হয়ে যায়৷ কয়েকদিন ওনার পরিবার খোলা াকাশের নিচে দিন গুজরানের পর নিকট আত্মীয়ের ঘরে আশ্রয় নেন৷ এদিকে নিরক্ষর অবুঝ সরল গিরিবাসী বীরমন্ত রিয়াং প্রশাসনের কাছে তুফানে ভেঙ্গে যাওয়ার ঘর সংস্কারের ব্যাপারে বার কয়েক আবেদন জানিয়ে থাকলেও, কাজের কাজ আশ্বডিম্ব৷ অশ্রুসজল চোখে বীরমন্ত রিয়াং এর স্ত্রী শকুন্তলা রিয়াং বর্তমান সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন৷ তিনি বলেন, ভোটের সময় সরকারী কর্মচারী থেকে নেতা মন্ত্রীদের রোজই এলাকায় আনাগোনা থাকেন৷ কিন্তু ভোট ফুড়িয়ে গেলেই তাদের খবরা খবর নেওয়ার লোক থাকেন না৷ দীর্ঘ কয়েক দশক পূর্বে তাদের অবস্থা যেমন ছিলো তেমনিই ভাবে কাঁটাতে হয়৷
কেন্দ্রীয় সরকার গ্রাম পাহাড় সহ শহরের উন্নয়নের জন্যে প্রতি অর্থবর্ষে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিচ্ছেন৷ তার পরেও কি করে ওই অঞ্চল গুলিতে সরকারী সাহায্য পৌঁছায় না৷ বর্তমান সরকারের আমলা কামলারা তাকে কিভাবে বঞ্চনা করেছেন তার চিত্র উঠে এসেছে এই পরিবারের মধ্য দিয়ে৷ এদিকে রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকারের জমানায় স্বর্ণযুগ চললেও পিজিপি কলোনীর মতো অনুন্নত জায়গাতে স্বর্ণ যুগের ছিটে ফোটাও পৌঁছায়নি৷ এদিকে জানা গেছে, রিয়াং সম্প্রদায়ের লোকেদের অর্থ সামাজিক মান্নোনয়নের জন্য একটি দপ্তরও রয়েছে৷ পিজিপি দপ্তর আর তার নাম অনুসরণ করে পিজিপি কলোনী নামে রূপান্তর করা হয়৷ পিজিপি কলোনী হলেও তারা সেই দপ্তর থেকে কোন ধরনের সাহায্যটুকু পায়নি দশক ধরে৷ ফলে বীরমন্ত রিয়াং এর মতো হত দরিদ্র পরিবারের লোকেরা আজও দিন যাপন করতে হচ্ছে অতিকষ্টে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *